সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রাজ্য রাজনীতিতে ধামাচাপা পড়ে যাওয়া ‘পাহাড়’ ইস্যুকে ফের খুঁচিয়ে তোলার অপচেষ্টা কোনওভাবেই বরদাস্ত করা হবে না। বাংলা ভাগের যে কোনও ধরনের চক্রান্ত কঠোর হাতে দমন করা হবে। মঙ্গলবার সাংবাদিক বৈঠক করে পাহাড় ইস্যুতে দলের অবস্থান স্পষ্ট করে দিলেন তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh)। সেই সঙ্গে প্রশ্ন তুলে দিলেন রাজ্যপালের ভূমিকা নিয়েও।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) প্রচেষ্টায় পৃথক গোর্খাল্যান্ডের দাবি কার্যত ঠান্ডাঘরে। পাহাড়ের রাজনৈতিক দলগুলি তথা দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতাদের কেউই আর পৃথক রাজ্যের গোঁ ধরে বসে নেই। কিন্তু এবার ‘গোর্খাল্যান্ড’ ইস্যুকে কার্যত কবর থেকে খুঁড়ে বের করে এনেছেন এক বিজেপি বিধায়ক। কার্শিয়াংয়ের বিধায়ক বিষ্ণুপ্রসাদ শর্মা বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডাকে চিঠি লিখে দাবি করলেন, উন্নয়নের স্বার্থে উত্তরবঙ্গ ভেঙে পৃথক গোর্খাল্যান্ডের প্রয়োজন। পাহাড়ের মানুষ বিজেপিকে ভোট দিয়েছে। ২০১৯ ও ২০২১ নির্বাচনে দার্জিলিং পাহাড় থেকে ৩ জন সাংসদ নির্বাচিত হয়েছেন। ডুয়ার্স থেকেও ভাল ভোট পেয়েছে বিজেপি। তাই পাহাড়ের মানুষের ভাবাবেগ ও উন্নয়নের দিকে বিশেষ নজর দেওয়া হোক। বিজেপি কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে তাঁর দাবি, যথাযথ উন্নয়নের জন্য পৃথক রাজ্য প্রয়োজন। কারণ, দীর্ঘদিন ধরে গোর্খা (Gorkha) জনজাতি নিজের প্রাপ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত।
বিজেপি (BJP) বিধায়ক গোর্খাদের অধিকারের কথা বললেও, পাহাড়ে কিন্তু তেমন অসন্তোষ নেই। এই মুহূর্তে পাহাড়ের অধিকাংশ রাজনৈতিক দলও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে সহযোগিতার আবহেই কাজ করছে। এই পরিস্থিতিতে বিজেপি বিধায়কের গোর্খাল্যান্ড ইস্যু নিয়ে সরব হওয়ার নেপথ্যে আসলে বাংলা ভাগের ষড়যন্ত্রই দেখছে তৃণমূল। শাসকদলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলছেন, “কোনওভাবেই বাংলা ভাগ হতে দেওয়া যাবে না। মুখ্যমন্ত্রী প্রত্যেকটা জায়গায় যাচ্ছেন, উন্নয়নের কথা বলছেন। বিজেপি বাংলায় যখন হেরে যাচ্ছে, যখন বুঝতে পারছে উন্নয়নের কথা বলে লাভ হচ্ছে না, তখনই বিভিন্নরকমভাবে প্ররোচনা দিচ্ছে। ওঁদের যখন রাজ্য ভাঙা নিয়ে এত কথা ছিল, তাহলে সেটা ইস্তাহারে বলেননি কেন। পাহাড় আগের থেকে অনেক শান্ত অবস্থায় আছে এবং উন্নয়নের দিকে এগোচ্ছে। এই অবস্থায় কোনওভাবেই বঙ্গভঙ্গের কোনও আওয়াজ বরদাস্ত করা হবে না।” কুণালের সাফ কথা, দলীয় বিধায়কের এই চিঠি নিয়ে বিজেপি নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করুক। বিজেপির রাজ্য সভাপতি এবং বিরোধী দলনেতা এর প্রতিবাদ করুক।
শুধু বিজেপি বিধায়ক নয়, এই ইস্যুতে রাজ্যপালের নীরবতা নিয়েও সরব হয়েছেন কুণাল। তাঁর প্রশ্ন,”রাজ্যপাল রোজ ছোটখাটো ইস্যু নিয়ে টুইট করতে পারেন, তাহলে পাহাড় নিয়ে কেন কিছু বলছেন না। বিজেপির নেতা, বিজেপির বিধায়ক বঙ্গভঙ্গ চাইছেন। আপনি বাংলার রাজ্যপাল। একটা নিন্দা একটা প্রতিবাদ করতে পারছেন না।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.