ফাইল ফটো
অর্ণব আইচ: দোল ও হোলির আগে থেকেই শহরে ব্যাপক ধরপাকড় শুরু হয়েছে। বেপরোয়া হেলমেটহীন বাইক চালিয়ে ধরা পড়ল ১১০০-রও বেশি বাইক চালক। যদিও মদ্যপান করে গাড়ি বা বাইক চালানোর অভিযোগে ধৃতের সংখ্যা ৩৩। তুলনামূলকভাবে তা অনেকটাই কম বলে অভিমত পুলিশের।
জানা গিয়েছে, করোনার আতঙ্কে অনেক বাইক ও গাড়ির চালকই ব্রেথ অ্যানালাইজারে ফুঁ দিয়ে পরীক্ষা করাতে চাইছেন না। তার ফলে নাকা চেকিংগুলিতেও কলকাতা পুলিশ (Kolkata Police) ব্রেথ অ্যানালাইজার ব্যবহার না করে চালকের আচরণের উপরই ভিত্তি করে বোঝার চেষ্টা করছেন, তিনি মদ্যপান করে গাড়ি চালাচ্ছেন কি না। আবার অনেক পুলিশকর্মীও করোনা ভাইরাসের কোপ থেকে বাঁচতে মুখে মাস্ক পরেই ডিউটি করছেন বলে জানা গিয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, দোল ও হোলির দিন বহু তরুণ ও যুবক অতিরিক্ত গতিতে হেলমেট ছাড়াই বাইক চালায়। ধরা পড়ার পর পুলিশকে যুক্তি শুনতে হয়, যেহেতু মাথা ও মুখে রং লেগে রয়েছে, তাই হেলমেট পরেনি তারা। যদিও লালবাজারের কর্তারা জানিয়েছেন, এই বছর এই যুক্তি ধোপে টিকবে না। হেলমেট না পরে বাইক চালালে দোল বা হোলির দিনেও নেওয়া হবে কড়া ব্যবস্থা। একই ব্যবস্থা নেওয়া হবে বাইকে একাধিক আরোহী বা ‘ট্রিপল রাইডিং’-এর ক্ষেত্রেও। এ ছাড়াও চলন্ত গাড়ি বা বাইক থেকে রং বা জলরং ভর্তি বেলুন ছোঁড়ার ক্ষেত্রেও চালক ও আরোহীদের ক্ষেত্রে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যাতে বহুতল থেকে পিচকারি বা বালতি থেকে রং না ছোঁড়া হয়, সেই বিষয়েও পুলিশ কড়া ব্যবস্থা নিচ্ছে।
পুলিশ কমিশনারের কড়া নির্দেশে দোলের আগেই শনিবার সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত শহরের গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলিতে নাকা চেকিং করা হয়। হয় ব্লক তল্লাশিও। হেলমেট ছাড়া বাইক চালিয়ে ধরা পড়েছে ১ হাজার ১১৬ জন চালক। বাইকে ‘ট্রিপল রাইডিং’-এর অভিযোগে ধরা পড়েছে ৬৩৪ জন। বেপরোয়া গতিতে বাইক ও গাড়ি চালানোর অভিযোগে ১৩৪ জনকে ধরা হয়েছে। মদ্যপান করে গাড়ি চালানোর অভিযোগে ধরা পড়েছে ৩৩ জন। দোলের আগেই রাস্তায় অভব্যতা করার অভিযোগে ৮৬২ জনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। উদ্ধার হয়েছে একটি আগ্নেয়াস্ত্রও।
এছাড়া শহরের বিভিন্ন জায়গা থেকে উদ্ধার হয়েছে ৮৫৯ লিটার বেআইনি মদ। জুয়া খেলার অভিযোগে পুলিশের হাতে ধরা পড়েছে পাঁচজন। উদ্ধার হয়েছে হেরোইন-সহ অন্য মাদকও। রাস্তায় গুণ্ডামি করার অভিযোগে পুলিশ ৫১ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। অন্যান্য ট্রাফিক আইন ভাঙার অভিযোগে আরও ৮৪ জনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। জামিনঅযোগ্য পরোয়ানা থাকার কারণে ৩৫৩ জনকে গ্রেপ্তার করার পাশাপাশি বিশেষ অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছে ৩০ জন। এছাড়াও আগাম সতর্কতা হিসেবে ১৫৩ জনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। মোট ১২টি গাড়ি ধরা পড়েছে। সোমবার সকাল থেকেই কোনও গোলমাল এড়াতে শহরে ৭২০টি পিকেট থাকছে। এ ছাড়াও রাস্তায় থাকছে পর্যাপ্ত সংখ্যক টহলদার গাড়ি ও বাইক। শান্তি ও সম্প্রীতি রক্ষার জন্য সব রকমের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.