রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: ভোট (Assembly Election 2021) বিপর্যয় ও দলের অভ্যন্তরে কোন্দল আর বিক্ষোভের বিষয় তো রয়েছেই। এবার বঙ্গভঙ্গ ইস্যু নিয়েও ঝড় উঠতে পারে রাজ্য বিজেপির কার্যকারিণী বৈঠকে। দলের দুই সাংসদের বাংলা ভাগের দাবির সমালোচনা করে ইতিমধ্যেই বঙ্গ বিজেপির অন্দরে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি উঠেছে। এবার আসন্ন রাজ্য কার্যকারিণী বৈঠকে নেতৃত্বের একটা বড় অংশের ক্ষোভের মুখে পড়তে হতে পারে আলিপুরদুয়ারের সাংসদ জন বার্লা ও বিষ্ণুপুরের সাংসদ সৌমিত্র খাঁকে। বাংলা ভাগের দাবি তোলাটা যে দলের বিরুদ্ধে যাচ্ছে এবং প্রতিপক্ষদের হাতে অস্ত্র তুলে দেওয়া হয়েছে, এমনটাই মনে করছে রাজ্য বিজেপির বড় অংশ। কাজেই ২৯ জুনের বৈঠকে দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডার সামনেই এই দুই সাংসদের মন্তব্য নিয়ে ক্ষোভ উগরে দিতে পারেন একাধিক নেতা। এমনটাই দলের অন্দরের খবর।
পশ্চিমবঙ্গ ভাগ করে আলাদা রাজ্যের দাবি করেছেন বিজেপির (BJP) দুই সাংসদ। প্রথমে জন বার্লা দাবি করেছিলেন উত্তরবঙ্গ ভাগ করে আলাদা রাজ্য বা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হোক। এরপর সাংসদ সৌমিত্র খাঁ দাবি করেন জঙ্গলমহল ভাগের। এর পরই এটা নিয়ে রাজনৈতিক জলঘোলা শুরু হয়। বিজেপির কড়া সমালোচনা করে তৃণমূল, বাম ও কংগ্রেস। রাজ্যবাসীও এই বঙ্গ ভাগের বিষয়টি ভালভাবে নিচ্ছে না বলে মনে করছেন বিজেপি নেতারা। এরই মধ্যে আবার এটা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়া জুড়েও উঠেছে ‘ট্রোল’-এর ঝড়। বিজেপি সাংসদদের এই দাবি হাস্যাস্পদ বলে সোশ্যাল মিডিয়ায় সমালোচনা শুরু হয়েছে। এরপরই রাজ্য নেতৃত্ব মঙ্গলবার সতর্ক করে দুই সাংসদকে। নাড্ডা (J.P.Nadda) তলব করে সৌমিত্র খাঁকেও। সেখানে তাকে এই ধরনের মন্তব্য নিয়ে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে বলে খবর।
বিজেপি নেতাদের একাংশের কথায়, কেন দল এত দেরিতে তাদের সতর্ক করল। আরও আগে সতর্ক করা উচিত ছিল। তাদের প্রশ্ন, ভোটে বিপর্যয়ের পর রাজ্য বিজেপিতে যখন টালমাটাল অবস্থা, তখন এহেন দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্য করে প্রতিপক্ষের হাতে অস্ত্র তুলে দেওয়া হচ্ছে। চাপের মুখে পিছু হঠে সৌমিত্র খাঁ (Saumitra Khan) ও জন বার্লা (John Barla) এটা তাঁদের ব্যক্তিগত মত বললেও, দলের পক্ষে যে তার নেতিবাচক প্রভাবই পড়েছে এমনটাই মনে করছে রাজ্য বিজেপির বড় অংশই। তাদের কথায়, বিজেপি বিভাজন চাইছে। এটাই প্রচার করতে সুবিধা হচ্ছে তৃণমূলের। রাজ্য নেতাদের একাংশের দাবি, কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব পরিষ্কারভাবে বিবৃতি দিক যে এরকম বাংলা ভাগের দাবিকে বিজেপি সমর্থন করে না। দিল্লি থেকে সেই বিবৃতি দেওয়া হোক। না হলে এই দাবি আবার উঠবে। আরেকটি মহল অবশ্য মনে করছে, এই বাংলা ভাগের ইস্যুটাকে জিইয়ে রেখে ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনে উত্তরবঙ্গ (North Bengal) ও জঙ্গলমহলে সুবিধা পেতে চাইছে গেরুয়া শিবির। তাই একপক্ষ এই দাবির সমর্থনে আওয়াজ তুলে যাচ্ছে। তবে রাজ্য বিজেপির সিংহভাগই চাইছে আপাতত এই দাবি তোলা বন্ধ হোক।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.