শুভঙ্কর বসু: বিধানসভার পাবলিক অ্যাকউন্টস কমিটির (পিএসি) চেয়ারম্যান পদে কি মুকুল রায়ই (Mukul Roy) থাকবেন? আগামী ৭ অক্টোবরের মধ্যেই এই প্রসঙ্গে যাবতীয় সিদ্ধান্ত নিতে হবে বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়কে। মঙ্গলবার এই সংক্রান্ত মামলার রায়ে এমনটাই জানাল কলকাতা হাই কোর্ট।
বিধানসভায় PAC চেয়ারম্যান পদে মুকুল রায় মনোনয়ন জমা দিতেই কলকাতা হাই কোর্টে মামলা করে বিজেপি। অভিযোগে জানানো হয়, কৃষ্ণনগরের দলত্যাগী বিধায়ক মুকুল রায়ের পিএসি-র চেয়ারম্যান নির্বাচন নিয়ম মেনে হয়নি। অনৈতিকভাবে, প্রথা ভেঙে মুকুলকে চেয়ারম্যান করা হয়েছে। বিধানসভার কার্যবিধির ৩০২ ধারা লঙ্ঘন করা হয়েছে। এ রাজ্যে আগে এমন নজির নেই। এরপরই কলকাতা হাই কোর্টে মামলা করেছিলেন কল্যাণীর বিজেপি বিধায়ক অম্বিকা রায়। বিরোধী দলের বিধায়ক অম্বিকার দাবি, পিএসি-র শীর্ষ পদে দলত্যাগী মুকুলের নিয়োগ ‘অবৈধ’। প্রথা অনুযায়ী, ওই পদ বিরোধী দলের প্রাপ্য। বিজেপি কোনও ভাবেই তাঁর নাম পিএসি সদস্যদের তালিকায় রাখেনি, এই তথ্যই আদালতের আবেদনে তুলে ধরেন বিজেপি বিধায়ক।
এরপর ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দল এবং বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলার শুনানি চলে। তাতে সবপক্ষের বক্তব্য শোনে কলকাতা হাই কোর্ট। এমনকী বিধানসভার স্পিকারের হলফনামাও তলব করা হয়। তারপরই এদিন আদালত জানিয়ে দেয়, এই সংক্রান্ত যাবতীয় সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা সাংবিধানিকভাবে রয়েছে বিধানসভার স্পিকারের। তাই আদালত এ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করবে না। তবে এর সঙ্গেই সুপ্রিম কোর্টের একটি রায়ের কথা উল্লেখ করে ৭ অক্টোবরের সময়সীমা বেঁধে দেয় দুই বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। সুপ্রিম কোর্টে মণিপুর বিধানসভার অধ্যক্ষের ওই মামলায় শীর্ষ আদালত জানিয়েছিল, অভিযোগ জমা পড়ার তিন মাসের মধ্যে বিধানসভার স্পিকারের তা নিষ্পত্তি করতে হবে। এই ক্ষেত্রে ৭ অক্টোবর শেষ হচ্ছে সেই সময়সীমা। তাই ওইদিনের মধ্যে সিদ্ধান্ত নিতে হবে বিধানসভার স্পিকারকে।
এদিকে, মুকুল রায়ের (Mukul Roy) বিধায়ক পদ খারিজের দাবিতে এবার কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। গত সোমবারই তিনি হাই কোর্টে এসে মুকুল রায়ের বিধায়ক (MLA) পদ খারিজের দাবিতে মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর হাই কোর্ট চত্বরে শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari) বলেন, “দলত্যাগ বিরোধী আইনে মুকুল রায়ের যে বিষয়টি ছিল, তা নিয়ে আমরা চার মাস অপেক্ষা করেছি। অধ্যক্ষের কাছে চারটে শুনানিতে অংশও নিয়েছি। কিন্তু এখনও কোনও সিদ্ধান্ত না হওয়ায় আমরা হাই কোর্টের হস্তক্ষেপ চাইলাম, যাতে দলত্যাগ বিরোধী আইনে মুকুল রায় বিধায়ক পদ বাতিল করা হয়।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.