সুদীপ রায়চৌধুরী: বিধানসভা অধিবেশন চলাকালীন নজিরবিহীন ঘটনা। মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের মাঝেই কালো পতাকা দেখিয়ে বিজেপির বিক্ষোভ, ওয়াকআউট। বৃহস্পতিবার দুপুরে বিধানসভা অধিবেশনে বক্তব্য রাখছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (CM Mamata Banerjee)। সেখানে গত বিধানসভা ভোটে নন্দীগ্রামে (Nandigram) ‘কারচুপি’র প্রসঙ্গ তোলেন তিনি। নাম না করে বিরোধী দলনেতাকেই নিশানা করেন। আর তারপরই শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে বিজেপি বিধায়করা মুখ্যমন্ত্রীর ভাষণের মাঝেই কালো পতাকা নিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। এরপর অধিবেশন থেকে ওয়াকআউট করেন তাঁরা।
গত বিধানসভা নির্বাচনে (Assembly Election 2021) নন্দীগ্রামের ফলাফল এখনও আদালতে মামলা চলছে। এই কেন্দ্র থেকে জিতে বিরোধী দলনেতা হয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। এদিন মুখ্যমন্ত্রী নন্দীগ্রামের সেই প্রসঙ্গ তুলে বলেন, নন্দীগ্রামে ২ ঘণ্টা লোডশেডিং করে ফলাফল বদলানো হয়েছে। হারিয়ে দেওয়া হয়েছে তাঁকে। সেসব ঘটনা কি ভুলে গেলেন বিরোধী দলনেতা? এই প্রশ্ন তুলতেই শুভেন্দুর নেতৃত্বে বিজেপি বিধায়করা মুখ্যমন্ত্রীর ভাষণের মাঝে কালো কাপড় দেখিয়ে তুমুল বিক্ষোভ দেখান। যা কার্যত নজিরবিহীন।
এদিন বিধানসভায় পঞ্চায়েত ভোটে (Panchayat Election) হিংসা, অশান্তির ইস্যুতে আলোচনা চলছিল। বিজেপি বিধায়করা দাবি করতে থাকেন, ভোট লুট হয়েছে। নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হয়নি। তার জবাবে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, পঞ্চায়েত ভোটে ৭ জায়গায় অশান্তি হয়েছে। কিন্তু অনেক জায়গায় নাম ছড়ানো হচ্ছে। ভোট যদি লুট হয়, তাহলে বিজেপির অন্যান্যরা কীভাবে জিতলেন? রাজ্যকে বদনাম করার চেষ্টা চলেছে এইভাবে। এরপরই তিনি শুভেন্দুর উদ্দেশে প্রশ্ন করেন, ”নন্দীগ্রামের ঘটনা ভুলে গেলেন?” তাতেই ক্ষিপ্ত হন শুভেন্দু। মুখ্যমন্ত্রীর ভাষণের মাঝে কালো পতাকা দেখানো হয়।
এরপর বিধানসভার বাইরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ”তৃণমূল গণতন্ত্র মানে না। অবাধে ভোট লুট করে জিতেছে। এই ভোট লুটের বদলা নেবে মানুষ। আমি তৃণমূলকে আজ বলেছি, ২০১৮ সালের ভোটে এমন চাপ দিয়েছিল বলে উনিশে এত জায়গায় হার হয়েছে তৃণমূলের। আর বিজেপি উঠে এসেছে। বিধানসভার প্রতি দায়বদ্ধতা নেই শাসকদলের। বিরোধীরা আলোচনা চায়, শাসকদল এড়িয়ে যায়। তবু আজ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি নিয়ে মনোজ টিগ্গার নেতৃত্বে আমরা মুলতুবি প্রস্তাব আনি। অধ্যক্ষকে ধন্যবাদ, তিনি আমাদের প্রস্তাব গ্রহণ করে আলোচনার কথা বলেছেন।” এনিয়ে তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষের পালটা প্রতিক্রিয়া, ”জেলা পরিষদে নন্দীগ্রামে ১০ হাজারের বেশি ভোটে শুভেন্দু হেরেছেন, সারা রাজ্য জানে তা। সেই মানসিক অবসাদ, হতাশা মেটাতে বারবার বিধানসভার অধিবেশনকে ডিসটার্ব করছেন।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.