রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: শুধু তৃণমূলকে (TMC) একতরফা আক্রমণ করতে গিয়ে বামেদের জমি ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। সিপিএমের সভা-সমাবেশ বা মিছিলে এত লোক হচ্ছেই বা কেন? চিন্তিত বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। তাই বঙ্গ বিজেপিকে দিল্লির নির্দেশ, বাম জমানার দুর্নীতি, বিভিন্ন ক্ষেত্রে কীভাবে গণতন্ত্রের উপর আঘাত নামিয়ে আনা হয়েছিল সেটা নিয়েও জোর প্রচার চালাতে হবে। বাম জমানার অব্যবস্থার কথাও নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরবেন বিজেপি নেতারা। শুধু বড় সমাবেশই নয়, ছোট ছোট সভা করে জুন মাসের শুরু থেকেই দলীয় কর্মীদের এ ব্যাপারে প্রচারে শামিল করতে হবে।
রামে আসা ভোট কেন আবার বামে ফিরছে? কতটা ভোটই বা বেড়েছে বামেদের? গত ১৬ ডিসেম্বর রাতে বিজেপির রাজ্য দফরে দলীয় বৈঠকে অমিত শাহর এই প্রশ্ন শুনে কার্যত অস্বস্তিতে পড়তে হয়েছিল রাজ্য বিজেপির শীর্ষনেতাদের। একুশের ভোটে বিজেপি প্রধান বিরোধী দল হিসাবে উঠে এলেও তার পর থেকে বাংলায় আন্দোলনের তেজ বাড়িয়েছে বামেরা। কয়েকটি নির্বাচনে দেখা গিয়েছে পদ্মে চলে যাওয়া বামেদের ভোট আবার ফিরছে। বিজেপি সেখানে পিছিয়ে যাচ্ছে। এই খবর অমিত শাহ থেকে জে পি নাড্ডাদের কাছেও রয়েছে।
রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, বামেরা যেখানে বাড়ির উঠোনে, গ্রামের আলপথ বেয়ে জাঠা করছে সেখানে অনেকক্ষেত্রেই নিচুতলায় পৌঁছতে পারছে না গেরুয়া শিবির। দিলীপ ঘোষ, সুকান্ত মজুমদাররা জেলায় জেলায় সংগঠন মজবুত করার জন্য ঘুরছেন। চেষ্টা চালাচ্ছেন। কিন্তু নিচুতলায় পুরনো বহু নেতাই বসে গিয়েছে। আর দায়িত্বে যাঁরা আছেন তাঁদের অভিজ্ঞতা কম। গেরুয়া শিবির সূত্রেই খবর, ৫০ শতাংশ বুথে কমিটি হয়নি। একটা গা ছাড়া ভাব রয়েছে। নিচুতলার সঙ্গে উপরতলার যোগাযোগ নেই। সংগঠন নিয়ে কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষকদের দেওয়া রিপোর্টের সঙ্গে অনেক সময় মিলছে না রাজ্য শাখার রিপোর্ট। রিপোর্টে জল মেশানো থাকছে কি না তা নিয়ে অনেক দলীয় বৈঠকে প্রশ্ন করতে দেখা গিয়েছে কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষকদের।
দলের একাংশ বলছে, সিপিএমকে আক্রমণ করা বিজেপি প্রায় ছেড়েই দিয়েছিল। শুধু তৃণমূলকে আক্রমণ আর কেন্দ্রীয় সরকারের প্রচারে ব্যস্ত হয়ে পড়েছিল তারা। কিন্তু এখন থেকে তৃণমূলের পাশাপাশি সমানভাবে বামেদের বিরুদ্ধেও আক্রমণ শানাতে হবে। এমনই স্পষ্ট বার্তা দিয়ে দিয়েছে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। রাজ্য নেতৃত্বের বড় অংশের মনেও প্রশ্ন উঠছে যে, প্রধান বিরোধী দল হিসেবে বিজেপির জমি কি আলগা হয়ে যাচ্ছে? শীর্ষ নেতাদের বক্তব্য, বিজেপিই যে বিকল্প সেটা বোঝাতে হবে। শুধু বিধানসভায় সংখ্যা থাকলেই বিরোধী হওয়া যায় না। রাস্তায় আন্দোলনে বিরোধী হতে হয়। বিজেপির বিক্ষুব্ধ অংশেরও এই অভিযোগ রয়েছে যে, মাঠেঘাটে আন্দোলন ছেড়ে রাজ্য বিজেপি খালি কোর্টে যাচ্ছে। বিজেপির এক রাজ্য নেতার অবশ্য দাবি, বিজেপিকে দুর্বল করতে তৃণমূলই জায়গা করে দিচ্ছে বামেদের। তাই বাম জমানার অব্যবস্থা নিয়ে প্রচার করতে হচ্ছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.