সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রাজনৈতিক কারণেই কি জেলবন্দি অনুব্রত মণ্ডল (Anubrata Mandal)? কলকাতা হাই কোর্টের প্রশ্নের মুখে সিবিআইয়ের আইনজীবী। পালটা সিবিআইয়ের আইনজীবী তৃণমূলের জেলা সভাপতিকে ‘রাজনৈতিক দৈত্য’ বলে উল্লেখ করেন। প্রভাবশালী তত্ত্বেই অনুব্রতর জামিনের বিরোধিতা করেন তিনি। সবমিলিয়ে গরু পাচার কাণ্ডে জামিন মামলায় মঙ্গলবার বাদি ও বিবাদি পক্ষের সওয়াল-জবাবে উত্তপ্ত রইল কলকাতা হাই কোর্ট। তবে এদিন রায়দান করেননি বিচারপতিরা। সম্ভবত বৃহস্পতিবার দুপুরের মধ্যে মামলার রায়দান করবেন তাঁরা।
গরু পাচার মামলায় প্রায় দেড়শো দিন ধরে জেলবন্দি অনুব্রত মণ্ডল। জামিনের আবেদন জানিয়ে কলকাতা হাই কোর্টে গিয়েছিলেন তিনি। এদিন সেই আবেদনেরই বিচারপতি জয়মাল্য় বাগচী ও বিচারপতি অজয়কুমার গুপ্তের বেঞ্চে শুনানি ছিল। অনুব্রতর হয়ে আদালতে সওয়াল করেন বর্ষীয়ান আইনজীবী কপিল সিব্বল। তিনি জানান, এই মামলায় ৯৫ জনকে সাক্ষী হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছিল। তাদের মধ্যে ৩৩ জনের বয়ান রেকর্ড করা হয়েছে। সিবিআইয়ের উদ্দেশে সিব্বলের প্রশ্ন, “বাকিদের সাক্ষ্য কবে নেওয়া হবে?” মক্কেলের জামিনের পক্ষে সওয়াল করে উল্লেখ করেন বিএসএফ কমান্ডার সতীশ কুমার-সহ অন্য অভিযুক্তদের কথা। তাঁরা জামিন পেয়ে গেলেও অনুব্রত কেন জামিন পাচ্ছেন না, প্রশ্ন তোলেন কপিল সিব্বল।
বিচারপতিদেরও প্রশ্নের মুখে পড়েন সিবিআইয়ের আইনজীবীরা। প্রশ্ন ছুঁড়ে দেন, রাজনৈতিক কারণেই কি জেলবন্দি অনুব্রত মণ্ডল? কেন জামিন দেওয়া হচ্ছে না তাঁকে? ডিভিশন বেঞ্চের আরও প্রশ্ন, সতীশ কুমারের জামিনের কেন বিরোধিতা করেনি সিবিআই? এখন অনুব্রতকে হেফাজতে রাখতে কেন মরিয়া কেন্দ্রীয় সংস্থা?
জবাবে সিবিআইয়ের আইনজীবী ডিপি সিং ফের একবার প্রভাবশালী তত্ত্ব তুলে ধরেন। তাঁর দাবি, অনুব্রত অত্যন্ত প্রভাবশালী। গরু পাচার মামলায় প্রধান অভিযুক্ত এনামুল হকের সঙ্গে ৩৯ বার ফোনে কথা হয়েছে অনুব্রতর দেহরক্ষী সায়গল হোসেনের। সিবিআইয়ের আইনজীবী আরও জানিয়েছেন, বীরভূমের সীমান্ত দিয়ে গরু পাচার হত। সেই পুরো প্রক্রিয়া সহজ করে দিতেন খোদ অনুব্রত। একথা বলতে গিয়েই বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতিকে রাজনৈতিক দৈত্য বলে উল্লেখ করেন তিনি। প্রভাবশালী তত্ত্ব খাড়া করতে গিয়ে দুবরাজপুর পুলিশের হাতে অনুব্রতর গ্রেপ্তারিকে হাতিয়ার করেন সিবিআইয়ের আইনজীবী। তাঁর দাবি, অভিযোগের এক বছর পর অনুব্রতর বিরুদ্ধে একটি মামলায় এফআইআর করা হয়েছে। সেই মামলায় ৭ দিন জেলে ছিলেন তিনি।
বিচারপতিদের প্রশ্নের মুখে দুবরাজপুর পুলিশের ভূমিকাও। তাঁদের প্রশ্ন, এক বছর পর অনুব্রতকে কেন হেফাজতে নেওয়া হল? কোনও এক নির্দিষ্ট ব্যক্তির জন্য কি রাজ্যের পুলিশ কাজ করছে? বিচারপতি বাগচীর পর্যবেক্ষণ, ওই অভিযোগের ভিত্তিতে তো হেফাজতে নেওয়া উচিত নয়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.