ফাইল ছবি।
রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: রথযাত্রা নিয়ে রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্ত মনের মতো না হলে আদালতে যাওয়ার রাস্তা খোলা রাখছে বিজেপি। শনিবার রাজ্য তাদের সিদ্ধান্ত জানাবে বিজেপি নেতৃত্বকে। রাজ্যের সিদ্ধান্ত জানার পর পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে তা দলের সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহর সঙ্গে কথা বলেই ঠিক করবে বঙ্গ বিজেপি। শাহর সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্স করবেন রাজ্য নেতারা। সেখানে চূড়ান্ত পদক্ষেপ ঠিক করবে বিজেপি। এদিকে, সূত্রের খবর, গঙ্গাসাগর মেলা, বড়দিন ও বর্ষবিদায়ের উৎসব বা সাধারণতন্ত্র দিবসের কথা মাথায় রেখে রথযাত্রার সময় সংক্ষিপ্ত করার প্রস্তাব দিতে পারে নবান্ন।
আদালতের নির্দেশ মতো রথযাত্রা নিয়ে বিজেপির প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৃহস্পতিবার লালবাজারে বৈঠক করেছিলেন প্রশাসনের তিন শীর্ষকর্তা। রথযাত্রা কর্মসূচি প্রসঙ্গে প্রশাসনের কাছে নিজেদের বক্তব্য জানিয়েছেন বিজেপি নেতৃত্ব। ৪১দিন ধরে যাত্রা চলবে, এই সূচি প্রশাসনের কাছে আগেই দেওয়া হয়েছে দলের তরফে। লালবাজারের বৈঠকে গিয়েও সেই সূচি ও রুট কোনও বদল সম্ভব নয় বলে বিজেপি নেতৃত্ব প্রশাসনের শীর্ষকর্তাদের জানিয়ে দিয়েছে। সূত্রের খবর, রথযাত্রা সংক্ষিপ্ত এবং রুট আরও কম করার শর্তেই প্রশাসন অনুমতি দিতে পারে। সেক্ষেত্রে কী করণীয় সেটা নিয়েও ভাবনাচিন্তা চলছে দলের অন্দরে। নেতৃত্বের একাংশের কথায়, রথযাত্রা সংক্ষিপ্ত করার কোনও প্রশ্নই ওঠে না। কারণ, ৪২টি লোকসভা কেন্দ্রে ৪২টি বড় সভা হবে। ৪২দিন ধরেই হবে কর্মসূচি। সেখানে বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় নেতা-মন্ত্রীরা আসবেন। একাধিক বিধানসভা এলাকাতেও ছোট-মাঝারি সভা হবে। এই সূচির কোনও পরিবর্তন সম্ভব নয়। দলের আর একটা অংশ অবশ্য মনে করছে, রথযাত্রা সংক্ষিপ্ত করার শর্ত সাপেক্ষে যদি রাজ্য অনুমতি দেয় তাতে রাজি হয়ে যাওয়াই ভাল। কারণ, সামনেই লোকসভা নির্বাচন রয়েছে। জানুয়ারির শেষ থেকে তার প্রস্তুতিতেও পুরোদমে নেমে পড়তে হবে।
বৃহস্পতিবার লালবাজারে অনুষ্ঠিত বৈঠকেই রাজ্যের তরফে বিজেপি নেতৃত্বের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল যে, এটা কোনও ধর্মীয় কর্মসূচি কী না। যেহেতু রথযাত্রা বলা হচ্ছে। তখন বিজেপির তরফে বলা হয়, কোনও ধর্মীয় কর্মসূচি হচ্ছে না। লোকমুখে রথযাত্রা বলে প্রচার করা হলেও কোনও রথ থাকছে না। কর্মসূচির নাম গণতন্ত্র বাঁচাও যাত্রা। ফলে রথযাত্রা নামে যে নবান্নের আপত্তি থাকতে পারে সেটা মনে করছেন বিজেপি নেতারাই। তাই তারা সরকারকে স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছেন কর্মসূচির নাম রথযাত্রা নয়। পাশাপাশি বৈঠকে প্রশাসনের তরফে রাজ্যের তরফে বিজেপি নেতাদের এটাও জানতে চাওয়া হয়েছিল যে, ডিসেম্বরের শেষে ও জানুয়ারির শুরুতে রাজ্যে কিছু সামাজিক অনুষ্ঠান থাকে। সেটা নিয়ে বিজেপি ওয়াকিবহাল কী না। যেটা জানা যাচ্ছে, ২৫ থেকে ৩১ ডিসেম্বর বাংলায় বড়দিন ও বর্ষবরনের উৎসব চলে। আবার জানুয়ারিতে গঙ্গাসাগর মেলা রয়েছে। কাজেই বর্ষবরন উৎসবের সময় এবং গঙ্গাসাগর মেলা চলাকালীন রথযাত্রা কর্মসূচিতে আপত্তি জানাতে পারে প্রশাসন।
শনিবার বিকেলের মধ্যেই বিজেপিকে রাজ্য সরকার তাদের সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেবে। কীধরনের শর্তসাপেক্ষে রাজ্য অনুমতি দেয় এবং তারপর বিজেপি নেতৃত্ব কী সিদ্ধান্ত নেয়, তারউপরই নির্ভর করছে রথযাত্রার ভবিষ্যত। একইসঙ্গে নরেন্দ্র মোদি এবং অমিত শাহর সভা হবে কী না সেটাও নির্ভর করবে রাজ্যের সিদ্ধান্তে বিজেপি রাজি হয় কী না তার উপর। দিলীপ ঘোষ এদিন জানিয়েছেন, সরকার কী বলে সেজন্য আমরা অপেক্ষা করে আছি। সরকারের উপরই নির্ভর করছে পরবর্তী কর্মসূচি। মোদি ও অমিত শাহর কোনও সূচি এখনও আসেনি। সেই সূচি এসেও লাভ নেই। রথযাত্রার অনুমতি না পেলে তাহলে আবার সব সভা বাতিল করতে হবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.