সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শিক্ষক নিয়োগ মামলায় বড়সড় ধাক্কা। প্রশিক্ষণহীন ৩৬ হাজার শিক্ষকের চাকরি বাতিল ঘোষণা করল কলকাতা হাই কোর্ট (Calcutta HC)। ২০১৪ সালের টেট থেকে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা এবং ২০১৬ সালের প্যানেলভুক্তদের মধ্যে যাঁদের প্রশিক্ষণ নেই, তাঁদেরই চাকরি বাতিল করলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদকে তাঁর কড়া নির্দেশ, আগামী ৩ মাসের মধ্যে নতুন প্যানেল থেকে নিয়োগ করতে হবে। শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় এখনও পর্যন্ত এটাই সবচেয়ে বড় সংখ্যক চাকরি বাতিলের নজির।
শুক্রবার বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বেঞ্চে এই মামলার শুনানি ছিল। তাতে একাধিক যুক্তির ভিত্তিতে ৩৬ হাজার প্রশিক্ষণহীন শিক্ষকের চাকরি বাতিলের নির্দেশ দেন। এই মামলার তদন্তে আগেই ২০১৪সালে টেট পাশ করা শিক্ষকদের আলাদা করে সাক্ষ্যগ্রহণ করেছিল আদালত। তাতে উঠে আসে একাধিক বিষয়। দেখা যায়, কারও কারও অ্যাপটিচিউড টেস্ট নেওয়া হয়নি। কারও ক্ষেত্রে সংরক্ষণ নীতি না মেনে নিয়োগ হয়েছে। প্রশিক্ষণ থাকা সত্ত্বেও কাউকে বাতিল করে প্রশিক্ষণহীন পরীক্ষার্থীকে চাকরি দেওয়া হয়েছে। সে বছর সাড়ে ৪২ হাজার পদে প্রাথমিক শিক্ষক (Primary Teacher) নিয়োগ হয়েছিল। তার মধ্য়ে ৩৬ হাজার প্রশিক্ষণহীনের চাকরি বাতিল করা হল। তবে যাঁরা প্রশিক্ষণ সম্পূর্ণ করেছেন, তাঁদের চাকরি বহাল থাকবে।
বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশ, যাঁদের চাকরি বাতিল হল তাঁদের সামনে নিজেদের যোগ্যতা প্রমাণের সুযোগ রয়েছে এখনও। বিচারপতি জানিয়েছেন, বাতিল হওয়া শিক্ষকরা আগামী ৪ মাস কাজ করবেন, পার্শ্বশিক্ষকদের হারে বেতন পাবেন। এঁদের কারও সার্ভিস ব্রেক হবে না।
তারই মধ্যে আগামী ৩ মাসের মধ্যে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষকদের যোগ্যতার ভিত্তিতে নতুন করে নিয়োগ করতে হবে। সেক্ষেত্রে বাতিল হওয়া শিক্ষকরাও নতুন করে আবেদন করতে পারবেন প্রাথমিক শিক্ষক পদে এবং তাঁদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। এই নতুন নিয়োগের ক্ষেত্রে রাজ্য সরকার খরচ দিতে অসমর্থ হলে, প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ প্রয়োজনে বোর্ডের প্রাক্তন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যর কাছ থেকে টাকা নিতে পারে। কারণ আদালতের পর্যবেক্ষণ, ২০১৪ সালের টেট (TET) থেকে শিক্ষক নিয়োগের নেপথ্যে দুর্নীতিতে রয়েছেন তৎকালীন বোর্ড সভাপতি মানিক ভট্টাচার্য। টাকা নিয়ে নিয়োগের মূল মাস্টারমাইন্ড ছিলেন তিনিই।
বিষয়টি নিয়ে তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh) বলেন, ”বিচারাধীন বিষয়। সবে একটি নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এনিয়ে রাজনৈতিক কোনও মন্তব্য করব না।” সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীর (Sujan Chakraborty) প্রতিক্রিয়া, ”আদালতের রায়কে স্বাগত জানাচ্ছি। তবে যে ৩৬ হাজার জনের চাকরি বাতিল হল, তার জন্য দায়ী রাজ্য সরকার। কারণ, এই পথে নিয়োগ না হলে তাঁরা অন্যভাবে অন্য কোনও চাকরির চেষ্টা করতেন।”
দেখুন ভিডিও:
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.