অর্ণব আইচ: লকডাউনে বন্ধ দোকান। তাই মদের হাহাকার। এক বোতল মদের জন্য চাতকের দৃষ্টিতে তাকিয়ে মদ্যপায়ীরা। দেশি বা বিলিতি মদ নেই, তাই বহু মদ্যপায়ীর ভরসা হাঁড়িয়া থেকে চোলাই। বাদ যাচ্ছে না মহুয়াও। জেলা বা শহরের আশপাশের অঞ্চল থেকে চোরাপথে কলকাতায় বেআইনি মদ ঢোকার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না আবগারি ও পুলিশ আধিকারিকরা। অথচ এই বেআইনি মদ থেকেই নতুন করে দেখা যেতে পারে সমস্যা। তাই এই বেআইনি মদ বন্ধ করতে এবার ব্যবস্থা নিচ্ছেন আবগারি ও পুলিশ আধিকারিকরা।
এদিকে, মদ্যপান করার জন্য লকডাউনের সময় শহরের কয়েকটি যৌনপল্লিতেও মাঝেমধ্যে ভিড় জমানোর চেষ্টা চলছে। সেই ক্ষেত্রে জাল মদও পাচার ও বিক্রির চেষ্টা করতে পারে কারবারিরা। সেদিকেও রয়েছে পুলিশের সতর্ক নজর। আবগারি দফতরের এক কর্তা জানিয়েছেন, লকডাউনের সময় শহরে বেআইনি মদ বন্ধ করতে ঠেকগুলিতে হানা দেওয়া হচ্ছে। যাঁরা ঠেকগুলি চালান বলে জানা গিয়েছে, তাঁদের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ও স্যানিটাইজার। কলকাতার মধ্যে টালিগঞ্জ, গার্ডেনরিচ, কসবা, মেটিয়াবুরুজ, বড়তলা, গিরিশ পার্ক, পূর্ব কলকাতার ট্যাংরা, তপসিয়া অঞ্চল ও বিভিন্ন জেলায় প্রতিনিয়ত চলছে প্রচার।
কিছুদিন আগেই দেশি মদের অভাব মেটাতে দক্ষিণ ২৪ পরগনার একটি গ্রামে বিক্রি হচ্ছিল হাঁড়িয়া। গ্রামের বেশ কিছু বাসিন্দাকে ভিড় করেই ওই নেশার জিনিসটি খেতে দেখা গিয়েছিল। আবার পুলিশ ও আবগারি আধিকারিকদের কাছে এমন খবরও আছে যে, মদের অভাব মেটাতে লুকিয়ে চুরিয়ে আশপাশের জেলায় চলছে চোলাই তৈরিও। যদিও বেশিরভাগ ভাঁটিই এখন বন্ধ, তবু নেশার জিনিসের জোগান দিতে এখন চোলাইকেই ব্যবহার করছে বেআইনি মদের কারবারিরা। লকডাউন ভেঙে জেলার কিছু ঠেকে গোপনে বিক্রি হচ্ছে এই বেআইনি মদ। আবার এমন খবরও পুলিশ ও আবগারির কাছে এসেছে যে, শাকসবজির গাড়ির মধ্যে করেই গোপনে কারবারিরা শহরের কয়েকটি জায়গায় পাঠাচ্ছে বেআইনি মদ। যদিও শহরের পরিচিত ঠেকগুলিতে এই বেআইনি মদ বিক্রির বদলে তারা ফাঁকা শহরে অন্য জায়গা বেছে নিচ্ছে বলেও খবর পেয়েছে আবগারি দফতর।
লকডাউনের সময় যাতে ঠেকগুলিতে কোনওমতেই বেআইনি মদ বিক্রি না হয়, তার জন্য আবগারি দফতর লাগাতার প্রচার শুরু করেছে। এলাকার বাসিন্দাদের আবগারি আধিকারিকরা বোঝাচ্ছেন যে, মদের খোঁজে যেন কেউ বাড়ি থেকে না বের হন। তাঁরা যেন বেশি টাকা দিয়েও মদ কেনার চেষ্টা না করেন। আবার ঠেকের মালিকদেরও বলা হচ্ছে যে, তাঁরা যেন কোনওমতেই চোলাইয়ের মতো বেআইনি মদ জোগাড় করার চেষ্টা না করেন। কারণ, এই গরমে এই ধরনের মদ্যপান করে মানুষের শরীর খারাপ হতে পারে। চোলাই বিষাক্ত হয়ে গেলে আরও বড় সমস্যা দেখা যেতে পারে। তাই বেআইনি মদ পাচার ও বিক্রির উপর নজর দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে আবগারি ও পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.