রাহুল চক্রবর্তী: মূর্তি ভেঙেছিল মঙ্গলবার। নতুন মূর্তি বসলও মঙ্গলবার। মাঝে কাটল ২৭ দিন।কলেজের ভিতরে স্থান পেল বিদ্যাসাগরের নতুন আবক্ষ মূর্তি। আর বাইরে পূর্ণ অবয়ব। তবে ভাঙা মূর্তিও সংরক্ষণ করা হবে কলেজেরই আর্কাইভে।
দিনটা ছিল ১৪ মে। বিদ্যাসাগর কলেজে ভাঙা হয়েছে ঈশ্বরচন্দ্রের মূর্তি। খবর পেয়েই কলেজে ছুটে যান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।ভাঙা টুকরোগুলি হাতে নিয়ে ঘোষণা করেন, বিদ্যাসাগরের মূর্তি তৈরি করবে রাজ্য সরকার। এমনকী ওই রাতে বিদ্যাসাগর কলেজ থেকে হেঁটে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেন মমতা। ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানান। আর ১১ জুনও একই রাস্তা ধরে হাঁটলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। হুড খোলা গাড়িতে সামনে ছিল বিদ্যাসাগরের আবক্ষ মূর্তি। বর্ণপরিচয় স্রষ্টার সৃষ্টিকে সম্মান জানাতে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে হাঁটলেন কবি, সাহিত্যিক, শিল্পী, অভিনেতা, পরিচালক-সহ সমাজের বিশিষ্টরা। বিদ্যাসাগরের আবক্ষ মূর্তিটি কলেজের ভিতরে বসিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী। সঙ্গে উদ্বোধন করেন বিদ্যাসাগরের আরও একটি পূর্ণ অবয়ব মূর্তির। ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজি নজরুল ইসলাম ও আশুতোষ মুখোপাধ্যায়ের ব্রোঞ্জের মূর্তি তৈরি করছে রাজ্য সরকার। যে মূর্তিগুলি কলেজ স্ট্রিট চত্বরেই কলেজ,বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে বসানো হবে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী৷
এদিনের অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন, “বিদ্যাসাগর কলেজকে আধুনিকরূপে গড়ে তোলা হবে। তৈরি হবে মিউজিয়াম। তাতে ১ কোটি টাকা রাজ্য সরকার ব্যয় করছে।” এছাড়াও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ঘাটালে বিদ্যাসাগর উচ্চ বিদ্যালয়ের উন্নতিতে ৫০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। এবং এই বিদ্যালয়টিকে হেরিটেজের তালিকাভুক্ত করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙার ঘটনাকে রাজ্য সরকার যে ভাল চোখে দেখছে না, তা সেদিনই টের পাওয়া গিয়েছিল। নির্বাচনী আচরণবিধি ওঠার পরই কমিটি গঠন করে তদন্ত শুরু করেছে রাজ্য। দোষীরা যে কোনও অবস্থায় ছাড় পাবে না, তা এদিও স্পষ্ট করে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। বিদ্যাসাগরের ভাবমূর্তিকে কোনওদিন ভাঙা যাবে না।বিদ্যাসাগরের যে পুরনো মূর্তিটি ভাঙা হয়েছে, তা সংরক্ষণ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। বিদ্যাসাগর কলেজের অধ্যক্ষ গৌতম কুণ্ডু বলেন, “মূর্তির ভাঙা অংশগুলি কলেজের আর্কাইভে সংরক্ষণ করে রাখা হবে। আর পূর্ণ অবয়ব মূর্তিটিতে একটি ছাউনির ব্যবস্থা করা হচ্ছে।” অনুষ্ঠান মঞ্চ, বিদ্যাসাগর কলেজ, কলেজ স্ট্রিট চত্বর, বিধান সরণির চৌহদ্দিজুড়ে বর্ণপরিচয় মলাটের আদলে সাজিয়ে তোলা হয়েছিল। রাজ্য সরকারের বার্তা ছিল একটাই, ‘বাংলার পরিচয় বাংলার গর্ব’।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.