রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: চালু হওয়ার দিন তিনেকের মধ্যে একাধিকবার হামলা বন্দে ভারত এক্সপ্রেসে। যা নিয়ে শুরু হয়ে গিয়েছে রাজনৈতিক তরজা। বিজেপির দাবি, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্দেশে ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগানের ‘বদলা’ নিতেই এহেন কাণ্ড করছে তৃণমূল। পালটা চক্রান্তের দাবি তুলেছে রাজ্যের শাসক দলও। এবার দলীয় মুখপত্রেও উঠে এল এই বন্দে ভারত ইস্যু।
তৃণমূলের মুখপত্র জাগো বাংলায় প্রশ্ন তোলা হয়েছে, “বাংলাজুড়ে প্রতিদিন কয়েক হাজার ট্রেন চলাচল করছে। কোথাও একটি ইটও পড়ে না। তাহলে বন্দে ভারতে হচ্ছে কী করে? এই অভিযোগটা কি ফেলে দেওয়া যায় যে বিজেপি (BJP) বাংলাকে কলুষিত করার জন্য সেমসাইড গেম খেলছে।” এরপরই উঠে আসে রাজ্যে কেন্দ্রীয় সংস্থার ‘সক্রিয়তা’র প্রসঙ্গ। লেখা হয়েছে, “যদি ঘটনা তৈরি করে বাংলার সরকারকে অভিযোগের আসনে বসানো যায়, তাহলে বন্ধুস্থানীয় একটি-দুটি এজেন্সিকে বাংলায় পাঠিয়ে দেওয়া যায়।”
এখানেই শেষ নয়। বন্দে ভারতের (Vande Bharat Express) চাহিদা বৃদ্ধির উদ্দেশ্যেই কি শতাব্দী এক্সপ্রেস-সহ বেশ কিছু ট্রেন সাময়িক ভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে, তৃণমূলের মুখপত্রে সে প্রশ্নও তোলা হয়েছে। যদিও এর পালটা দিয়ে দিলীপ ঘোষ দাবি করেছেন, বারবার বন্দে ভারতের উপর যে পাথরবৃষ্টির ঘটনা ঘটছে, তার বিরুদ্ধে রাজ্যেরই কড়া পদক্ষেপ করা উচিত।
এরপরই এ বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রীর নীরবতা নিয়ে সুর চড়ান বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)। তিনি বলেন, “বন্দে ভারত নিয়ে নীরব মুখ্যমন্ত্রী। তাই অনেকেই সন্দেহ করছেন, জয় শ্রীরামের বদলায় পাথর ছুঁড়ে করা হচ্ছে না তো? কাশ্মীরে দেশপ্রেমীদের পাথর ছুঁড়ে মারা হত। এখানে রাষ্ট্রবাদীতার প্রতীক বন্দে ভারতে পাথর মারা হচ্ছে। আমরা দেখেছি, স্টেশনে স্টেশনে কী বিপুল উন্মাদনা। ট্রেনকে স্বাগত জানানোর জন্য মানুষের সীমাহীন উৎসাহ। মানুষ এই ট্রেনকে আন্তরিকভাবে নিয়েছেন। এতে মুখ্যমন্ত্রী বোধহয় খুব কষ্ট পেয়েছেন। তিনি পশ্চিমবঙ্গকে পিছন দিকে নিয়ে যাচ্ছেন, জনতাকেও এগোতে দিচ্ছেন না। যারা এগোতে চাইছে, তাদের পাথর মারা হচ্ছে।”
বন্দে ভারতে হামলা নিয়ে রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের দাবি, বাংলাকে ভাগ করার চেষ্টা করছে বিজেপি। যে সব এলাকায় বিজেপির বিধায়ক, সাংসদরা রয়েছেন, সেখানেই ওই এক্সপ্রেসের উপর পাথরবৃষ্টি হয়েছে। পাশাপাশি তিনি এও বলেন, রেল পুলিশ বিষয়টা খতিয়ে দেখছে ঠিকই, রাজ্য পুলিশেরও পদক্ষেপ করে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া উচিত। এর পালটা দিয়ে আবার বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলে দেন, সাংসদ, বিধায়করা যে দলেরই হোক না কেন, পুলিশ-প্রশাসন তৃণমূলেরই। পুলিশ নিজের কাজ করছে না বলেও অভিযোগ করেন তিনি। এদিকে পাথরবৃষ্টির ঘটনায় কার্যত উলটো সুর কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুভাষ সরকারের গলায়। তিনি এই ঘটনায় সিআইডি তদন্তের দাবি করেছেন।
উল্লেখ্য, মালদহের পর নিউ জলপাইগুড়িতেও বন্দে ভারতকে লক্ষ্য় করে পাথর ছোঁয়া হয়। অভিযোগ, মঙ্গলবার এনজেপিগামী বন্দে ভারত এক্সপ্রেসে এনজেপি স্টেশনে ঢোকার আগে তাকে লক্ষ্য করে পাথরবৃষ্টি হয়। সেমি হাই স্পিড ট্রেনটির C3 এবং C6 কামরা ক্ষতিগ্রস্ত হয় বলে অভিযোগ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.