ফাইল ছবি
রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: বিজেপির প্রকৃত কর্মীদের প্রার্থী করা হয়নি! এই অভিযোগ তুলে দলীয় প্রার্থী নির্বাচনে অনাস্থা জানিয়ে ‘নোটায়’ ভোট দেওয়ার আবেদন জানাল ‘বিজেপি বাঁচাও’ মঞ্চ। বৃহস্পতিবার কলকাতায় একটি সভা করা হয় মঞ্চের তরফে। সেখানে আদি বিজেপি কর্মীরা দলীয় নেতৃত্বের প্রতি তোপ দেগে বলেন, “একুশের নির্বাচনের মতো চব্বিশের লোকসভা ভোটেও ভুল প্রার্থীদের মনোনীত করা হয়েছে।” পাশাপাশি পুরনো বিজেপি নেতাকর্মীরা এদিন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে সরব হয়ে প্রশ্ন তুলেছেন, ইডি—সিবিআইয়ের এফআইআরে নাম থাকা সত্ত্বেও কেন তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে না? কেন শুভেন্দুকে নেতা হিসেবে মানতে হবে, এই প্রশ্নও এদিন গেরুয়া শিবিরের আদি কর্মীদের সভায় ওঠে।
শুভেন্দুকে নিশানা করে বিজেপি বাঁচাও মঞ্চের আহ্বায়ক দীপক সরকারের বিস্ফোরক বক্তব্য, “আমার ঘরে চোর পুষে পরের ঘরের চোর তাড়াব, এটাকে কোন নৈতিকতা বলে?” দীপকবাবু আরও প্রশ্ন তোলেন, “হেমন্ত সোরেন, অরবিন্দ কেজরিওয়ালের মতো মুখ্যমন্ত্রীদের হাজতবাস হলে তাঁদের থেকেও বেশি দোষে দুষ্ট শুভেন্দু অধিকারীকে কেন গ্রেপ্তার করা হবে না?” এদিন নব্য ও তৎকালদের হাতে বিজেপি দলটা চলে গিয়েছে বলে সরব হন ‘বাঁচাও’ মঞ্চের সদস্যরা। রীতিমতো বিদ্রোহ করে মঞ্চের সদস্য তথা পুরনো বিজেপি নেতা-কর্মীরা এদিন প্রতিবাদ পত্র ছাপিয়ে সেখানে একাধিক বিষয় নিয়ে বঙ্গ বিজেপির বিরুদ্ধে প্রশ্ন তুলেছেন। নিশানা করা হয়েছে কেন্দ্রীয় নেতাদেরও।
প্রতিবাদপত্রে ‘বিজেপি বাঁচাও’ মঞ্চের প্রশ্ন,
১) দলের সংবিধানকে উপেক্ষা করা হচ্ছে। দলের মধ্যে নির্বাচন প্রক্রিয়া বন্ধ কেন?
২) সংবিধান অনুযায়ী বিজেপি কর্মীদের দ্বারা দল পরিচালনা হচ্ছে না। তাহলে কি যোগ্য কর্মীর অভাব?
৩) একুশের বিধানসভা ভোটের মতো এবার চব্বিশের লোকসভা ভোটেও ভুল প্রার্থী মনোনীত করা হল কাদের স্বার্থে ও কোন উদ্দেশে?
৪) অযোগ্য, আসামী, আয়ারাম—গয়ারাম প্রভৃতি ব্যক্তিদের লোকসভা ভোটে প্রার্থী করার উদ্দেশ্য কী?
৫) সারদা—নারদা কেসের আসামী ইডি—সিবিআইয়ের চার্জশিট হাই কোর্টে জমা হওয়া সত্ত্বেও কোন মন্ত্রে সব চাপা পড়ে থাকে অন্যের পায়ে ধরা ব্যক্তির? নিজের ঘরে চোর পুষে, পরের ঘরের চোড় তাড়ানো কি শোভা পায়? (শুভেন্দুকে নিশানা করা হয়েছে)।
বিজেপি বাঁচাও মঞ্চের তরফে এদিন ‘বিবেক ভোট’ প্রদান করার ডাক দেওয়া হয়েছে দলের প্রকৃত নেতাকর্মীদের উদ্দেশে। এদিন সভা থেকে বিজেপির আদর্শ বাঁচাতে লাগাতার আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে পোস্টার মেরে তৃণমূলকে জেতান। এমন আহ্বানও দেওয়া হয় সভা থেকে। বলা হয়, “শত্রুর শত্রু আমাদের মিত্র। এই আদর্শ বিচ্যুত বিজেপিকে মানব না।’’
উল্লেখ্য, দমদমে শীলভদ্র দত্ত, বরানগরে সজল ঘোষদের মতো শুভেন্দুর চাপিয়ে দেওয়া ও বহিরাগতদের প্রার্থী করা হয়েছে বলে সম্প্রতি শহরের বুকে পোস্টারও দিয়েছিল ‘সেভ বেঙ্গল বিজেপি’। এদিন সভা থেকে বাঁচাও মঞ্চের সদস্যরা অবশ্য এটাও স্পষ্ট করে দেন, দল তাঁরা ছাড়বেন না। বাংলায় বিজেপিকে রক্ষা করতে হবে। প্রয়োজনে নির্দল প্রার্থী দেওয়া হবে। এদিন ‘বিজেপি বাঁচাও’ মঞ্চের এই সভায় বিভিন্ন জেলা থেকে পদ্ম শিবিরের বিক্ষুব্ধ—পুরনো নেতা—কর্মীরা হাজির হয়েছিলেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.