গোবিন্দ রায়: বারুইপুরে শুভেন্দু অধিকারীর রাস্তা আটকানো ও হামলার অভিযোগে কলকাতা হাই কোর্টে মামলা দায়ের হয়েছিল। সেই মামলার শুনানিতে পরিষ্কার ভিডিও ফুটেজ চাইলেন বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ। ভালো ফুটেজ থাকলে, তা আদালতে দেখানোর নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি। আজ বৃহস্পতিবার আদালতে এই মামলায় দীর্ঘ সওয়াল-জবাব চলে।
বিজেপি আদালতে চারটি ফুটেজ জমা দেয়। বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ একটি ভিডিও ফুটেজ তিনবার চালিয়ে দেখেন। তারপরই তিনি বলেন, “এই ফুটেজে কিছুই দেখা যাচ্ছে না। আমি তিনবার দেখলাম, আমি কিছুই বুঝতে পারছি না।” তারপরই তিনি বিজেপির আইনজীবীর উদ্দেশ্যে বলেন, “ভালো কোনও ফুটেজ থাকলে দেখান।” বারুইপুরে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন বিজেপি নেতারা। এদিন সেই বিষয়েও মন্তব্য করেছেন বিচারপতি। তিনি বলেন, “যেগুলোকে আপনারা বাঁশের লাঠি বলছেন, আমার সেগুলোকে দেখে ফাইবার স্টিক বলে মনে হচ্ছে। ফাইবার স্টিক পুলিশ ব্যবহার করে। এই ফুটেজে দেখে মনে হচ্ছে পুলিশ আপনাদের বাঁচাবার চেষ্টা করছে।”
বিজেপির তরফে আইনজীবী বলেন, “পুলিশ কি এতটাই ক্ষমতাহীন যে এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ পেশ করতে পারছে না?” সেক্ষেত্রে বিচারপতির পরামর্শ, “পরিষ্কার ফুটেজ থাকলে নিয়ে আসুন, যেটাতে হামলার ছবি স্পষ্ট হয়। কেন্দ্রের কাছে যদি কোনও ভিডিও থাকে তাহলে আমি দেখতে প্রস্তুত।” এদিন শুনানিতে রাজ্যের অ্যাডভোকেড জেনারেল কিশোর ঘোষ উপস্থিত ছিলেন। কতজন লোক বিরোধী দলনেতাকে কালো পতাকা দেখাচ্ছিলেন? রাজ্যকে সেই প্রশ্ন করেন বিচারপতি। রাজ্যের তরফে জানানো হয় বেশ কয়েকজন ছিলেন। তখন বিচারপতির প্রশ্ন, “তাঁরা অনুমতি নিয়েছিল?” রাজ্যের তরফে জানানো হয়, ওখানে তৃণমূলেরও একটি কর্মসূচি ছিল। সেক্ষেত্রে রাজ্যকে বিচারপতি প্রশ্ন করেন, “আপনারা সব কিছু জেনে কী করে দুটি দলকে অনুমতি দিলেন?”
সেই প্রেক্ষিতে রাজ্যের সওয়াল, কোনও নেতা যদি কোথাও যান। বিরোধীরা যদি কালো পতাকা দেখান। তাহলে সম্ভবত এটা বলা যায় না, যে কোনও অপরাধ তাঁরা করেছেন। সেক্ষেত্রে বিচারপতির মন্তব্য, “সেটা অন্য কথা, কিন্তু এখানে আইনি অনুমতি দেওয়ার কারণে তো এই উত্তেজনা তৈরি হয়েছে।” সেই প্রেক্ষিতে রাজ্যের বক্তব্য, “কেউ অনুমতি চাইলে তো দিতেই হবে। দিলেও দোষ, না দিলেও দোষ।” তখন বিচারপতির পালটা সওয়াল, “কারা আগে অনুমতি চেয়েছিল?” সেটা এখনই বলা যাবে না। রাজ্যের তরফে এই কথা জানানো হয়। “যেই আগে অনুমতি চেয়ে থাকুক না কেন, দুটি দলকে একত্রে অনুমতি দেওয়া ঠিক হয়নি।” মন্তব্য করেন বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ।
“এটা একটা পুরানো রীতি হয়ে দাঁড়িয়েছে। মিছিল করার পরে একটা অস্পষ্ট অভিযোগ করা।” এদিন শুনানি চলাকালীন আদালতে সেই কথা রাজ্যের তরফে দাবি করা হয়েছে। এই মামলা গ্রহণযোগ্য নয়। সেই কথাও রাজ্যের তরফে আদালতে জানানো হয়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.