বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত: ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্টকে (ISF) জোটে আহ্বান করে, পছন্দমতো আসন ছেড়ে দিয়ে এখন কার্যত ঢোঁক গিলতে হচ্ছে বামফ্রন্টকে। রবিবার ব্রিগেডের সভা থেকে আইএসএফ প্রধান আব্বাস সিদ্দিকির (Abbas Siddiqui) বক্তব্য সমর্থন করলেন না বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু। সোমবার বহু অনিশ্চয়তার পর বাম-কংগ্রেসের বৈঠকের পর সাংবাদিক বৈঠকে বসে বিমান বসু সেই ইঙ্গিতই দিলেন। এ নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ”জোটের একটা সর্বসম্মত মত থাকে, বক্তব্য থাকে। তার বাইরে বেরিয়ে অন্য কিছু বলা ঠিক নয়। আশা করি, সকলেই তা বুঝতে পারবেন। পরবর্তীতে কেউ এমন কোনও আচরণ করবেন না।” তাঁর এই কথা থেকেই স্পষ্ট, কংগ্রেসকে নিশানা করে ব্রিগেডের মঞ্চ থেকে আব্বাস যে বার্তা দিয়েছেন, তা নাপসন্দ বিমান বসুদের।
সোমবার বাম (Left Front) ও কংগ্রেসের (Congress) মধ্যে আসন সমঝোতা নিয়ে ফের একপ্রস্ত বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। দুপুর বৈঠকের কথা থাকলেও প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী মুর্শিদাবাদে চলে যান। মাঝপথ থেকে আবার ফিরে এসে বিধান ভবনের বৈঠকে যোগ দেন। এরপর সন্ধেবেলা জোটের খবরাখবর জানাতে বিমান বসু, অধীর চৌধুরীরা যৌথ সাংবাদিক বৈঠকে বসেন। সেখানেই প্রশ্ন ওঠে, রবিবার ব্রিগেড মঞ্চে কংগ্রেসকে আব্বাসের বার্তা দেওয়া নিয়ে। তাতেই ফ্রন্ট চেয়ারম্যানের বক্তব্য, জোটের ‘কমন’ কথা না বলে নিজের মতো ভাষণ রাখা খুব একটা প্রত্যাশিত ছিল না। যা হয়েছে ঠিক হয়নি।
এদিকে, অধীর চৌধুরী সাংবাদিক বৈঠকে জোটে আইএসএফের অংশগ্রহণ নিয়ে কংগ্রেসের অবস্থান ফের স্পষ্ট করে দিলেন। তাঁর কথায়, ”বামেদের সঙ্গে জোট প্রক্রিয়া একরকম পথে এগোচ্ছিল। বহু আসন সমঝোতা হয়ে গিয়েছিল। তার মধ্যে দল অংশ নেওয়ায় গোটা পদ্ধতি রিমডেলিং করতে হচ্ছে। তাই প্রায় ৯০ শতাংশ আসন নিয়ে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হওয়ার পরও তা ধাক্কা খাচ্ছে।” তাঁর এই কথায় স্পষ্ট, আইএসএফ ‘সংযুক্ত মোর্চার’ জোটসঙ্গী হওয়া নিয়ে প্রবল আপত্তি কংগ্রেসের। যদিও আগামী দু’দিনের মধ্যে প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করবে কংগ্রেস, এমনই জানিয়েছেন অধীর চৌধুরী।
আপত্তির কথা জানিয়েছেন কংগ্রেস সাংসদ আনন্দ শর্মা। বাম-কংগ্রেস জোটে আইএসএফকে নেওয়া ঠিক হয়নি বলেই মনে করেন তিনি। যদিও আনন্দ শর্মার এই বক্তব্য সরাসরি সমর্থন করলেন না অধীর চৌধুরী। তাঁর পালটা বক্তব্য, আনন্দ শর্মা পশ্চিমবঙ্গের বাস্তব পরিস্থিতি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল নন। তিনি জানেন না সাম্প্রদায়িক বিজেপি ও স্বৈরাচারী তৃণমূলের আক্রমণে কত কংগ্রেস কর্মী আজ জেলে। তবে এ নিয়ে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির আচরণে ক্ষুব্ধ কংগ্রেস হাইকমান্ড। এদিন সকালে অধীর চৌধুরী নিযুক্ত জেলা পর্যবেক্ষকদের সরিয়ে দেওয়া হল। নির্বাচনের জন্য ভিন রাজ্য থেকে প্রতি জেলার জন্য একজন করে পর্যবেক্ষক নিয়োগ করে হাইকমান্ড। দলের সাধারণ সম্পাদক কে সি বেনুগোপাল পুরো বিষয়টি দেখার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
দেখুন ভিডিও:
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.