বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত: ঘোষণার তিনঘণ্টা আগে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের (Buddhadeb Bhattacharjee) বাড়িতে ফোন করে পদ্মভূষণ প্রাপ্তির কথা জানানো হয়েছিল। সেই সময় আপত্তি না জানানোয় তালিকায় নাম রাখা হয়েছিল। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর পদ্মভূষণ প্রত্যাখ্যান নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে এমনই রিপোর্ট দিল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। বিষয়টি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর খোঁজখবর শুরু করেছে বলে জানা গিয়েছে। সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় (Sandhya Mukhopadhyay) আপত্তি করাতেই তাঁর নাম তালিকায় রাখা হয়নি বলেও রিপোর্টে উল্লেখ করেছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক।
প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের পদ্মভূষণ প্রত্যাখ্যান বিতর্ক পিছু ছাড়ছে না সিপিএমের। প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর ঘটনা সবিস্তার রিপোর্ট স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছে চেয়েছে বলে জানা গিয়েছে। বিশেষ করে বুদ্ধবাবুর বিবৃতির একটি অংশ সাড়া ফেলে দিয়েছে দিল্লিতে। প্রত্যাখ্যানের বিবৃতিতে বুদ্ধবাবু লেখেন, “আমি কিছুই জানতাম না। আমাকে কিছু জানানো হয়নি।” প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর বিবৃতি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের পৌঁছতেই বিস্মিত হন আধিকারিকরা। জানা গিয়েছে, বুদ্ধবাবুর সঙ্গে যোগাযোগের দায়িত্ব দেওয়া হয় কেন্দ্রীয় সরকারের কলকাতার গোয়েন্দা সংস্থাকে। সেখানকার এক আধিকারিক বুদ্ধবাবুর বাড়িতে ফোন করেন। বিষয়টি জানানোর পর কোনও আপত্তি জানানো হয়নি বলে রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে বলে খবর। যদিও বিষয়টি নিয়ে সরকারের তরফে এখনও মুখ খোলা হয়নি।
বিষয়টি নিয়ে কলকাতাতেও বিতর্ক ও জল্পনা অব্যাহত। সূত্রের খবর, ঘোষণার আগে পর্যন্ত কিছুই জানতেন না আলিমুদ্দিনের কর্তারা। জানতেন বুদ্ধবাবুর স্ত্রী মীরা ভট্টাচার্য। প্রথমে পদ্মভূষণ গ্রহণে বুদ্ধবাবুও আপত্তি ছিল না। কিন্তু আলিমুদ্দিনের ম্যানেজাররা নামতেই মত বদল করেন। রাজনৈতিক মহলের ব্যাখ্যা, সিপিএমের আভ্যন্তরীণ সিদ্ধান্ত ও কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের রাজনৈতিক কৌশলের কথা বিবেচনা করেই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করেন তিনি।
বুধবারের পর বৃহস্পতিবার কেন্দ্রের শাসকদলের তরফে দিলীপ ঘোষ কার্যত সিপিএমকে দেশদ্রোহী বলে তোপ দাগেন। তিনি বলেন, “কমিউনিস্টরা কাঁকড়ার মতো। কাউকেই ওপরে উঠতে দেয়নি। জ্যোতি বসুকে প্রধানমন্ত্রী হতে দেয়নি। সিপিএম নেতারা দেশের সম্মান নেন না। কিন্তু বিদেশ থেকে সম্মান জানানো হলে তা গ্রহণ করেন। বুদ্ধবাবুকে পদ্মভূষণ নিতে দিল না।” তাঁর অভিযোগ, “উনি শুধু রাজনীতিক নন, সাহিত্যিকও বটে। শুরুতেই দল বলে দিল নেওয়া যাবে না। উনি দলীয় অনুশাসন মেনে চলেন। তাই নিতে অস্বীকার করলেন।” দিলীপ ঘোষরা বাংলার সংস্কৃতি বা মনন বোঝেন না। তাই মাটিতে পুঁতে ফেলবো। কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে গুলি করে মারব। ক্ষমতায় এলে খুন করে দেবো। এই ধরনের ভাষা প্রয়োগ বিজেপি নেতারা হামেশাই করে থাকেন বলে অভিযোগ সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীর। তবে বুদ্ধবাবু সিদ্ধান্তকে সমর্থন করেছে বামফ্রন্টের শরিকরা। ফরওয়ার্ড ব্লকের রাজ্য সম্পাদক নরেন চট্টোপাধ্যায়ের মতে, বিজেপি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে বুদ্ধবাবুকে পদ্মভূষণ দিতে চেয়েছিল। প্রত্যাখ্যান করে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে মনে করেন তিনি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.