গৌতম ব্রহ্ম: ছবি দেখে মনে হবে, কর্পোরেট হাসপাতালের টুইন শেয়ার কেবিন। মোলায়েম ঠান্ডা, ঝাঁ-চকচকে অন্দর। জানলায় নীলাভ সানগার্ড। তার মধ্যেই চলছে রক্তদান। বছর বাইশের এক তরুণ শুয়ে আছেন। হাতে রক্তদানের সার্টিফিকেট। সাদা অ্যাপ্রন পরিহিত টেকনিশিয়ান রক্ত সংগ্রহ করছেন। টেকনিশিয়ানের সামনে ছোট্ট টেবিল-চেয়ার, সেখানে ডাক্তারবাবু বসে নোট নিচ্ছেন।
সতেরো, আঠারো, উনিশ, কুড়ি। রক্তদাতার সংখ্যা বেড়েই চলেছে। কে বলবে এসি বাসের মধ্যে রক্তদান শিবির চলছে? রক্তসংকট কাটাতে এমনই অভিনব উদ্যোগ নিল রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তর। পাড়ার মোড়ে মোড়ে আয়োজন করল ভ্রাম্যমাণ রক্তদান শিবিরের। সরকারি সূত্রে খবর, রক্তসংকট মোকাবিলায় সামনের মাসে দশটি এমন এসি বাস রাস্তায় নামানো হবে স্বাস্থ্য দপ্তরের তরফে।
সোমবার তারই মহড়া চলল দক্ষিণ শহরতলির গাঙ্গুলিবাগান মোড়ে। দু’জন-দু’জন করে প্রায় কুড়ি জন রক্ত দিলেন। মঙ্গলবার পাটুলি উপনগরীতে হাজির থাকবে এই এসি বাস। সবমিলিয়ে, প্রায় ২১০ বোতল রক্ত সংগ্রহ করা হবে বলে জানালেন বাসের দায়িত্বে থাকা সুপারিন্টেনডেন্ট। তাঁর বক্তব্য, লকডাউনের জেরে একসঙ্গে জমায়েত বন্ধ। সুতরাং রক্তদান শিবিরও হচ্ছে না। পরিণামে প্রবল রক্তসংকট শুরু হয়েছে রাজ্যে। ১০১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বাপ্পাদিত্য দাশগুপ্ত ২১০ জন রক্তদাতার ব্যবস্থা করে দিচ্ছেন। বাকি কাউন্সিলরদের কাছেও আবেদন করা হয়েছে। “আশা করি, কিছুটা সুরাহা হবে”, আশাপ্রকাশ করলেন তিনি।
লকডাউন ঘোষণার পর এই প্রথম বাসটি রাস্তায় নামল। জানা গিয়েছে, ২০১১ সালে বাসটির উদ্বোধন হয়েছিল। চারটি বেড রয়েছে। অর্থাৎ একসঙ্গে চারজন দাতা রক্ত দিতে পারবেন। যদিও করোনা-সংক্রমণের কথা মাথায় রেখে এদিন একসঙ্গে দু’জনের বেশি রক্ত নেওয়া হয়নি। বাসে চালক, হেল্পার ছাড়াও শিবির পরিচালনার জন্য রয়েছেন একজন ডাক্তার, একজন ব্লাড টেকনিশিয়ান। সার্বিক দায়িত্বে এক সুপারিনটেন্ডেন্ট। শুধু কলকাতা নয়, এই বাস জেলাতেও গিয়ে রক্ত সংগ্রহ করছে। এ যাবৎ প্রায় ৩৫ হাজার পাউচ রক্ত সংগৃহীত হয়েছে। বাঁকুড়ায় একদিনে দু’শো বোতল রক্ত সংগ্রহের নজিরও রয়েছে।
দেখুন ভিডিও:
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.