সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দিন কয়েক আগেই দাবি করেছিলেন যে, “নিজের পেশা ছেড়ে দিয়ে সাধারণ মানুষের সেবা করব বলে বিজেপিতে যোগ দিয়েছি।” কিন্তু এ কী! গেরুয়া শিবিরের মহিলা মোর্চার সভানেত্রীর দায়িত্বপদ পেতে না পেতেই উলাট-পুরাণ! “সভানেত্রী অগ্নিমিত্রা পলই (Agnimitra Paul) কিনা দলের অন্দরে শাড়ির ব্যবসা খুলে বসেছেন!” এমন অভিযোগই উঠেছে সম্প্রতি।
রাজনীতির ময়দানে নামার আগে অগ্নিমিত্রা পল যে পেশায় আদতে খ্যাতনামা ফ্যাশন ডিজাইনার ছিলেন, সেকথা কারোরই অজানা নয়। তাঁর তৈরি পোশাকে সিনেজগৎ থেকে ক্রীড়া জগতের ব্যক্তিত্বরা রীতিমতো ব়্যাম্প মাতিয়ে এসেছেন। কিন্তু রাজনীতিতে পা দেওয়ার পরই নিজের পেশাকে দূরে সরিয়ে রেখে বঙ্গবিজেপির মহিলা মোর্চার দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিয়েছেন তিনি। যে পদে আগে আসীন ছিলেন গ্ল্যামার জগতের আরও দুই ব্যক্তিত্ব রূপা গঙ্গোপাধ্যায় এবং লকেট চট্টোপাধ্যায়। সেই গুরুদায়িত্বই এবার অগ্নিমিত্রার কাঁধে। সামনেই একুশের বিধানসভা নির্বাচন। অতঃপর প্রস্তুতি তুঙ্গে। কিন্তু তার মাঝেই শোরগোল বেঁধেছে অগ্নিমিত্রার শাড়ি বিক্রির বিজ্ঞাপন নিয়ে।
বিজেপি মহিলা মোর্চার সভানেত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি নাকি দলের অন্দরেই শাড়ি বিক্রির বিজ্ঞাপন দিচ্ছেন! তা এমন গুরুদায়িত্ব পেয়েই কেন ব্যাবসায়িক স্বার্থে পদের সুযোগ তোলা শুরু করেছেন? অগ্নিমিত্রা পলের উদ্দেশে অনেকেই এমন প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়েছেন। এই বিষয়ে জানাজানি হতেই গেরুয়া শিবিরের অন্দরে তুমুল বিতর্ক শুরু হয়েছে।
মহিলা মোর্চা সভানেত্রী অগ্নিমিত্রা পাল, ফ্যাশন ডিজাইনার হিসেবে যাঁর ভারতজুড়ে নাম, যাঁর ডিজাইন করা পোশাক পরেন প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে তারকারাও। সেই তিনিই কিনা শাড়ির বিজ্ঞাপন দিচ্ছেন দলের মধ্যে! অগ্নিমিত্রার বিরুদ্ধে অভিযোগ, দলের মহিলা মোর্চার বিভিন্ন হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে তিনি বলে পাঠাচ্ছেন যে, তাঁর তৈরি শাড়িই কিনতে হবে। সেই শাড়ির অবশ্য বিশেষত্ব রয়েছে। সুতির সাদা শাড়ির পুরো জমিনে পদ্মফুল আঁকা। দলের প্রতিনিধিত্ব করতেই যে অগ্নিমিত্রার এই বিশেষ ডিজাইন, তা বোধহয় আর আলাদা করে বলার অপেক্ষা রাখে না।
তবে দলের অন্দরে ব্যবসায়িক স্বার্থে বিজ্ঞাপন নিয়েই যে শুধু বিতর্ক, এমনটা নয়। এখানে অভিযোগ আরও গুরুতর! কীরকম? সূত্রের খবর, এই বিশেষ শাড়ির দাম নাকি একেক জায়গায় একেকরকম নেওয়া হচ্ছে। উত্তরবঙ্গের জন্য দাম ৩৫০টাকা। এবং কলকাতা ও পার্শ্ববর্তী জেলার জন্য দাম ২৮০ টাকা। এই নিয়েই মূলত বিতর্কের সূত্রপাত। দলের মধ্য এইভাবে ব্যবসা করছেন সভানেত্রী! ভ্রু উঁচিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। কেউ বা আবার শুনেই হতবাক!
পদ্মফুল আঁকা এই শাড়ি যে রাজ্য অফিস থেকেও পাওয়া যাবে, সেই কথাও নাকি জানিয়েছেন সভানেত্রী। অথচ রাজ্য নেতৃত্বের দাবি, তাঁরা এব্যাপারে কিছুই জানেন না। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠেছে, কার অনুমতি নিয়ে দলের অন্দরে এই শাড়ির ব্যবসা শুরু করছেন তিনি?
যেহেতু সভানেত্রী, উপরন্তু মহিলা মোর্চার নতুন কমিটি তৈরি হয়নি, তাই অনেকেই নাকি ভয়ে প্রতিবাদ করতে পারছেন না! তবে ইতিমধ্যেই তাঁর শাড়ির বিজ্ঞাপনের যাবতীয় তথ্য যে দিল্লিতে দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের পাঠানো হয়েছে, তা জানা গিয়েছে সূত্রের খবরে। বিজেপির অন্দরে শোরগোল বাঁধলেও এই প্রসঙ্গে এখনও কোনওরকম কথা বলেননি অগ্নিমিত্রা পাল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.