রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: একে তো কোন্দল নিয়ে বিরক্ত কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। এবার বঙ্গ বিজেপির খরচেও রাশ টানতে চলেছে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। পার্টি অফিসের জমি কেনা থেকে শুরু করে ভবন নির্মাণ। সব ক্ষেত্রেই বঙ্গ বিজেপির আর্থিক খরচে নজরদারি করতে তৈরি করে দেওয়া হল কেন্দ্রীয় মনিটরিং টিম। আর্থিক খরচের ক্ষেত্রেও রাজ্য বিজেপির ক্ষমতা অনেকখানি খর্ব করা হয়েছে বলেই দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে। এদিকে, বিভিন্ন জেলায় দলের সভাপতিদের মাসে সাড়ে ১৭ হাজার টাকা করে দেওয়া হচ্ছে। গাড়ি ভাড়া ও তেল খরচ থেকে শুরু করে অন্যান্য খরচ সামলানো এই অর্থে সম্ভব হচ্ছে না। বিভিন্ন জেলা সভাপতিরাও দলের অন্দরে এই বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। আবার গাড়ি ভাড়া থেকে শুরু করে থাকার খরচ না পেয়ে ক্ষুব্ধ জেলা ইনচার্জরাও।
বঙ্গ বিজেপির ৪২টি সাংগঠনিক জেলার মধ্যে প্রায় অর্ধেক জেলাতেই সদর কার্যালয় নির্মাণ হয়নি। বাড়ি ভাড়া নিয়ে চলছে। একুশের ভোটের আগে জেলা পার্টি অফিস বানানোর জন্য জমি খোঁজার কাজ শুরু হয়। কিন্তু ভোটে দলের বিপর্যয়ের পর সেই উদ্যোগ বন্ধ হয়ে যায়। এরপর কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের নির্দেশে ফের পার্টি অফিসের জন্য জমি খোঁজার কাজ শুরু হয়েছে। তবে এবার এক্ষেত্রে রাজ্যের টিমের উপর নজর রাখছে কেন্দ্রীয় মনিটরিং টিম। এই কেন্দ্রীয় টিমে অসমের এক সাংসদ রয়েছেন। পুরো কার্যালয়টি ৭ থেকে ১০ হাজার বর্গ ফুটের করার কথা বলা হয়েছে। পাঁচ থেকে সাত কাঠা জায়গা নিতে বলা হয়েছে।
এদিকে, বিভিন্ন জেলা পার্টির জন্য বরাদ্দতেও রাশ টানা হয়েছে বলে দলীয় সূত্রে খবর। যে সাড়ে ১৭ হাজার করে দেওয়া হচ্ছে, তা সারা মাসের গাড়ির তেল খরচেই কার্যত শেষ হয়ে যাচ্ছে। পার্টি অফিস ভাড়া, ইলেকট্রিকের খরচও উঠছে না। ফলে এত কম পরিমাণ টাকা নিয়ে দলের অন্দরেও অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন জেলা সভাপতিরা। দলের জোন ইনচার্জ ও জেলা ইনচার্জদের গাড়ির ভাড়া ও থাকার খরচও রাজ্য পার্টির তরফে আসছে না বলে অভিযোগ। নিজেদের পকেট থেকে খরচ করেই কার্যত সংগঠনের কাজে তাদের ছুটতে হচ্ছে। অথচ, জেলা ইনচার্জদের এলাকায় এলাকায় প্রবাসের কথা বলা হয়েছে।
ফলে পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে রাজ্য শাখার আর্থিক খরচে রাশ টানার পাশাপাশি যেভাবে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের তরফে মনিটরিং করা হচ্ছে তা কার্যত নজিরবিহীন। বিজেপি বাঁচাও মঞ্চের তরফে শামসুর রহমানের বক্তব্য, ‘‘বৈদিক ভিলেজে দলের প্রশিক্ষণ শিবিরে দু’কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে। বৈভবের ছোঁয়া নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। অথচ জেলার পার্টির কাজেই অর্থ দেওয়া হচ্ছে না।’’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.