ফাইল ছবি
নব্যেন্দু হাজরা: জ্বালানির খরচ কমাতে এবার ‘ডুয়েল ফুয়েলে’ বাস চালানোর ভাবনা দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগম বা SBSTC’র। অর্থাৎ কিছুটা ডিজেল, কিছুটা CNG – এই দুইয়ের সংমিশ্রণেই চলবে বাস। যার জেরে একদিকে যেমন খরচ অনেকটাই কমবে, সেই সঙ্গে কমবে পরিবেশ দূষণও। তবে আপাতত একটি বাসকে ডিজেলের থেকে ‘ডুয়েল ফুয়েলে’ বদলানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। সেই কাজ চলছে বেলঘরিয়ার ডিপোয়। পরীক্ষায় সফল হলে ভবিষ্যতে এই পদ্ধতিতে সরকারি এবং বেসরকারি, দুই বাসই চালানোর ব্যাপারেই বড় সিদ্ধান্ত হতে পারে। সেক্ষেত্রে বাস চালানোর খরচ বেশ কিছুটা কমবে বলেই মনে করছেন পরিবহণ দপ্তরের কর্তারা। আর ভাড়াবৃদ্ধির দাবিও বারবার উঠবে না।
এর পাশাপাশি এসবিএসটিসির একটি এবং পশ্চিমবঙ্গ পরিবহণ নিগমের দু’টি পুরনো বাসকে CNG-তে বদল করার কাজ চলছে। কসবা ডিপোয় এই বাসের ইঞ্জিনের বদল হচ্ছে। পরিবহণ দপ্তরসূত্রে খবর, সাধারণ ডিজেল চালিত বাসের ইঞ্জিনকে ডুয়েল ফুয়েলে বদলাতে প্রায় দেড় লক্ষ টাকা খরচ পড়বে। একটি বেসরকারি সংস্থার অধীনে এই কাজ হচ্ছে। যারা অন্য রাজ্যেও এই কাজটা করছে। যদি ডুয়েল ফুয়েলে বাস চালানো যায়, সেক্ষেত্রে এখন যে দূরত্ব যেতে হাজার টাকা খরচ হয়, তা কমে সাতশো টাকা হয়ে যাবে বলেই মনে করা হচ্ছে।
কীভাবে কাজ করবে এটি? পরিবহণ দপ্তরের এক কর্তা জানান, বাসের মধ্যে একটা ডুয়েল ফুয়েল কিট লাগানো হবে। সঙ্গে একটা CNG ট্যাংক থাকবে। ট্যাংক থেকে পাইপলাইন দিয়ে গ্যাস ওই ডুয়েল ফুয়েল কিটে যাবে। সেখানে আসবে ডিজেলও। দুটোর মিশ্রণ সেখানে হয়েই তা ইঞ্জিনে পৌঁছবে। ৬০ শতাংশ ডিজেল ৪০ শতাংশ CNG-র মিশ্রণ হবে। ইতিমধ্যেই SBSTC ডব্লুবি ৩৯এ/৭০১৩ বাসটিকে এই নয়া পদ্ধতিতে চালানোর জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে। একইসঙ্গে সিএসটিসি দু’টি এবং এসবিএসটিসি একটি বাসকে ডিজেল ইঞ্জিন থেকে ডেডিকেটেড ইঞ্জিনে বা CNG-তে রূপান্তর করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
তবে এগুলো সবই পরীক্ষামূলক বলেই জানাচ্ছেন নিগমের কর্তারা। তাঁদের কথায়, যেভাবে জ্বালানির দাম দিনদিন বাড়ছে, তাতে বিকল্প উপায় ভাবা ছাড়া কোনও উপায় নেই। সরকারি নিগম বেসরকারি বাস মালিকরা প্রত্যেকেই ভুক্তভোগী। তাই নানারকমভাবে জ্বালানির খরচ বাঁচিয়ে বিকল্প উপায়ে বাস চালানোর পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে, যদি তা সফল হয় সেক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সরকারের টেস্টিং এজেন্সির ছাড়পত্রের জন্য পাঠানো হবে। তবে এই বিকল্প উপায় পরিবেশবান্ধব হবে। কারণ, তাতে ডিজেল পুড়বে। ইতিমধ্যেই ৬০টি সিএনজি চালিত বাস আসানসোল-দুর্গাপুরে চালাচ্ছে। এসবিএসটিসি।
নিগমের এমডি গোদালা কিরণকুমার বলেন, “জ্বালানির খরচ কমাতে পরিবহণ দপ্তরের নির্দেশেই একটা বিকল্প উপায়ে মানে ডুয়েল ফুয়েল কিটের মাধ্যমে বাস চালানোর পাইলট প্রজেক্ট নেওয়া হয়েছে। তারই কাজ চলছে।” অল বেঙ্গল বাস মিনিবাস সমন্বয় সমিতির সাধারণ সম্পাদক রাহুল চট্টোপাধ্যায় বলেন, “জ্বালানির খরচ বাঁচাতে বিকল্প উপায় বের হোক, আমরাও চাই। তাতে সরকরি-বেসরকারি পরিবহণ উভয়ই লাভবান হবে। কিন্তু সেটা তো একটা সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। তার আগে বাস শিল্পটাকে বাঁচাতে সরকারের কিছু ভাবা উচিত।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.