রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: কামিনী-কাঞ্চন থেকে CAA-তে নাগরিকত্ব দেওয়ার আগে পুরুষদের গোপনাঙ্গ পরীক্ষার পরামর্শ – নানা সময়ে নানা বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে খবরের শিরোনামে উঠে এসেছেন বর্ষীয়ান বিজেপি নেতা তথা বুদ্ধিজীবী তথাগত রায়। আবারও তাঁর সোশাল মিডিয়া পোস্ট ঘিরে সমালোচনা শুরু। নয়া প্রস্তাব নিয়ে যে একাধিক পোস্ট তিনি করেছেন, তা বঙ্গ বিজেপির অন্দরে মুষলপর্ব লাগিয়ে দেওয়ার পক্ষে যথেষ্ট। কী সেই পোস্ট? বর্ষীয়ান বিজেপি নেতার মতে, রাজ্য সভাপতি হওয়ার ক্ষেত্রে সুকান্ত মজুমদার বা দিলীপ ঘোষ নন, যোগ্যতম শুভেন্দু অধিকারীই। যদিও তথাগতর এই প্রস্তাব সমর্থন করেও অনেকের মন্তব্য, বঙ্গ বিজেপিতে দিলীপ ঘোষের অবদান অস্বীকার করা যায় না।
বাংলায় শত চেষ্টা করেও সংগঠন তেমন মজবুত করতে ব্যর্থ গেরুয়া শিবির। বিভিন্ন নির্বাচনী ফলাফলে সেই ব্যর্থতার ছাপ স্পষ্ট। রাজ্য নেতৃত্বে রদবদল এনেও রেজাল্ট ভালো হয়নি। এবার দিল্লির শীর্ষ নেতৃত্বের নির্দেশ, এক কোটি পূরণ করতে হবে সদস্য সংখ্যা। সেই লক্ষ্যে শুরু হয়েছে সদস্য সংগ্রহ অভিযান। সে কাজ যে যথেষ্ট কঠিন, তা বোঝাই যাচ্ছে। মিসড কল দিয়ে সদস্য সংগ্রহ শুরু হয়েছে। তা নিয়ে বিস্তর কটাক্ষ করেছে তৃণমূল।
এবার বঙ্গ বিজেপির হাল ধরার ক্ষেত্রে নিজের প্রস্তাব পোস্ট করলেন বর্ষীয়ান নেতা তথাগত রায়। ফেসবুক পোস্টে তিনি জানিয়েছেন, রাজ্য সভাপতি হিসেবে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীই যোগ্যতম। তার সপক্ষেও যুক্তি দিয়েছেন তথাগত। পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘প্রথম, শুভেন্দু স্বয়ং মমতাকে হারিয়েছেন। ফলে মমতা কম্পার্টমেন্টাল পরীক্ষা দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী হতে বাধ্য হয়েছেন। দ্বিতীয়, শুভেন্দুর রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা সুকান্ত এবং দিলীপের চাইতে অনেক দীর্ঘ। ২০০৭ সালে নন্দীগ্রাম আন্দোলন দিয়ে তাঁর হাতেখড়ি। তৃতীয়, শুভেন্দু যেরকম স্পষ্ট ভাষায় মমতাকে চোর বলেন, হিন্দু একীকরণের কথা বলেন, এবং রাজ্য চষে বেড়ান, সেরকম অন্য কেউই পারেন না বা করেন না। সংস্কারের উপর একজন খুব জোর দিয়েছেন। সংস্কার ঠিকই আছে, কিন্তু ব্যবহারিক রাজনীতিতে এর স্থান সীমিত। সুতরাং, দোষগুণ বিচার করে পশ্চিমবঙ্গ বিজেপিকে নেতৃত্ব দেবার জন্য যোগ্যতর আর কেউ নেই।’
এই মুহূর্তে বিজেপির রাজ্য সভাপতির পদ সামলাচ্ছেন বালুরঘাটের সাংসদ সুকান্ত মজুমদার। পাশাপাশি তিনি কেন্দ্রীয় মন্ত্রীও। এই পরিস্থিতিতে তাঁর দায়িত্ব কমাতে কোনও রদবদলের সিদ্ধান্ত নিতে পারে বিজেপি। আর তার পরিপ্রেক্ষিতেই তথাগত রায়ের এই পোস্ট। তবে বর্ষীয়ান নেতার এহেন প্রস্তাব শীর্ষ নেতৃত্ব কতটা গ্রহণ করবেন, তা সময়ই বলবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.