Advertisement
Advertisement

Breaking News

Suvendu Adhikari

স্পিকারের ভূয়সী প্রশংসা, শুভেন্দুর অনাস্থা প্রস্তাবে জল ঢাললেন বিজেপি বিধায়করাই!

এদিকে, কেন্দ্রের কাছে পাঠানো সর্বদলীয় প্রতিনিধিদল থেকেও নিজেদের সরিয়ে নিল বিজেপি।

BJP MLAs praise West Bengal assembly speaker, blow to Suvendu Adhikari | Sangbad Pratidin
Published by: Subhajit Mandal
  • Posted:November 30, 2022 7:29 pm
  • Updated:November 30, 2022 7:29 pm  

কৃষ্ণকুমার দাস: বিধানসভার অধ‌্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikari) অনাস্থা প্রস্তাব আনার প্রচেষ্টার শুরুতেই জল ঢেলে দিল বিজেপি পরিষদীয় দলের একাংশ। বিধানসভার অধিবেশন কক্ষে দাঁড়িয়েই বুধবার অধ‌্যক্ষের সভা পরিচলানায় বিরোধী দলকে গুরুত্ব দেওয়ার তথ‌্য উল্লেখ করে ভূয়সী প্রশংসা করলেন স্বয়ং বিজেপি পরিষদীয় দলের মুখ‌্য সচেতক মনোজ টিগ্গা (Manoj Tigga)। শুধু তাই নয়, বিরোধী দলকে বেশি গুরুত্ব দিয়ে অধ‌্যক্ষ পরিষদীয় রীতিনীতি এবং সংবিধানের গরিমাকে বৃদ্ধি করেছেন বলেও মন্তব‌্য করেছেন টিগ্গা।

যদিও দু’দিন আগেই বিধানসভার বাজেট অধিবেশনে অধ‌্যক্ষের বিরুদ্ধে বিজেপিরই তরফে অনাস্থা প্রস্তাব আনা হবে বলে বিরোধী দলনেতা জানিয়েছিলেন। তাঁর অভিযোগ ছিল, অধিবেশনে বিরোধীদের মুলতবি প্রস্তাব থেকে শুরু করে নানা ইসুতে বলার সুযোগ দিচ্ছেন না অধ‌্যক্ষ। কিন্তু এদিন বিধানসভার শীতকালীন অধিবেশনের (Winter Session) শেষ দিনে ধন‌্যবাদজ্ঞাপক পর্বে বক্তব‌্য রাখতে গিয়ে অধ‌্যক্ষকে কৃতজ্ঞতা জানান বিজেপির মুখ‌্য সচেতক। তিনি বলেন, ‘‘এবার অধিবেশন পরিচালনায় পরিষদীয় রীতিনীতি মেনে যেভাবে আপনি (অধ‌্যক্ষ) সভা পরিচালনা করেছেন, তা প্রশংসনীয়। অত‌্যন্ত মনোযোগ সহকারে এবং দক্ষতার সঙ্গে শাসক ও বিরোধী দল সবাইকে সমান গুরুত্ব দিয়ে সভা পরিচালনা করেছেন।’’

Advertisement

[আরও পড়ুন: ইছামতীতে লঞ্চ চালালেন মমতা, লাঞ্চে রেশনের চাল আর ওল-ট্যাংরার ঝোল]

এর পরই পরিষদীয় গণতন্ত্রের নীতি মেনে বিরোধী দলকে যে, বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় (Biman Banerjee) বাড়তি গুরুত্ব দিয়েছেন, তা তথ‌্য দিয়ে সভায় উল্লেখ করেন মনোজ টিগ্গা। তাঁর কথায়, ‘‘বিধানসভায় বিরোধীদের বলতে দেওয়ার যথেষ্ট সুযোগ করে দিয়েছেন আপনি। সাপ্লিমেন্টরি প্রশ্নের ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ বিরোধীদেরই গ্রহণ করে আমাদের ধন‌্য করেছেন।’’ প্রশ্নোত্তর পর্বেও যে বিরোধীদের বেশি সংখ‌্যক প্রশ্নের সুযোগ দেওয়া হয়েছে সে কথা পরে বাইরে এসেও স্বীকার করেন গেরুয়া শিবিরের মুখ‌্য সচেতক। তবে অধ‌্যক্ষ তাঁর আসনে বাঁ দিকে বসা বিরোধীদের বেশি গুরুত্ব দেন বলেও এদিন ঘুরিয়ে বিধানসভায় গণতন্ত্রের কথা বলতে গিয়ে তা উল্লেখ করেছেন পরিষদীয়মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ‌্যায়।

বিষয়টি নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে তৃণমূল মুখপাত্র তথা দলের রাজ‌্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh) বিরোধী দলনেতাকে তীব্র কটাক্ষ করে বলেছেন, ‘‘অধ‌্যক্ষের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনতে গিয়ে নিজের পরিষদীয় দলের কাছেই অনাস্থার মুখে পড়লেন বিরোধী দলনেতা। ওঁর দলের অধিকাংশ বিধায়কই যে, ওঁকে মানছেন না, তা অধিবেশনে তাঁদের পরিষদীয় কাজকর্মেই স্পষ্ট। ফ্লোর কো-অর্ডিনেশন নেই বিজেপি বিধায়কদের মধ্যেই।’’ গেরুয়া শিবিরের আদি বিজেপি বিধায়করা বিরোধী দলনেতার নানা সিদ্ধান্ত ও কাজকর্ম যে মানছেন না, তা এবারের অধিবেশনে আরও স্পষ্ট হয়ে গেল বলে তৃণমূল মুখপাত্র দাবি করেছেন।

[আরও পড়ুন: ‘২৪ ঘণ্টার মধ্যে ভুয়ো শিক্ষকদের তালিকা প্রকাশ করুন’, SSC-কে নির্দেশ বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের]

মঙ্গলবার বিধানসভায় কেন্দ্রের কাছে গঙ্গাভাঙনের জন‌্য সহযোগিতা চেয়ে দিল্লিতে শাসক-বিরোধী যৌথ কমিটি পাঠানোর প্রস্তাবকে সমর্থন করেছিল মনোজ টিগ্গার নেতৃত্বাধীন বিজেপি পরিষদীয় দল। সিদ্ধান্ত হয়, ১২ জনের কমিটির মধ্যে ৭ জন শাসক দলের, ৫ জন বিরোধী দলের প্রতিনিধি থাকবেন। সর্বসম্মতিক্রমে প্রস্তাব পাস হওয়ার ঘণ্টা দেড়েক বাদে বিরোধী দলনেতা সংবাদমাধ‌্যমকে জানিয়ে দেন, ‘‘একসঙ্গে যাওয়ার কোনও প্রশ্নই নেই।’’ সূত্রের খবর, এভাবে প্রস্তাবকে সমর্থনের পরেও সর্বদলীয় প্রতিনিধিদল থেকে সরে আসা নিয়ে বিরোধী দলনেতার সিদ্ধান্ত মানতে পারেননি অনেক আদি বিজেপি বিধায়কই। এবারের অধিবেশনজুড়ে বিরোধী দলের ওয়াকআউট, বিক্ষোভ করার মতো নানা ভূমিকা নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন অধ‌্যক্ষ। সর্বদলীয় প্রস্তাব প্রথমে সমর্থন করেও পরে সরে আসার ঘটনা নিয়ে বিজেপির উপর বিরক্ত অধ‌্যক্ষও। এদিন ধন‌্যবাদ পর্বে সভায় বক্তব‌্য রাখেন পরিষদীয়মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ‌্যায়, শাসক দলের মুখ‌্য সচেতক নির্মল ঘোষ এবং আইএসএফের বিধায়ক নওসাদ সিদ্দিকি। অধ‌্যক্ষ জানিয়েছেন, এবারের অধিবেশনে ৭২৫টি প্রশ্ন জমা পড়েছিল। তার মধ্যে বিরোধী দলের প্রশ্নের সংখ‌্যা ছিল ৪৯৬। প্রশ্নোত্তর পর্বে বিরোধীদের ১২৬টি প্রশ্নের জবাব দেওয়া হয়েছে, শাসক দলের প্রশ্ন ছিল ৬৮টি। অধিবেশন চলেছে মোট ২১ ঘণ্টা।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement