স্টাফ রিপোর্টার : আমাদের বাড়িটাও আবার ভাঙা হবে না তো! ইতিহাস হয়ে যাবে না তো জীবনের সব স্মৃতিগুলো!
বউবাজারের (Bowbazar) ১৬/১ দুর্গা পিতুরি লেনের (Durga Pituri Lane) দোতলা বাড়িতে যখন হাতুড়ির ঘা পড়ছে, তখনই একবুক আশঙ্কা তাড়া করে বেড়াচ্ছে পড়শিদের। বউবাজার বিপর্যয়ে তাঁদের বাড়িতেও ফাটল ধরেছে। ভেঙে পড়ার আশঙ্কায় অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে তাঁদেরও। তাতেই যেন চিন্তা বহুগুণ বেড়ে গিয়েছে। ফাটল ধরা জায়গা মেরামত করে ফিরে আসা গেলে একরকম। আর যদি না যায়!
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের (Jadavpur University) বিশেষজ্ঞরা মঙ্গলবারও দুর্গা পিতুরি লেনের একাধিক বাড়ির স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেছেন। তাঁদের দেওয়া রিপোর্টের ভিত্তিতেই স্থির হবে বাকি প্রায় গোটা দশেক বাড়ির ভবিষ্যৎ। আজ, বুধবার পুরসভায় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বৈঠকে বসবে বিল্ডিং দপ্তর।
একটা ছবি তুলে নিই। বাড়িটা তো আর থাকবে না। সব স্মৃতি শেষ হয়ে গেল। মঙ্গলবার যখন বাড়ির গায়ে হাতুড়ির ঘা পড়ছিল, ছলছলে চোখে কথাগুলো বলছিলেন ১৬/১ দুর্গা পিতুরি লেনের বাসিন্দা সুমনা দাস। দমকল, বিপর্যয় মোকাবিলা দপ্তর, ঠিকাদারি সংস্থা, কেএমআরসিএল, কলকাতা পুরসভা (Kolkata Municipal Corporation)। এদিন সকাল থেকে বউবাজারে উপস্থিত ছিল সব দপ্তরই । ১৫ নম্বর বাড়িটিও এবার ভাঙা হবে বলেই খবর। তবে ১৬ নম্বর বাড়ির মালিক এখনও সম্মতি না দেওয়ায় সেটি ভাঙা হচ্ছে না। এবিষয়ে আলোচনা চলছে।
এদিন দুর্গা পিতুরি লেনে ঘটনাস্থলে ছিলেন স্থানীয় বিধায়ক নয়না বন্দ্যেপাধ্যায়, কাউন্সিলর বিশ্বরূপ দে, কেএমআরসিএলের কর্তারা। কেএমআরসিএলের জিএম এ কে নন্দী বলেন, “আপাতত একটি বাড়ি ভাঙার কাজই চলছে। বাকিগুলোকে পরীক্ষা করে দেখে রিপোর্ট দেওয়ার পরই সিদ্ধান্ত হবে, সেগুলোর ভবিষ্যৎ কী হবে!”
এদিন কয়েকটি ক্ষতিগ্রস্ত বাড়ির স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে দেখেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞরা। ফাটলের গভীরতা কত, বাড়ির ভিতের অবস্থা কী, বাডি়গুলি মেরামতি করলেও সেগুলি ভেঙে পড়ার আশঙ্কা থাকবে কি না সেইসব পরীক্ষানীরিক্ষা করে এদিন দেখা হয়। সমীক্ষার পুরো কাজ ভিডিওগ্রাফ করা হয়েছে। এদিন পুরসভার কমিশনার বিনোদ কুমার ও ডিজি(বিল্ডিং)অনিন্দ্য কারফর্মারও হাজির ছিলেন।
বিধায়ক নয়না বন্দে্যাপাধ্যায় বাড়ির মালিকের সঙ্গে কথা বলতে যান। তিনি বলেন, “২০১৯ ও এখন দু’টি দুর্ঘটনায় বড় কোনও ক্ষতি হয়নি। এটা ঈশ্বরের কৃপা। তাই বাড়িটি যাতে ভাঙার অনুমতি দেন তা নিয়ে মালিককে বোঝানো হচ্ছে। ১৫ নম্বর বাড়ির মালিক অবশ্য অনুমতি দিয়েছেন বলে তিনি জানিয়েছেন। খুব শীঘ্রই ১৫ নম্বর বাড়িটি ভাঙার কাজ শুরু হবে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.