ছবি: প্রতীকী
রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায় ও বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত: তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসের (TMCP Foundation Day) কর্মসূচি থেকে বিজেপিকে তীব্র আক্রমণ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) ও তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। তার জবাব দিতে গিয়ে তৃণমূলকে পালটা আক্রমণের পথে হাঁটল বঙ্গ বিজেপি। পাশাপাশি, তৃণমূলের ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসে দলীয় কর্মীদের জমায়েত নিয়ে কটাক্ষ করেছেন বঙ্গ বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)।
শনিবার দলের রাজ্য দপ্তরে সাংবাদিক বৈঠকে রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্যর বক্তব্য, বিজেপি (BJP) কখনও প্রতিহিংসার রাজনীতি করে না। মুখ্যমন্ত্রী কিংবা তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে কুমন্তব্য করা বিজেপির সংস্কৃতি নয়। বরং শমীকের পালটা অভিযোগ, বিজেপি কর্মী ও তৃণমূল (TMC) ত্যাগী নেতারা পশ্চিমবঙ্গে প্রতিহিংসার রাজনীতির শিকার। তৃণমূলের তোপের জবাবে বিজেপির মুখপাত্র বলেন, “ইডি-সিবিআই তদন্ত করলেই তৃণমূল বলে প্রতিহিংসার রাজনীতি। জাতীয় মানবাধিকার কমিশন সম্পর্কে অভিযোগ থাকলে আদালতে জানাক তৃণমূল।”
বঙ্গ বিজেপি মুখপাত্রের আরও অভিযোগ, পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে ভাষা সন্ত্রাস চালাচ্ছে তৃণমূল। তৃণমূলের ত্রিপুরা (TMC in Tripura) জয় নিয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্যের জবাবে শমীকের কটাক্ষ, “ত্রিপুরায় সরকার গড়ার স্বপ্ন দেখছে তৃণমূল। জয়ের স্বপ্ন দেখা ভাল। ত্রিপুরায় আগে খাতা খুলে দেখাক তৃণমূল।” তিনি আরও জানান, “ভোট পরবর্তী হিংসার তদন্ত হচ্ছে আদালতের নির্দেশে। তদন্ত নিয়ে সহযোগিতা চাইলে সিবিআইকে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করবে বিজেপি।”
টিকাকরণ নিয়েও এদিন রাজ্যকে আক্রমণ করেছে বিজেপি। দলের মুখপাত্রর দাবি, টিকাকরণের (Covid-19 Vaccination) নিরিখে দেশের মধ্যে নিচের সারিতে আছে বাংলা। এদিকে, তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসে জমায়েত নিয়ে রাজ্যের শাসকদলকে তোপ দেগেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। দিলীপ ঘোষের বক্তব্য, বিজেপি সারা বছর বহু কর্মসূচি নিলেও সেখানে জমায়েত করে ভিড় করা হয়নি। তৃণমূলই জমায়েত করে কোভিডবিধি ভাঙছে। এ রাজ্যে বিজেপির ক্ষেত্রে এক আইন আর তৃণমূলের ক্ষেত্রে অন্য আইন। যেখানে ২৫ জন রাস্তায় একসঙ্গে বেরোলে গ্রেপ্তার করা হয় সেখানে তৃণমূল এধরণের জমায়েত করে কী করে। মন্তব্য বিজেপির রাজ্য সভাপতির।
এদিকে অবিজেপি রাজ্যগুলোকে নিয়ে বৈঠক ডাকতে মুখ্যমন্ত্রী যে উদ্যোগ নিয়েছেন তাকে স্বাগত জানাল সিপিএম (CPM)। তবে তা কতখানি বাস্তবসম্মত হবে তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন সিপিএম কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী। একটা সময় কেন্দ্র রাজ্য সম্পর্কে বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন বলে অভিযোগ সুজনের।
অবিজেপি রাজ্যগুলোকে বঞ্চনা করছে কেন্দ্র। আর্থিকভাবে বঞ্চনা চলছে বলে শনিবার তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসের অনুষ্ঠানে অভিযোগ করেন মুখ্যমন্ত্রী। এই পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামকে শক্তিশালী করতে অবিজেপি রাজ্যগুলোকে নিয়ে একটি বৈঠক ডাকার কথা বলেন। মুখ্যমন্ত্রীর এই উদ্যোগকে স্বাগত জানান সুজন চক্রবর্তী। তিনি মনে করেন, এই ধরনের উদ্যোগ সবসময় ভাল। তবে তার পিছনে কারণ থাকতে হবে। যিনি উদ্যোগ নেওয়ার কথা বলছেন তিনিই বামফ্রন্ট সরকার থাকাকালীন রাজ্য অর্থ না দেওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে চিঠি লিখেছিলেন। এই ধরনের মনোভাব নিয়ে বৈঠক ডাকলে কতখানি সফল হবে তা নিয়ে সন্দেহপ্রকাশ করেন তিনি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.