Advertisement
Advertisement

ইসলামপুর কাণ্ডে বুধবার বাংলা বনধের ডাক বিজেপির

বৃহত্তর আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারি আরএসএস-এর।

BJP calls for strike in Bengal over Islampur incident
Published by: Subhamay Mandal
  • Posted:September 22, 2018 4:59 pm
  • Updated:September 22, 2018 5:25 pm  

সংবাদ প্রতিদিন ব্যুরো: ইসলামপুর কাণ্ডে আগামী বুধবার, ২৬ সেপ্টেম্বর বাংলা বনধের ডাক বিজেপির। শিক্ষক নিয়োগকে কেন্দ্র করে বিক্ষোভের জেরে গুলিতে দুই ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনায় এবার বড়সড় আন্দোলনে নামছে গেরুয়া শিবির। তারই অঙ্গ হিসাবে গোটা রাজ্যজুড়ে বনধের ডাক দিল বঙ্গ বিজেপি। গত শুক্রবার উত্তর দিনাজপুরে বনধ পালন করে বিজেপি। এবার গোটা রাজ্য অচল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিজেপি। সেইদিন পুলিশ-বিজেপি সমর্থকদের সংঘাতে বড়সড় গন্ডগোলের আশঙ্কা করছে রাজনৈতিক মহল। একইসঙ্গে শনিবার রাজ্য সরকারকে তুমুল ভর্ৎসনা করে পথে নেমে আন্দোলন করার হুঁশিয়ারি দিল রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ। প্রসঙ্গত, স্কুলে উর্দু শিক্ষক নিয়োগকে কেন্দ্র করে গত বৃহস্পতিবার রণক্ষেত্র হয়ে ওঠে উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুর৷ স্থানীয় দাঁড়িভিট হাই স্কুলের ওই ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়ে বেঘোরে প্রাণ হারান এক কলেজ পড়ুয়া। মৃতের নাম রাজেশ সরকার। তিনি ছিলেন আইটিআই ফাইনাল ইয়ার ও ইসলামপুর কলেজের প্রথম বর্ষের পড়ুয়া। রাজেশের বুকে গুলি বেঁধে। জখম হন ন’জন। যাঁদের মধ্যে বুকে ও পায়ে গুলি লাগে স্কুলের দুই ছাত্র তাপস বর্মন ও বিপ্লব সরকারের। তারপর শুক্রবার ভোরে হাসপাতালে মৃত্যু হয় তাপসের। পুলিশের বিরুদ্ধেই ওঠে অভিযোগের আঙুল৷ প্রতিবাদে শুক্রবার গোটা উত্তর দিনাজপুর জেলাজুড়ে শুক্রবার বনধ পালন করে বিজেপি৷ তারও ব্যাপক প্রভাব পড়ে৷ বিভিন্ন জায়গায় বনধ সমর্থকদের সঙ্গে পুলিশের খণ্ডযুদ্ধ লাগে৷ শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের পদত্যাগের দাবি ওঠে বিরোধীদের তরফ থেকে৷ যদিও ঘটনার পিছনে আরএসএস-এর মদত রয়েছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী৷ 

[ইসলামপুর কাণ্ডে মৃত ছাত্রদের দেহ নদীর চরে পুঁতে আন্দোলনে গ্রামবাসীরা]

শিক্ষামন্ত্রীর এই মন্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানায় আরএসএস ও এবিভিপি। ঘটনার পরেরদিনই অভিযোগ অস্বীকার করে সাংবাদিক সম্মেলন করে বিদ্যার্থী পরিষদ। জানিয়ে দেয়, শিক্ষামন্ত্রীর অভিযোগ সর্বৈব মিথ্যা। ঘটনায় কোনওভাবেই এবিভিপি যুক্ত নয়। শনিবার কেশব ভবনে সাংবাদিক সম্মেলন করে সংঘের দক্ষিণবঙ্গ শাখার সাধারণ সম্পাদক জিষ্ণু বসু জানান, ‘শিক্ষামন্ত্রীর অভিযোগ মিথ্যা। সরকারকে ২৪ ঘণ্টা সময় দিচ্ছি। তার মধ্যে প্রমাণ করে দেখাক, ইসলামপুরের ঘটনায় আরএসএস যুক্ত। প্রমাণ করতে না পারলে, সংঘ বৃহত্তর আন্দোলনে নামবে। এমন আন্দোলন হবে যাতে পরবর্তীকালে এমন ঘটনায় কী হয় তার শিক্ষা পাবে সরকার।’ জিষ্ণুবাবু রাজ্যের সমস্ত শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষকে পথে নেমে আন্দোলনে শরিক হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। একইসঙ্গে তাঁর প্রশ্ন, দুজন দলিত ছাত্র নিহত হয়েছেন। সরকারের উচিত ঘটনায় শোকপ্রস্তাব জানানো। পাশাপাশি, কালিয়াচকে থানায় আগুন লাগানো হল তখন কেন পুলিশ গুলি চালায়নি। ধুলাগড় কাণ্ডেও পুলিশ গুলি চালায়নি। তাহলে ইসলামপুরের ঘটনায় কেন পুলিশ গুলি চালাল? আইজি (আইনশৃঙ্খলা) পুলিশের গুলি চালনার ঘটনা স্বীকার করুক। নাহলে দেহের পোস্টমর্টেমের রিপোর্ট পেশ করা হোক। এসপি জানাক, কোন গুলি শরীরে পাওয়া গিয়েছে। সেই গুলি কোন বন্দুকের, কারা সেই বন্দুক ব্যবহার করে? উত্তর না পেলে বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।

[ইসলামপুর কাণ্ডে মৃত আরও এক ছাত্র, বিজেপির বনধে থমথমে উত্তর দিনাজপুর]

এদিকে দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুরে দলীয় সভায় ইসলামপুর কাণ্ডে রাজ্যের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন বঙ্গ বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেন, ‘প্ররোচনার কি আছে। সবাই জানে ছাত্ররা তিন চারদিন ধরে আন্দোলন করছিল। অন্যদের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে দেওয়া চেষ্টা করছে সরকার। আবোল তাবোল বলে জিনিসটাকে হালকা করার চেষ্টা করছে রাজ্য সরকার।’ পাশাপাশি মৃত দুই ছাত্র বিজেপি বা এবিভিপির সদস্য বা সমর্থক ছিল কিনা সেই প্রসঙ্গ খানিকটা এড়িয়ে গিয়ে দিলীপ ঘোষ বলেন, মৃত দুই জন স্কুলের প্রাক্তন ছাত্র। এদের মধ্যে একজন বোনকে আনতে গিয়েছিলেন। অপরজন কৌতুহলবশত দেখতে গিয়েছিলেন কী হয়েছে সেখানে। কিন্তু পুলিশ তাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে গুলি চালায়। এমনকি তাদের গাড়ি দিয়ে চাপা দিয়ে মারতে উদ্যত হয়। শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে স্কুলে ছোট ঘটনা ছিল। কিন্ত যে রুপ নিল তাতে মনে হচ্ছে পিছনে বড় চক্রান্ত আছে। সেখানে ঘটনার দুইদিন পরও কোনও বিধায়ক, সাংসদ বা মন্ত্রীর দেখা মেলেনি।

স্থানীয় পুলিশের বয়ান প্রসঙ্গে দিলীপবাবু জানান, এখানে পলিটিক্যাল বয়ান দিচ্ছেন এসপি। মূখ্যমন্ত্রী শিক্ষামন্ত্রী যা বলে দিয়েছেন সেটাই বলছেন তথ্য প্রমান ছাড়া। তারা এই ঘটনার সিবিআই তদন্তের দাবি রেখেছেন। তবে ইসলামপুরে বিজেপি এখনও ময়দানে নামেনি বলে জানান দিলীপ। তবে যা হয়েছে তাতে বিজেপি চুপ করে বসে থাকবে না বলে হুঁশিয়ারি দেন রাজ্য সভাপতি। আগামী দুই-একদিনের মধ্যে তিনি ইসলামপুরে যাবেন বলে জানান। পরিস্কার না বললেও, যারা আন্দোলন করেছিল তারা আরও বড় আন্দোলনে যাবে বলে বিজেপির রাজ্য সভাপতি ইন্ধনের কথাই স্পস্ট করেছেন।

২০২৪ এর পূজা সংক্রান্ত সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের দেবীপক্ষ -এর পাতায়।

চোখ রাখুন
Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement