ছবি: প্রতীকী
রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: পঞ্চায়েত ও লোকসভা ভোটের রূপরেখা ঠিক করতে বঙ্গ বিজেপির দু’দিনের সাংগঠনিক বৈঠকের প্রথম দিনই কেন্দ্রীয় নেতারা বুঝিয়ে দিলেন দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নিয়ে তারা তিতিবিরক্ত। আর এই কোন্দল সামাল দিতে রাজ্য নেতৃত্বের উদ্দেশে দলের নয়া পর্যবেক্ষকদের কড়া বার্তা, “মুখ বন্ধ রাখুন। কোনও কথা প্রকাশ্যে বলবেন না। দল যে দায়িত্ব দেবে তা পালন করতে হবে। প্রকাশ্যে কোনও ক্ষোভ নয়।”
রবিবার আইসিসিআরে অনুষ্ঠিত হয় বঙ্গ বিজেপির (BJP) প্রথমদিনের সাংগঠনিক বৈঠক। সেখানে তিন পর্যবেক্ষক সুনীল বনসল, মঙ্গল পান্ডে, আশা লাকড়া, অমিত মালব্য ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন সুকান্ত, দিলীপ, শুভেন্দুরা (Suvendu Adhikari)। ছিলেন সতীশ ধনদ, লকেট চট্টোপাধ্যায়, অমিতাভ চক্রবর্তীরা। প্রথমে রাজ্য পদাধিকারীদের সঙ্গে ও পরে বিধায়কদের সঙ্গে বৈঠক করেন কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষকরা। সেই বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, পঞ্চায়েত ভোটের আগে কৃষকদের বাড়ি বাড়ি যাওয়ার। নিচুতলার সংগঠন কার্যত ভেঙে পড়ায় পঞ্চায়েত ভোটেও কেন্দ্রীয় বাহিনীর ভরসায় বঙ্গ বিজেপি। কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষদের কাছে এমনই আবেদন দলের বিধায়কদের। এদিন, বক্তব্য রাখার সময় কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক মঙ্গল পান্ডে বলেন, রাজ্যে দলের সাংসদ-বিধায়কদের সংখ্যা বেড়েছে। ভাল ফল হওয়া উচিত পঞ্চায়েতে।
দলীয় সূত্রে খবর, তখন মঙ্গল পান্ডেকে থামিয়ে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, এই মুহূর্তে দলের সংগঠনের যে অবস্থা তাতে পঞ্চায়েতে কুড়ি-পঁচিশ হাজার আসন জেতা যায়। এরপরই কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষকদের কাছে শুভেন্দুর আরজি, পঞ্চয়েত ভোটে বুথে বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনীর ব্যবস্থা যাতে করা যায়। যদিও রাজনৈতিক মহল বলছে, এধরনের আবেদন হাস্যকর। পঞ্চায়েত ভোট কীভাবে হবে তা ঠিক করার অধিকার রাজ্য সরকারেরই। এদিকে, বিধায়কদের দলের সঙ্গে সমন্বয় রেখে চলার বার্তা দিয়েছেন কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষকরা।
শীর্ষ নেতাদের পরামর্শ, দল থেকে বিচ্ছিন্ন হলে চলবে না জনপ্রতিনিধিদের। সাংসদ-বিধায়কদের সঙ্গে বঙ্গ বিজেপির পার্টি নেতাদের দূরত্ব নিয়েও অভিযোগ গিয়েছিল কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে। সেই মর্মেই এই বার্তা বলে মনে করা হচ্ছে। বিধায়কদের কাজে রাজ্য সরকারের অসহযোগিতার অভিযোগ করেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। কেন্দ্র থেকে বিধায়কদের সিআরএস ফান্ড বাড়ানোর আবেদন করেন শুভেন্দু। জনসংযোগ বাড়াতে আবার বিধায়কদের বৃক্ষরোপণ, রক্তদান, বস্ত্র বিতরণ সহ পাঁচটি কাজে জোর দিতে বলেছেন কেন্দ্রীয় নেতারা। রাজ্য বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে নিয়ে রবিবারের বৈঠক প্রসঙ্গে এদিন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘বিজেপি হল সমুদ্রের ধারের বালির ঘরের মতো। সমুদ্রের ধারে বালির ঘর তৈরি করলে দেখা যায়, একটা ঢেউ এলে সেই বালির ঘর ভেঙে যায়। বিজেপি সেই বালির ঘরের মতো। বিজেপি একটা বৈঠক করবে। আবার তৃণমূলের একটা কর্মসূচি হবে, ভোট আসবে আবার চলে যাবে। এটা তো বালির ঘর।’’ এভাবেই বঙ্গ বিজেপির জীর্ণ সংগঠন নিয়ে এদিন কটাক্ষ করেছেন কুণাল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.