রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: পশ্চিমবঙ্গে বিজেপিকে হারানোই একমাত্র লক্ষ্য। গেরুয়া শিবিরকে হারাতে যাকে খুশি ভোট দিন। এমনটাই বলছে সিপিআই (এমএল) লিবারেশন। লক্ষণীয়, বাংলায় বামফ্রন্ট প্রার্থীদের লিবারেশন সমর্থন করবে বলে আশাপ্রকাশ করেছিলেন ফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু। এদিন সেই দাবি খারিজ করে দিলেন লিবারেশনের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক দীপঙ্কর ভট্টাচার্য। জানালেন, ‘ইন্ডিয়া’ জোটের অংশ হিসেবে জোট ধর্ম মেনে চলবে তারা।
পশ্চিমবঙ্গের ৪২টি আসনের মধ্যে মাত্র একটিতে লড়াই করছে লিবারেশন। মঙ্গলবার মৌলালির দপ্তরে সাংবাদিক সম্মেলন করে বর্ধমান পূর্ব কেন্দ্রের প্রার্থী হিসেবে সজল কুমার দে-র নাম ঘোষণা করেছে দলটি। এদিন, দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক দীপঙ্কর ভট্টাচার্য স্পষ্ট বলেন, “পশ্চিমবঙ্গে বিজেপিকে যারা হারাতে পারবে বা যে দলকে ভোট দিলে বিজেপি হারবে সেটা বাম, কংগ্রেস বা তৃণমূল যেই হবে যাকে মানুষ উপযুক্ত মনে করবে তাকে ভোট দেবে। এটা আমরা মানুষের সিদ্ধান্তের উপরই ছেড়ে দিলাম। এ রাজ্যে তৃণমূল যদি বিজেপিকে হারাতে পারে তাহলে তৃণমূলকেও স্বাগত।”
দলের এই অবস্থান প্রসঙ্গে দীপঙ্করের যুক্তি, “বাংলায় ইন্ডিয়া জোট ঐক্যবদ্ধ নয়। বাম ও কংগ্রেসের মতো তৃণমূলকেও আমরা ইন্ডিয়া জোটের শরিক হিসেবেই মনে করি। তাই আমরা কোনও নির্দিষ্ট দলের হয়ে প্রচার করব না। মানুষ কাকে ভোট দেবে সেটা মানুষ ঠিক করুক। এ রাজ্যে তৃণমূল বা যেই জিতুক কিন্তু বিজেপি যেন না যেতে।” মুখে না বললেও এই অবস্থান একুশের বিধানসভা ভোটের সময় ‘নো ভোট টু বিজেপি’ স্লোগানের সঙ্গেই মিল পাচ্ছেন অনেকে।
এদিন সাংবাদিক বৈঠকে দীপঙ্কর ভট্টাচার্য ছাড়াও ছিলেন কার্তিক পাল, পার্থ ঘোষ, অভিজিৎ মজুমদার, বাসুদেব বসু প্রমুখ নেতৃত্ব। প্রসঙ্গত, বাংলায় তৃণমূলের অন্ধ বিরোধিতা করে চলেছে সিপিএম ও কংগ্রেস। তৃণমূলের উপরই মূলত আক্রমণ শানাতে গিয়ে সর্বভারতীয় যে লক্ষ্য, বিজেপি হঠাও তা থেকেও এ রাজ্যের সিপিএম লক্ষ্যভ্রষ্ট হচ্ছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ। ফলে বিজেপিই শক্তিশালী হয়ে বামেদের সরিয়ে বাংলায় দ্বিতীয়স্থান দখল করে ফেলেছে একুশের বিধানসভা ভোটে। বাংলায় তৃণমূল ও বিজেপিকে এক অপরের পরিপূরক বলে আক্রমণ করছেন সিপিএম নেতারা। এ প্রসঙ্গে সিপিআই(এমএল) লিবারেশনের সাধারণ সম্পাদক দীপঙ্কর ভট্টাচার্যের মন্তব্য, ‘ইন্ডিয়া’ জোট জরুরি। বিহারে বিরোধীরা এক হয়েছে। সেখানে সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়ছে। কিন্তু বাংলায় তা হয়নি। কিন্তু সিপিএমের মতো বিজেপির সঙ্গে তৃণমূলকে একগোত্রে রাখা যায় না। তাহলে সেটা দ্বিচারিতা করা হবে। ‘ইন্ডিয়া’ জোটে লিবারেশন রয়েছে, সেই জোটে তৃণমূলও আছে। ফলে জোটে থেকে তৃণমূলকে বিজেপির সমগোত্রীয় বলা ঠিক নয়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.