ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: ‘ডিসেম্বর আসুক দেখতে পাবেন।’ হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন বিজেপি সাংসদ নিশীথ প্রামাণিক। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী আবার বলছেন, ‘ডিসেম্বরে সরকারের ডুগডুগি বাজাব।’ এবার এই ‘ডিসেম্বর’ চক্রান্ত নিয়ে মুখ খুললেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক তথা মুখপাত্র কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh)। বললেন, “বিজেপি ডিসেম্বরের কথা বলছে বারবার। তার মানে কোনও বড় চক্রান্ত হচ্ছে।”
দিন কয়েক আগে দলের এক অনুষ্ঠানে তৃণমূলকে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন কোচবিহারের সাংসদ নিশীথ প্রামাণিক। বলেছিলেন, “তৃণমূলের (TMC) ব্লকস্তরের সংগঠন একেবারে ভেঙে পড়েছে। উপরে উপরে যা আছে তাও থাকবে না। ডিসেম্বর আসুক দেখতে পাবেন কী হয়! আমি ভবিষ্যৎবক্তা নই। তাই কোনও তারিখ আমি বলছি না। কিন্তু দেখতে থাকুন।” একইরকম সুর শোনা গিয়েছে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর গলায়। তিনি বলেন, “আমি তো সরকার ফেলে দেওয়ার কথা বলছি না। সরকারকে কোনও কাজ করতে দেব না। সরকারের ডুগডুগি বাজাব।” বিজেপি নেতাদের এ ধরনের হুঁশিয়ারির পিছনে বড়সড় চক্রান্তের গন্ধ পাচ্ছে তৃণমূল। তাঁদের আশঙ্কা, গণতান্ত্রিকভাবে লড়াই করতে না পেরে সরকারের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করছে গেরুয়া শিবির।
এদিন এনিয়ে মুখ খুলেছেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “বিজেপি ২৪-এ ক্ষমতায় আসার জায়গায় নেই। তাই চেষ্টা করছে নখ দাঁত বের করে সরকারকে বিরক্ত করার চেষ্টা করছে। হাঁটু কাঁপছে। তাই বড়-বড় কথা বলছে। ওরা বারবার ডিসেম্বরের কথা বলছে। তার মানে কোনও বড় চক্রান্ত হচ্ছে। যার সঙ্গে গণতন্ত্রের কোনও সম্পর্ক নেই। চক্রান্তের সম্পর্ক।” তিনি আরও বলেন, “এরা জনভিত্তিহীন নেতা। বাংলার মানুষ চক্রান্ত রুখবে।” কুণাল ঘোষের কথায়, “একুশের নির্বাচনের মুখেও তো এই কথাগুলো শুনেছিলাম। রোজ যোগদান মেলা হয়েছে। যারা গেছিলেন তাঁরা তো ফিরে আসছেন। বিজেপিকে বুঝতে হবে নিজেদের কর্মীদের চাঙ্গা রাখতে এগুলো বলতে হবে।”
একদিকে প্রাথমিক শিক্ষক এবং এসএসসির নিয়োগে দুর্নীতি নিয়ে নাজেহাল রাজ্য সরকার। প্রায় দেড় বছর ধরে রাস্তায় আন্দোলন করছেন চাকরিপ্রার্থীরা। তাদের নিয়ে বিড়ম্বনায় পড়েছে রাজ্য সরকার। প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের গ্রেপ্তারির জেরে রাজ্য সরকারে ভাবমূর্তি ধাক্কা খেয়েছে। গ্রেপ্তার হয়েছে রাজ্যের ক্ষমতাসীন দলের দাপুটে নেতা অনুব্রত মণ্ডলও। একাধিক ইস্যুতে রাজ্যে সক্রিয় সিবিআই, ইডি-সহ একাধিক কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। আবার বিজেপি নেতারা হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন, তৃণমূলের আরও নেতা গ্রেপ্তার হবে। কেন্দ্রের তরফে একাধিক প্রকল্পের টাকাও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ফলে থমকে গিয়েছে বহু প্রকল্পের কাজ। আবার বিজেপির তারকা নেতা মিঠুন চক্রবর্তী দাবি করেছেন, অন্তত ২১ তৃণমূল নেতা বিজেপির সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে। এরমধ্যেই রাজ্যজুড়ে ‘ডিসেম্বর চক্রান্ত’ ঘিরে গুঞ্জন। রাজনৈতিক মহলের একটাই প্রশ্ন, দলবদল, জেল ভরো আন্দোলন নাকি সরকারের পতন নাকি আরও বড় কিছু? কী হবে ডিসেম্বরে?
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.