রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: ঘোষণা হয়েছিল। নেওয়া হয়েছিল পরিকল্পনাও। কিন্তু সাংগঠনিক ব্যর্থতার জেরে নির্দিষ্ট সময় পেরিয়ে গেলেও রাজ্যজুড়ে ১ হাজার সভার লক্ষ্যমাত্রার ধারে কাছেও যেতে পারল না বঙ্গ বিজেপি। সংগঠনের ব্যর্থতা ঢাকতে হাজার সভা করতে না পারার জন্য ‘বৃষ্টি’কেই দায়ী করল রাজ্য বিজেপি।
হাজার সভার টার্গেট পূরণ না হওয়ার জন্য দিল্লির নেতাদের কাছে ব্যাখ্যা দিতে ‘বৃষ্টি’র ঘাড়েই দোষ চাপিয়ে দিয়েছে রাজ্য বিজেপি। আর এই আশ্চর্য যুক্তিতে চরম ক্ষুব্ধ রাজ্যের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতারা। সূত্রের খবর, গত রবিবার সল্টলেক কার্যালয়ে বৈঠকে এক হাজারটি মণ্ডল এলাকায় ১ হাজার সভার পরিকল্পনা কতটা বাস্তবায়িত হল, তা নিয়ে রাজ্য নেতাদের জিজ্ঞেস করেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সুনীল বনশল। দেখা যায়, টার্গেট পূরণ তো দূর অস্ত, তিরিশ শতাংশের মতো সভা হয়েছে, অর্থাৎ ৩০০টির মতো সভা করা সম্ভব হয়েছে। শেষ সময়সীমা ছিল ৩১ আগস্ট। তখন রাজ্য নেতাদের তরফে বলা হয়, প্রচুর বৃষ্টির কারণেই সমস্ত সভা করা যায়নি। এছাড়া, ধূপগুড়ির উপনির্বাচনও ছিল বলে যুক্তি দেয় বঙ্গ শাখা।
জানা গিয়েছে, এই যুক্তিকে কার্যত হাস্যকর বলেই মনে করছেন কেন্দ্রীয় নেতারা। তাই বাধ্য হয়ে বাকি ৭০০-র মতো সভা শেষ করার জন্য আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধে দিয়েছেন দলের কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষকরা। সূত্রের খবর, নিচুতলায় সাংগঠনিক দূর্বলতা, জেলা থেকে মণ্ডলে ক্ষোভ—বিক্ষোভ— কোন্দল, সবমিলিয়ে জেরবার রাজ্য বিজেপি। বলা হয়েছিল, দলের এক হাজার মণ্ডল কমিটি এলাকায় একটি করে সভা হবে। এছাড়া, দশটি বড় সভা ও তিনটি মেগা সভা হবে। কিন্তু মণ্ডলের সভাই অর্ধেকও করা যায়নি। মূলত লোকসভা ভোটকে সামনে রেখেই জুন ও জুলাই মাসে এই সভাগুলি করতে বলা হয়। শেষ পর্যন্ত ৩১ আগস্ট পর্যন্ত সময় বাড়ানো হয়। রাজ্যে দলের ১২৬৩টি মণ্ডলের মধ্যে সংগঠন দুর্বল এরকম ২৬৩টি মণ্ডল বাদ দিয়ে ১ হাজারটিতে সভা করতে বলা হয়েছিল। তবে সেপ্টেম্বরেও এই সভা করা যাবে কী না তা নিয়ে সংশয় রয়েছে গেরুয়া শিবিরেই।
এদিকে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির জন্মদিন উপলক্ষে ‘সেবা পক্ষ’ কর্মসূচিতে কার্যত চব্বিশের লোকসভা ভোটের প্রচারই সারতে চাইছে বিজেপি। মোদিকে সামনে রেখে বাংলাতেও পুরনো কর্মীদের এই সেবা কর্মসূচিতে নামাতে মরিয়া দলের রাজ্য নেতৃত্ব। পুরনোদের কাজে নামাতে হবে, দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডার কাছ থেকে এই নির্দেশ আসার পরই নড়েচড়ে বসেছে রাজ্য বিজেপি। আগামী ১৭ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির জন্মদিন। এবার পরেরদিন অর্থাৎ ১৮ সেপ্টেম্বর বাংলায় অনুষ্ঠিত হবে বিশ্বকর্মা পুজো। স্বাভাবিকভাবেই চব্বিশের ভোটকে সামনে রেখে এবার বাড়তি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এ রাজ্যেও সেবা কর্মসূচির অঙ্গ হিসেবে রক্তদান শিবির হবে। প্রতিটি জেলা থেকে কমপক্ষে ১০০ ইউনিট রক্ত সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। এছাড়া, স্বচ্ছতা থেকে বৃক্ষরোপন কর্মসূচিও হবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.