রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: মুখ্যমন্ত্রীর CAA বিরোধী আন্দোলন যে বিজেপিকে এ রাজ্যে ব্যাকফুটে ঠেলে দিয়েছে, তা কার্যত স্বীকার করে নিলেন গেরুয়া শিবিরের নেতারা। শনিবার রাজ্যে দুদিনের সফরে এসেছেন প্রধানমন্ত্রী। এদিন রাজভবনে নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে একান্ত বৈঠকের পর বেরিয়ে এসে বিজেপি নেতারা যা বললেন তার সারমর্ম হল, গোটা দেশের মতো বাংলাতেও CAA বিরোধী আন্দোলন প্রভাব ফেলেছে। আর যেভাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একের পর এক মিছিল-সভা করেছেন, তাতে কিছুটা পিছিয়ে পড়েছেন দিলীপ ঘোষরা। এদিন তাই দিলীপ ঘোষ রাজভবনের বাইরে সংবাদমাধ্যমকে জানালেন, প্রধানমন্ত্রী CAA নিয়ে রাজ্যের পরিস্থিতি জানতে চেয়েছিলেন। তার উত্তরে তাঁরা বলেছেন, আগে মুখ্যমন্ত্রী এগোচ্ছিলেন আর তাঁরা পিছোচ্ছিলেন। এখন তাঁরা লড়াইয়ে ফিরেছেন বলে দাবি করেছেন।
দুদিনের সফরে রাজ্যে এসে প্রথমে রাজভবনে যান প্রধানমন্ত্রী। সেখানে নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী প্রথমে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠক করেন মোদি। ৩৫ মিনিটের বদলে ২২ মিনিট কথা দুজনের মধ্যে। সেখানেই রাজ্যের দাবিদাওয়া নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে দরবার করেন মমতা। সেইসঙ্গে CAA প্রত্যাহার করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন করেন মুখ্যমন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রী বেরিয়ে যাওয়ার পর রাজভবনে পৌঁছন রাজ্য বিজেপির নেতারা। রাজ্য বিজেপির পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়, রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ, কেন্দ্রীয় সম্পাদক রাহুল সিনহা ও মুকুল রায় ছিলেন সেই প্রতিনিধি দলে। মোদির সঙ্গে দেখা করে বেরিয়ে দিলীপ ঘোষ বললেন, ‘সৌজন্য সাক্ষাতে গিয়েছিলেন। চা-সিঙারা খেলাম। উনি জিজ্ঞেস করলেন, সিএএ নিয়ে কী পরিস্থিতি চলছে? বললাম, দিদিমণি এতদিন এগোচ্ছিল। আমরা পিছোচ্ছিলাম। এখন আমরা এগোচ্ছি। আমরা সিএএ নিয়ে আন্দোলন করছি। বাড়ি বাড়ি যাচ্ছি। সেটা বলেছি।’
দিলীপ ঘোষের বক্তব্য বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। এদিন প্রধানমন্ত্রীকে তিনি যা বলেছেন, তার মানে এই দাঁড়ায় রাজ্যজুড়ে CAA নিয়ে বিক্ষোভে মুখ্যমন্ত্রীর লাগাতার আন্দোলনের ফলে বিজেপি ব্যাকফুটে রয়েছে। প্রচারে বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রচার করলেও বিক্ষোভ-আন্দোলনের ফলে সাধারণ মানুষের সমর্থন নিজেদের দিকে কতটা টানতে পেরেছেন বিজেপি নেতৃত্ব তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। এদিন দিনভর প্রধানমন্ত্রীর সফর ঘিরে শহরে বিক্ষোভ প্রদর্শন হয়েছে, তার উপর রাজভবন থেকে বেরিয়েই টিএমসিপির ধরনামঞ্চে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নাগরিকত্ব আইন রাজ্যে কার্যকর হবে না বলে ঘোষণা করেছেন। এর থেকে বোঝাই যাচ্ছে, CAA নিয়ে রাজ্যে কিছুটা ব্যাকফুটেই রয়েছে বিজেপি। এবং দিলীপ ঘোষরা সেই কথাকেই মান্যতা দিলেন স্বীকারোক্তিতে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.