রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: ‘কালী’ তথ্যচিত্রের পোস্টার ঘিরে দেশজুড়ে তৈরি হয়েছে বিতর্ক। সে বিতর্কে ইতিমধ্য়েই লেগেছে রাজনীতির রংও। এমন পরিস্থিতিতে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বঙ্গ সফরে এসে মা কালীর ছবি উপহার পেলেন এনডিএ’র রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী দ্রৌপদী মুর্মু।
পাখির চোখ রাষ্ট্রপতি নির্বাচন। তার আগে বাংলার সমর্থন পেতে এ রাজ্যে এসেছেন ঝাড়খণ্ডের প্রাক্তন রাজ্যপাল দ্রৌপদী মুর্মু। মঙ্গলবার কলকাতায় তাঁর সমর্থনে বৈঠকে হাজির ছিলেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী-সহ অন্যান্যরা। সাংসদ-বিধায়কদের সেই বৈঠকেই দ্রৌপদীর হাতে মা কালীর ছবি তুলে দেন সুকান্ত মজুমদার। বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষের দাবি, “মা কালীকে অপমান করা হয়েছিল। কিন্তু বাংলার মানুষ কালী ভক্ত। সেই কারণেই দ্রৌপদী মুর্মুকে (Draupadi Murmu) মা কালীর ছবি উপহার দেওয়া হয়েছে।”
উল্লেখ্য, পরিচালক লীনা মণিমেকালাইয়ের তথ্যচিত্র ‘কালী’র পোস্টার (Kaali Poster Controversy) ঘিরে দেশজুড়ে বিতর্কের ঝড় ওঠে। যার জেরে খুন ও ধর্ষণের হুমকিও পান পরিচালক। এমন পরিস্থিতিতে তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রর (Mahua Moitra) একটি মন্তব্যে সেই বিতর্কের আগুনে যেন ঘি পড়ে। তিনি বলেছিলেন, “আমার কাছে কালী এমন এক দেবী যিনি মদ ও মাংস খান। আপনার স্বাধীনতা রয়েছে নিজের মতো করে আপনার ঈশ্বরীকে কল্পনা করার। কয়েকটি স্থানে তো দেবতাদের উদ্দেশে হুইস্কি উৎসর্গ করা হয়। আবার কোথাও কোথাও তা নিন্দনীয়।” তৃণমূল সাংসদের এহেন মন্তব্য ধর্মীয় ভাবাবেগ আঘাত করেছে, এই অভিযোগ তুলেই সরব হয় বিজেপি। তাঁর বিরুদ্ধে এ রাজ্যেও দায়ের হয়েছে একাধিক FIR। ওঠে গ্রেপ্তারির দাবিও। সেই প্রেক্ষিতেই এদিন দ্রৌপদী মুর্মুকে মা কালীর ছবি উপহার দিয়ে যেন তৃণমূলকে বিশেষ বার্তা দিল গেরুয়া শিবির। দিলীপ ঘোষের মন্তব্যে অন্তত সে কথাই স্পষ্ট।
যদিও তৃণমূল আগেই জানিয়েছিল মহুয়ার মন্তব্য তাঁর সম্পূর্ণ ‘ব্যক্তিগত’ মতামত। দল কোনওভাবেই এই মন্তব্যকে সমর্থন করে না। এদিনও রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থীকে মা কালীর ছবি উপহার দেওয়া প্রসঙ্গে বঙ্গ বিজেপিকে পালটা দিয়ে তৃণমূল রাজ্য সম্পাদক কুণাল ঘোষ সাফ বলে দেন, তৃণমূল কখনওই মা কালীর অপমান করেনি। তৃণমূল কারও ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত করাকেও সমর্থন করে না।
এদিকে, এদিন মা কালীর ছবি হাতে রাজভবন অভিযান করেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। যা নিয়ে তীব্র আক্রমণ করেছে তৃণমূল। তাদের দাবি, রাজভবনকে বিজেপির অভিযোগ মঞ্চে পরিণত করেছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। এমনকী এর মাধ্যমে তিনি বাংলায় ধর্মীয় রাজনীতিতে মদত দিচ্ছেন বলেও অভিযোগ করা হয়।
এদিনই আবার হাওড়ায় কালী মন্দিরে পুজো দেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি। পাশাপাশি দ্রৌপদী মুর্মুর সমর্থনে তিনি বলেন, তাঁর আশা, বাংলার মানুষ পিছিয়ে পড়া সম্প্রদায় থেকে আসা দ্রৌপদীকে সমর্থন করবেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.