রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায় এবং অরিজিৎ গুপ্ত: কে কাকে টেক্কা দেবে? কে কাড়বে নজর? নবান্ন অভিযান ঘিরে বঙ্গ বিজেপির (BJP) অন্দরেই ছিল এক অদৃশ্য প্রতিযোগিতা। শুভেন্দু অধিকারী-দিলীপ ঘোষ নাকি সুকান্ত মজুমদার, কে টেক্কা দেবেন কাকে? মঙ্গলবার সকাল থেকেই সেই লড়াই ছিল দেখা গেল।
বঙ্গ বিজেপির নবান্ন অভিযানের মূল আকর্ষণ ছিলেন তিন নেতা, শুভেন্দু অধিকারী, দিলীপ ঘোষ এবং সুকান্ত মজুমদার। কিন্তু মাঠে নামতে না নামতেই ক্লিন ‘বোল্ড’ হন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এদিনের নবান্ন অভিযানে সাঁতরাগাছি থেকে মিছিলের নেতৃত্বে থাকার কথা ছিল শুভেন্দুর। এদিন সকালে পিটিএস থেকে সাঁতরাগাছির দিকে যাচ্ছিলেন তিনি, সঙ্গে ছিলেন লকেট চট্টোপাধ্যায়। কিন্তু এই চত্বরে পুলিশ আটকায় তাঁদের। সেখানে ছিল পুলিশের ব্যারিকেড। পুলিশ আধিকারিকদের সঙ্গে বচসা শুরু হয় শুভেন্দুর। ‘আমাকে গ্রেপ্তার করুন’ বলে শুভেন্দু কার্যত পুলিশের দিকে তেড়ে যান। এরপর মহিলা পুলিশ কর্মীরা তাঁকে আটকাতে এলে বলেন, ‘ডোন্ট টাচ মাই বডি।’ এরপর প্রতিরোধ তো দূরে থাক, হেঁটে প্রিজন ভ্যানে উঠে যান। এরপর গোটা দিন লালবাজারের অন্দরেই ছিলেন তিনি।
কলেজ স্কোয়ারের মিছিলের নেতৃত্বে ছিলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ। কলেজ স্কোয়ার থেকে বিনা বাধায় মিছিল পৌঁছে যায় হাওড়া ব্রিজে। কিন্তু সেখানেই শেষ। মিছিল আটকে দেয় পুলিশ। বাধা সরিয়ে নবান্নের দিকে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন দিলীপ ঘোষ এবং বিজেপি নেতা-কর্মীরা। তখন জলকামান দিয়ে মিছিল ছত্রভঙ্গ করে দেয় পুলিশ। দুপুর ২টো ৪০ মিনিট নাগাদ দিলীপ ঘোষ ঘোষণা করে দেন, নবান্ন অভিযান শেষ। কিন্তু অভিযান শেষ তখনও হয়নি। বরং নতুন উদ্যমে কোমর বাঁধছিলেন বিজেপি কর্মীরা।
দিলীপ ঘোষ যখন বলছেন মিছিল শেষ, তখনও মাঠে লড়াই করে যাচ্ছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। রণক্ষেত্র হাওড়া ময়দানের মিছিলের পুরোভাগে ছিলেন সুকান্ত। বঙ্গবাসী মোড়ে সেই মিছিল আটকে দেয় পুলিশ। সেখানে প্রায় ৪৫ মিনিট বসে বিক্ষোভ দেখান সুকান্ত-অগ্নিমিত্রারা। পুলিশের সঙ্গে বচসায় জড়ান তাঁরা। এমনকী, সুকান্তর মিছিল থেকে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। বিজেপির দাবি, পুলিশ বোমা ছুঁড়েছে। সেই বিস্ফোরণের কথা অবশ্য অস্বীকার করেছে পুলিশ। পরে অবশ্য হাওড়া ময়দান থেকে সুকান্ত-অগ্নিমিত্রাকে আটক করা হয়।
নবান্ন অভিযানে একে অপরকে টেক্কা দেওয়ার চেষ্টা করেও শেষপর্যন্ত নজর কাড়তে ব্যর্থ শুভেন্দু-দিলীপ-সুকান্তরা। বরং শেষবেলায় ম্যাচের রাশ হাতে নেয় বিজেপির সাধারণ কর্মী-সমর্থকরা। ওপেনাররা ব্যর্থ হলেও টেল এন্ডাররা টানল ম্যাচ। সাঁতরাগাছি চত্বরের দখল নিলেন তাঁরা। নবান্ন পৌঁছতে না পারলেও সাঁতরাগাছি-হাওড়া ময়দান-এমজি রোড চত্বর দাপিয়ে বেড়াল গেরুয়া বাহিনী। তাঁদের সামলাতে অতিরিক্ত পুলিশ আনতে বাধ্য হয় কলকাতা পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.