রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: একুশের ভোটে বিপর্যয়ের পর দলে আভ্যন্তরীণ কোন্দল চরমে। শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে সোশ্যাল মিডিয়া থেকে প্রকাশ্যে সরব একাংশ। এই পরিস্থিতিতে দলের বিদ্রোহী ও বেসুরোদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)। দল বিরোধী কাজ বরদাস্ত করা হবে না বলে কড়া বার্তা দিয়েছেন রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারও।
শনিবার ন্যাশনাল লাইব্রেরি হলে দলের দক্ষিণ কলকাতা জেলা কমিটির তরফে সুকান্তবাবু ও দিলীপবাবুর সংবর্ধনা সভার আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানেই বক্তব্য রাখতে গিয়ে এই দুই শীর্ষ নেতাই কর্মী-সমর্থকদের উদ্দেশে দলের কঠোর অনুশাসনের বার্তা দিয়েছেন। দিলীপ ঘোষ স্পষ্ট জানিয়ে দেন, “বিজেপি ব্যক্তি নয়, নীতি নির্ভর দল। গঙ্গা প্রবাহমান। ময়লা জলে ভেসে চলে যাবে। যারা নিজের দলের নেতাদের বিরুদ্ধে কথা বলছেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখছেন। ভোটে পরাজয়ের পর তাদের যদি এত ভয় থাকে। অন্য পার্টির নেতাদের বিরুদ্ধে বলতে ভয় পান। তাহলে বিজেপি করতে হবে না। বিজেপি (BJP) ছেড়ে দিন। না হলে যত বড় নেতাই হোন না কেন, দল তাদের তাড়িয়ে দেবে।”
সুকান্তবাবুর কথায়, দলবিরোধী আচরণ কোনওভাবেই বরদাস্ত করা হবে না। সামনেই কলকাতা পুরসভার নির্বাচন। সেই নির্বাচনে দলের নেতা-কর্মীদের ঝাঁপিয়ে পড়ার কথা বলেন দিলীপ ঘোষ-সুকান্ত মজুমদাররা (Sukanta Majumder)। দিলীপ ঘোষের (Dilip Ghosh) কথায়, কর্পোরেশন না জিতলে, বিধায়ক-সাংসদ জেতা যায় না। বুথস্তরে সংগঠন মজবুত না থাকলে পুরসভা-পঞ্চায়েত ভোটে জেতা মুশকিল। ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনে বাংলা থেকে কমপক্ষে ২৫টি আসন দখলের ডাক দেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি। তিনি বলেন, পুরসভায় না জিতলে লোকসভা জেতা যায় না। এমপি-এমএলএ ধরে রাখা যায় না। সুকান্তবাবু স্লোগান তোলেন, ‘‘অব কি বার ২৫ পার”। কলকাতা পুরসভার ভোটে দিলীপ ঘোষ, রাহুল সিনহাদের বেশি করে সময় দেওয়ার কথা বলেন সুকান্ত মজুমদার। বিজেপি পার্টি বাংলায় এত বড় হয়েছে সেজন্য দিলীপ ঘোষকে কৃতিত্ব দেন বর্তমান রাজ্য সভাপতি।
সুকান্তবাবুর কথায়, দিলীপ ঘোষের হাত ধরেই ২ কোটির বেশি ভোট পেয়েছে বিজেপি। এদিকে, বিজেপির দক্ষিণ কলকাতা জেলা সভাপতির বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে ফ্লেক্স পড়ল ন্যাশনাল লাইব্রেরির দেওয়ালে। শনিবার ন্যাশনাল লাইব্রেরিতে দলীয় কর্মসূচি ছিল জেলা বিজেপির। তার আগে দলের জেলা সভাপতি শংকর শিকদারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ও অপসারনের দাবিতে এই একাধিক ফ্লেক্স দেখা যায় ন্যাশনাল লাইব্রেরির দেওয়ালে। যা নিয়ে শুরু হয়েছে বিতর্কও। বিড়ম্বনায় পড়েছে গেরুয়া শিবির। এর ফলে দলের আভ্যন্তরীণ কোন্দল প্রকাশ্যে চলে এল বলেই দাবি গেরুয়া শিবিরের একাংশের। অভিযোগ, দলেরই একাংশ ক্ষুব্ধ হয়েই জেলা সভাপতির বিরুদ্ধে এই পোস্টার লাগিয়েছে। দলের রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের বক্তব্য, যারা এই কাজ করেছে তাদের পিছনে তৃণমূলের (TMC) ইন্ধন রয়েছে। বিজেপি কর্মীরা এসব করবে না বলেই মনে করি। তবে দলের যদি কেউ করে থাকে তাদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দক্ষিণ কলকাতা জেলা বিজেপির সভাপতি শঙ্কর শিকদারের অবশ্য বক্তব্য, সাংগঠনিক বৈঠক যাতে সফল না হয় সেজন্য কিছু লোক চক্রান্ত করে এই পোস্টার লাগিয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.