ফাইল ছবি
গোবিন্দ রায়: সরকারি আইনকে থোড়াই কেয়ার! চার বছর বাদেও ক্ষতিপূরণ পাননি বাঘের হানায় মৃতের পরিবার। অবশেষে মুশকিল আসান কলকাতা হাই কোর্ট। ১৫ দিনের মধ্যে দুই পরিবারকে ক্ষতিপূরণের ৫ লক্ষ করে টাকা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য। আদালত জানিয়েছে, যে কোনও অঞ্চলে বাঘের হানায় মৃত্যু হলে দিতে হবে ক্ষতিপূরণ। সেক্ষেত্রে বাঘের হামলায় মৃত ব্যক্তি গভীর জঙ্গলে ঢুকেছিলেন নাকি বাঘ বিচরণ ক্ষেত্রের আশেপাশে ছিলেন, সেরকম কোনও বিষয় বাদ বিচার করা হবে না। অর্থাৎ, সুন্দরবনের যে কোনও জায়গায় বাঘের হানায় মৃত্যু হলে ক্ষতিপূরণ পাবেন পরিবার।
মামলাকারীর তরফে আইনজীবী সহিলী দে জানান, ২০১৯ সালের ১০ অক্টোবর সুন্দরবন কালিচর এলাকায় পঞ্চমুখানি-২ ফরেস্ট কম্পার্টমেন্টে মাছ ধরতে গিয়ে বাঘের হানায় মৃত্যু হয় দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিংয়ের গোসাবা ব্লকের রাধাকান্ত আউলিয়া ও শম্ভু মণ্ডলের। শম্ভু প্রথম বাঘের আক্রমণের শিকার হন। রাধাকান্ত বন্ধুকে বাঁচাতে গেলে, তিনিও প্রাণ হারান। শম্ভু মণ্ডলের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয় এবং তার ময়নাতদন্ত করা হয়েছিল। কিন্তু রাধাকান্ত আউলিয়ার মৃতদেহ উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। ঘটনার পরই বনদপ্তর, পুলিশ এবং পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে বিষয়টি জানানো হয়। উভয় ব্যক্তির ডেথ সার্টিফিকেট এবং পুলিশি তদন্তের রিপোর্টে মৃত্যুর কারণ হিসেবে বাঘের আক্রমণ উল্লেখ করা ছিল। কিন্তু অভিযোগ এ পর্যন্ত ক্ষতিপূরণ পাননি তাঁদের পরিবার। যা নিয়ে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন মৃতদের স্ত্রী সরস্বতী আউলিয়া এবং সরোজিনী মণ্ডল।
সহিলী দে-র দাবি, ২০২০ সালের ১ জানুয়ারি থেকে দুই ব্যাঘ্রবিধবা বনদপ্তরের আধিকারিকদের কাছে একাধিকবার ক্ষতিপূরণের জন্য আবেদন করেছিলেন। তাদের ক্ষতিপূরণ পাওয়ার আইনের অধিকার থাকলেও বনদপ্তর ক্ষতিপরণ দেয়নি। ফেব্রুয়ারি ২০২১ সালে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে একটি নোটিফিকেশন জারি হয়। সেখানে বলা হয়েছে, যে বন্যপ্রাণীর আক্রমণে নিহতদের আইনি উত্তরাধিকারীরা উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে মৃত্যুর কারণ সম্পর্কিত প্রমাণ সাপেক্ষে ক্ষতিপূরণ হিসেবে পাঁচ লক্ষ টাকা পাবেন। সম্প্রতি একটি মামলার পরিপ্রেক্ষিতে কলকাতা হাই কোর্টও জানিয়েছে, বাঘের হামলায় মৃত্যুর জন্য কোর ও বাফার অঞ্চল বিচার করা হবে না। যে কোনও জায়গায় রুটি রুজির স্বার্থে কোনও ব্যক্তি কাজের সূত্রে গেলে সেখানে বাঘের হামলায় মৃত্যু হলে ক্ষতিপূরণ পাবে তাঁর পরিবার।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.