রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: বন্দে ভারত (Vande Bharat) এক্সপ্রেসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ বিতর্ক বিজেপিতে নয়া মোড় নিল। আমন্ত্রণ পত্র বিলি নিয়ে বেনিয়মের অভিযোগে ফের কাঠগড়ায় বঙ্গ বিজেপির ক্ষমতাসীন শিবির। হাওড়া স্টেশনে বন্দে ভারত ট্রেনের উদ্বোধনে রাজ্য বিজেপির তরফে আমন্ত্রণই জানানো হয়নি কেন্দ্রীয় জাহাজ মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুরকে। আমন্ত্রণ পাননি বর্ষীয়ান বিজেপি নেতা স্বপন দাশগুপ্তও (Swapan Dasgupta)।
আমন্ত্রিত ভিভিআইপিদের তালিকায় নাম থাকলেও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুরের (Shantanu Thakur) কাছে ফোন এবং আমন্ত্রণপত্র পাঠানোই হয়নি বঙ্গ বিজেপির তরফে। যা নিয়ে প্রকাশ্যে কিছু না বললেও ঘনিষ্ঠ মহলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শান্তনু। তবে শুধু কেন্দ্রীয় মন্ত্রীই নন, রাজ্য বিজেপির দপ্তর থেকে অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানিয়ে ফোন করা হয়নি রাজ্যসভার প্রাক্তন সাংসদ স্বপন দাশগুপ্তকেও। দলের একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে স্বপনবাবু লিখেছেন, তাঁকেও কোনও ফোন করা হয়নি। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর ও অমিত শাহ ঘনিষ্ঠ বিজেপির প্রবীণ নেতা স্বপন দাশগুপ্তকে আমন্ত্রণপত্র না পাঠানোর বিষয়টি নিয়ে গেরুয়া শিবিরেও জোর চর্চা শুরু হয়ে গিয়েছে। ভিভিআইপি (VVIP) তালিকায় নাম থাকা সত্ত্বেও যারা কার্ড পাননি ঘনিষ্ঠ মহলে তাঁরা সকলেই কাঠগড়ায় তুলেছেন সুকান্ত-অমিতাভ শিবিরকেই।
বঙ্গ বিজেপির (BJP) তরফে বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের কার্ড দেওয়ার দায়িত্বে ছিলেন বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পল। দলের একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে একাধিক নেতা ক্ষোভপ্রকাশ করেছেন। প্রথমে এই অব্যবস্থা নিয়ে ওই গ্রুপেই সরব হয়েছিলেন নদিয়া দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি তথা বিধায়ক পার্থসারথী চট্টোপাধ্যায়। ক্ষোভ প্রকাশ করে দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা (JP Nadda) ও রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের কাছে চিঠিও লিখেছিলেন তিনি। সংবাদ প্রতিদিন-এ এই খবর প্রকাশিত হওয়ার পরই আলোচনা শুরু হয়ে যায় গেরুয়া শিবিরে। এরপরই আমন্ত্রণ না পাওয়া একাধিক নেতা ঘনিষ্ঠ মহলে বা হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে ক্ষোভ প্রকাশ করতে থাকেন। সেই তালিকায় অবশ্য দলের জাতীয় মুখপাত্র প্রাক্তন আইপিএস ভারতী ঘোষও (Bharati Ghosh) রয়েছেন।
অভিযোগ উঠেছে, একাধিক ভিভিআইপিদের কার্ড দলের সাধারণ কর্মীদের মধ্যে বিলিয়ে দেওয়া হয়েছে। আর উদ্বোধনের দিন সেই সাধারণ কর্মীরা হাওড়া স্টেশনে অনুষ্ঠান স্থলে ভিআইপি জোনে ঢুকে পড়ে বিশৃঙ্খলা বাঁধায় বলে দলের একাংশেরই অভিযোগ। আবার আমন্ত্রিতদের তালিকায় ১৩১ নম্বরে নাম থাকলেও বিজেপির রাজ্য মহিলা মোর্চার সভানেত্রী তনুজা চক্রবর্তীও আমন্ত্রণ পাননি। এটা নিয়েও দলের ওই হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে চর্চা চলছে। মহিলা মোর্চার পাঁচজনের কাছেও কোনও ফোন আসেনি বলে রাজ্য সভানেত্রী ওই হোয়াটস গ্রুপে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। জানা গিয়েছে, অগ্নিমিত্রা পল কার্ড পৌঁছানোর দায়িত্বে থাকলেও পুরো বিষয়টিই অমিতাভ চক্রবর্তী এবং তাঁর ঘনিষ্ঠ অফিসের দায়িত্বপ্রাপ্তরাই দেখেছেন। ওই হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে অগ্নিমিত্রা পলের দাবি, কল সেন্টার থেকে ফোন করা হলেও অনেকে ব্যস্ত ছিলেন। ফোন তোলেননি। যদিও বিজেপির নেত্রীর এই দাবি বিশ্বাসযোগ্য নয় বলেই আমন্ত্রণ না পাওয়া সকলের মত।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.