ফাইল ছবি
ক্ষীরোদ ভট্টাচার্য: ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইন দেওয়ার দিন শেষ। পুরসভা-পঞ্চায়েতেও যেতে হবে না। হাসপাতাল থেকেই পাওয়া যাবে জন্ম-মৃত্যুর শংসাপত্র। তৈরি হচ্ছে রাজ্যের নিজস্ব পোর্টাল। নবান্ন সূত্রে খবর, এই পোর্টালের নামকরণ করতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। নামকরণ করবেন মুখ্যমন্ত্রী।
এতদিন ধরে রাজ্যের জন্ম-মৃত্যুর সমস্ত তথ্য জমা পড়ত স্বাস্থ্যমন্ত্রকের পোর্টালে। সেই পোর্টালে রোজ নিয়ম করে তথ্য আপলোড করতে হয়। তবে এপ্রিল থেকে এইসব জটিলতা বন্ধ হতে চলেছে। স্বাস্থ্য ভবনের পোর্টাল থেকে কেন্দ্রীয় পোর্টালে তথ্য যাবে। আবার হাসপাতাল বা মেডিক্যাল কলেজ, এমনকী মাতৃসদন থেকেও বার্থ সার্টিফিকেট নিয়েই বাড়ি ফিরবে নবজাতক। পরে যদি নাম বা ঠিকানা বদল করতে হয় তবে অনলাইনে আবেদন করতে হবে। অনুমোদন পেলেই অনলাইন থেকে প্রিন্ট করে সার্টিফিকেট পাওয়া যাবে। অর্থাৎ গোটাটাই অনলাইন নিয়ন্ত্রিত।
স্বাস্থ্য ভবন সূত্রে খবর, ট্রায়াল শেষ। শেষ পর্যায়ের কিছু কাজ বাকি। এপ্রিলের শুরু থেকেই কাজ শুরু করবে রাজ্য সরকারের নিজস্ব ওয়েব পোর্টাল। আবার এই পোর্টাল থেকে লগইন করে হাসপাতাল থেকে মৃতের ডেথ সার্টিফিকেট দেওয়া হবে। এবং সেই সময় থেকে মৃতের স্বাস্থ্যসাথী, খাদ্যসাথীর মতো কর্মসূচির পোর্টাল থেকে ওই মৃতের নাম বাদ পড়বে।
গত সপ্তাহে নবান্নে মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী (Harikrishna Dwivedi) সরকারের নতুন পোর্টালের সমস্ত বিষয় খতিয়ে দেখেন। দ্রুত পোর্টালের কাজ শুরু করার জন্য স্বাস্থ্যকর্তাদের নির্দেশ দেন। স্বাস্থ্য অধিকর্তা ডা. অজয় চক্রবর্তীর কথায়, “সব ঠিক থাকলে এপ্রিল থেকে জন্ম-মৃত্যুর নতুন পোর্টালে কাজ শুরু হবে।” স্বাস্থ্য অধিকর্তার কথায়, “বীরভূম ও হাওড়া জেলায় পরীক্ষামূলক কাজ সফল হয়েছে। এবার সব সরকারি হাসপাতাল, মাতৃসদন ও পঞ্চায়েত-পুরসভাকে যুক্ত করা হবে এই পোর্টালের সঙ্গে। এর পরেই কাজ শুরু হবে।”
২০১৯ সালের মার্চ থেকে কলকাতার সাতটি মেডিক্যাল কলেজ থেকে শিশুর জন্মের শংসাপত্র দেওয়ার কাজ শুরু করেছে স্বাস্থ্য দপ্তর। স্বাভাবিকভাবেই কলকাতা পুরসভার কাজ খানিকটা হলেও কমেছে। নবান্ন সূত্রে খবর, সরকারি হাসপাতালের পর বেসরকারি হাসপাতাল ও নার্সিংহোমকে এই কর্মসূচির আওতায় আনা হবে। এখন প্রশ্ন উঠেছে, দীর্ঘদিনের চলে আসা নিয়ম কেন ভাঙতে চলেছে স্বাস্থ্য দফতর? অজয়বাবুর উত্তর, “নিশ্ছিদ্র সুরক্ষা। কোনওভাবেই সাইবার অপরাধীরা এই পোর্টাল হ্যাক করতে পারবে না। এতটাই নিরাপত্তা রাজ্যের নাগরিকদের জন্য করেছে রাজ্য সরকার।”
এক আধিকারিকের কথায়, গত কয়েক বছরে রাজ্যের বিভিন্ন জেলা হাসপাতাল থেকে তথ্য হাতিয়ে সাইবার অপরাধীরা সেন্ট্রাল পোর্টাল থেকে জন্ম-মৃত্যুর জাল শংসাপত্র জোগাড় করেছে। বিশেষত বিমার টাকা আত্মসাৎ করতে ডেথ সার্টিফিকেট অত্যন্ত জরুরি। পুরুলিয়া জেলা হাসপাতালের এমন ঘটনার অভিযোগ জমা পড়ে স্বাস্থ্যকর্তাদের কাছে। হুগলি, পুরুলিয়া বা সীমান্তবর্তী জেলা হাসপাতাল থেকে এমন তথ্য পেয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে লিখিত অভিযোগ জানানো হয়। এরপরেই বজ্র আঁটুনির সুরক্ষায় গোটা বিষয়টি বেঁধে ফেলতে চলেছে স্বাস্থ্য দপ্তরের আইটি সেল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.