শুভঙ্কর বসু: পদ ছাড়তে তৈরি পুরপিতা। অঙ্গীকার, ভবিষ্যতে রাজনীতির সঙ্গেও কোনও রকম যোগাযোগ রাখবেন না। যদি কিনা বাবার চাকরিটা তাঁর কপালে জোটে। উত্তর ২৪ পরগনার বাদুড়িয়া পুরসভার মৃত এক কর্মীর জায়গায় চাকরি পেতে কলকাতা হাইকোর্টে এই মর্মে মুচলেকা দিলের তাঁর পুত্র, যিনি কিনা বাদুড়িয়া পুরসভারই নির্বাচিত কাউন্সিলর। তিন নম্বর ওয়ার্ডের সেই জনপ্রতিনিধি মিজানুর মণ্ডলের বক্তব্য, কাউন্সিলর থাকলে তাঁর চাকরি জুটবে না। অথচ চাকরিটা একান্ত দরকার। কাজেই পদ ছাড়তেই হবে।
গত পুর নির্বাচনে বাদুড়িয়ার তিন নম্বর ওয়ার্ড থেকে কংগ্রেসের টিকিটে জিতেছিলেন মিজানুর। তাঁর বাবা আকবর আলি মণ্ডল ওই পুরসভারই জন্ম-মৃত্যু তারিখ নথিভুক্তি বিভাগের ক্লার্ক ছিলেন। ২০১৮-র মার্চে চাকুরিরত অবস্থায় তিনি মারা যান। এরপর পুর আইনের সংশ্লিষ্ট সংস্থান অনুযায়ী ‘কমপ্যাশনেট গ্রাউন্ডে’ চাকরির আবেদন করেন মিজানুর। তাঁর অভিযোগ, তৃণমূল পরিচালিত বাদুড়িয়া পুরবোর্ড তাঁর আবেদনকে আমল দেয়নি। মুখে মুখেই সাফ জানিয়ে দিয়েছে, কাউন্সিলর থাকলে তাঁর ভাগ্যে বাবার চাকরি জুটবে না।
সুরাহার জন্য শেষমেশ কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন মিজানুর। বিচারপতি অমৃতা সিনহার এজলাসে তাঁর কৌঁসুলি পাপিয়া চট্টোপাধ্যায় অভিযোগ করেন, বছরখানেক আগে তাঁর মক্কেল কমপ্যাশনেট গ্রাউন্ডে চাকরির আবেদন জানিয়েছেন। কিন্তু পুরসভার তরফে এখনও লিখিত উত্তর মেলেনি। এজলাসে উপস্থিত বাদুড়িয়া পুরসভার কৌঁসুলি তখন পালটা প্রশ্ন তোলেন, “উনি ওই পুরসভার কাউন্সিলর। এক জন কাউন্সিলর কীভাবে কমপ্যাশনেট অ্যাপয়েনমেন্ট পেতে পারেন?”
জবাবে মিজানুরের কৌঁসুলি ভরা এজলাসে জানিয়ে দেন, চাকরি পেতে তাঁর মক্কেল কাউন্সিলর পদে ইস্তফা দিতেও প্রস্তুত। এ ব্যাপারে তিনি আদালতকে মুচলেকা দিতেও রাজি আছেন। এই পরিস্থিতিতে পুরসভার কোনও যুক্তি আর খাটেনি। উভয়পক্ষের বক্তব্য শুনে বিচারপতি সিনহা রায় দিয়েছেন, বাদুড়িয়া পুরবোর্ড মিজানুরের আবেদন পুনরায় বিবেচনা করুক। আইনমাফিক যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার দু’সপ্তাহের মধে্য নিয়ে নিতে হবে। এবং যে সিদ্ধান্তই হোক না কেন, জানাতে হবে হাই কোর্টকে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.