রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: ভারচুয়ালি ছিলেন না জেপি নাড্ডা (JP Nadda) বা কোনও কেন্দ্রীয় নেতা। দলের সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষও এলেন না। গতবারের সেই ধুমধাম, জাঁকজমকের প্রায় কিছুই ছিল না। সল্টলেকে ইজেডসিসি চত্ত্বরে অস্থায়ী মঞ্চে ষষ্ঠীর বিকেলে কিছুটা অনাড়ম্বরভাবেই উদ্বোধন হল বঙ্গ বিজেপির দুর্গাপুজোর। উপস্থিত ছিলেন দলের রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari), রাজ্যসভার সাংসদ স্বপন দাশগুপ্ত, রাজ্য নেতা রাহুল সিনহা, প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায়।
এমনিতে বিধানসভায় ধাক্কা খাওয়ার পর এ বছর দুর্গাপুজো করায় খুব একটা উৎসাহী ছিলেন না রাজ্য বিজেপি (BJP) নেতৃত্ব। কিন্তু শাস্ত্রীয় বিধান বলছে, একবার করলে, অন্তত পরপর তিনবার পুজো করতেই হয়। সেই রীতির গ্যাঁড়াকলে ফেঁসেই শেষ পর্যন্ত দুর্গাপুজো করতে নিমরাজি হতে হয়েছে সুকান্ত মজুমদারকে। গতবার সামনে বিধানসভা ভোট থাকায় বিজেপির সর্বোচ্চ মহলের ফোকাসে ছিল পশ্চিমবঙ্গ। সে কারণে রাজ্য বিজেপির পুজো উদ্বোধন করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi)। এ বছর শেষ মুহূর্তে পুজো করার সিদ্ধান্ত নিয়ে উদ্বোধনের জন্য জেপি নাড্ডাকে চেয়েছিল রাজ্য বিজেপি। এ জন্য নয়াদিল্লির দীনদয়াল মার্গের সদর দপ্তরে চিঠিও পাঠানো হয়েছিল।
দলীয় সূত্রে খবর, রবিবার রাত পর্যন্তও নাড্ডার পুজো উদ্বোধন করা নিয়ে কোনও উত্তর আসেনি দিল্লি থেকে। ফলে বিকল্প উদ্বোধনের পথ বেছে নিতে হয় বিজেপি রাজ্য নেতাদের। সর্বভারতীয় সভাপতিকে না পাওয়া যাওয়ায় রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারই (Sukanta Majumdar) এদিন উদ্বোধন করলেন রাজ্য বিজেপির সাংস্কৃতিক সেল আয়োজিত দুর্গা পুজোর। দলের প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বরাবরই এই পুজোর বিরোধী ছিলেন। তিনি বলেছিলেন, পার্টির কাজ পুজো করা নয়। ষষ্ঠীর সকালে ইজেডসিসির পুজোমণ্ডপে দিলীপবাবুর আসার কথা থাকলেও তিনি আসেননি।
এদিন নিজের লোকসভা কেন্দ্র মেদিনীপুরে অবশ্য একাধিক পুজোর উদ্বোধন করেছেন দিলীপ ঘোষ। অন্যদিকে, গতবার এই পুজোর অন্যতম প্রধান উদ্যোক্তা সব্যসাচী দত্ত কয়েকদিন আগেই বিজেপি ছেড়ে তাঁর পুরনো দল তৃণমূল কংগ্রেসে ফিরে গিয়েছেন। সেটাও কিছুটা হলেও ধাক্কা রাজ্য বিজেপির কাছে। এদিকে, পুজোর উদ্বোধনে এদিন দেখা যায়নি হুগলির সাংসদ তথা রাজ্য বিজেপির অন্যতম সাধারণ সম্পাদক লকেট চট্টোপাধ্যায়কেও। কিছুদিন ধরে দলের একাধিক কর্মসূচিতে অনুপস্থিত লকেটের দাবি, দলেরই কাজে দিল্লিতে রয়েছেন তিনি।
ইজেডসিসিতে (EZCC) বিজেপির পুজোর এবার থিম শ্রী চৈতন্যদেব। মণ্ডপের মঞ্চের নিচে একটি প্রতীকী ‘খড়ম’ রাখা হয়েছে। দলীয় পুজোর উদ্বোধন করে সুকান্ত মজুমদার এদিন বলেন, “শ্রী চৈতন্যদেবের থিম বাংলার জন্য প্রাসঙ্গিক। চৈতন্যদেবের পথ অনুসরণ করে বাংলার সংস্কৃতিকে বাঁচাতে হবে। সেই সময় মহাপ্রভুর নেতৃত্বে প্রথম সত্যাগ্রহ হয়েছিল। কাজী বলেছিলেন নামকীর্তন করা যাবে না। এখন অন্যরূপে কাজীরা আছেন। অন্য নামে তারা বাধা দেওয়ার জন্য দাঁড়িয়ে।” রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর বক্তব্য, বিভিন্নভাবে ধর্মের উপর আঘাত আসছে। সনাতনী সংস্কৃতিকে বাঁচাতে উৎসবগুলি চালিয়ে যেতে হবে। পুজোর উদ্বোধনে এদিন ঢাক বাজাতে দেখা যায় সুকান্ত মজুমদার ও শুভেন্দু অধিকারীকে। প্রতিদিনই চলবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.