রূপায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়: একসঙ্গে ৬০ জন করোনা আক্রান্তকে সম্পূর্ণ সুস্থ করে বাড়ি ফেরাচ্ছে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল। যা এককথায় নজিরবিহীন। সুস্থ হওয়াদের মধ্যে ৪৩ জন সোমবার বাড়ি ফিরলেও ১৭ জন এখনও হাসপাতালেই আছেন। তাঁদের বাড়ি দক্ষিণ ২৪ পরগনার আমফান (Amphan) বিধ্বস্ত এলাকায়। পরিবারের লোকেদের সঙ্গে যোগাযোগ করা গেলে আজ হয়তো তাঁরাও বাড়ি ফিরে যাবেন। কলকাতা মেডিক্যালের সুপার ডা. ইন্দ্রনীল বিশ্বাস জানিয়েছেন, ৬০ জনকেই ডিসচার্জ করে দেওয়া হয়েছে। ১৭ জন বাদে বাকিরা সোমবার বাড়ি ফিরে গিয়েছেন। এর আগে ৩৯ জন করোনা আক্রান্ত সুস্থ হয়ে মেডিক্যাল কলেজ থেকে বাড়ি ফিরেছিল।
রাজ্যে প্রতিদিনই নতুন করে করোনা আক্রান্ত ও মৃত্যুর খবর আসছে। গত রবিবার করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দুশোর গণ্ডি ছাড়িয়েছে এই রাজ্যে। যা একদিনে রেকর্ড। তখন একসঙ্গে আবার ৬০ জনের সুস্থ হয়ে ওঠা নিঃসন্দেহে সাফল্য কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের। আক্রান্ত যেমন প্রতিদিনই হচ্ছে, তেমনই আবার সুস্থতার সংখ্যাও যে বাড়ছে সেটাও একদিকে স্বস্তির খবর। এমনটা বলছেন চিকিৎসকরা। এর আগে একাধিকজনকে একসঙ্গে সুস্থ করে বাড়ি ফেরানোর নজির ছিল এম আর বাঙুর হাসপাতালের। এবার সেই নজির কোভিড চিকিৎসার হাসপাতাল কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের। হাসপাতালের কর্তৃপক্ষ, চিকিৎসক ও নার্স থেকে শুরু করে করোনা রোগীদের চিকিৎসার সঙ্গে যুক্ত প্রতিটি স্বাস্থ্য কর্মীদের চেষ্টা ও চিকিৎসার কাজে ঝাঁপিয়ে পড়ার জন্যই দ্রুত করোনা আক্রান্তরা মেডিক্যাল কলেজ থেকে সুস্থ হচ্ছেন বলে মনে করছে সকলে। ফুল ও মিষ্টি দিয়ে অভিনন্দন জানিয়ে সুস্থ হয়ে ওঠা করোনা রোগীদের বাড়ি ফিরিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয় সোমবার।
কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ করোনা চিকিৎসার হাসপাতাল হিসেবে ঘোষণা হওয়ার পর থেকে হাসপাতালে ঘটা একাধিক ঘটনা নিয়ে বিতর্ক হয়েছিল। যেমন, হাসপাতাল চত্ত্বরে পড়ে থেকে বৃদ্ধের মৃত্যু, ওয়ার্ড থেকে এক মৃত রোগীর দেহ নিয়ে যাওয়ার লোক না থাকায় মৃতের ভাইকে পিপিই পড়ে মর্গে দেহ নিয়ে যেতে হয়। আবার কোভিড ওয়ার্ডে পরিষেবা নিয়ে একাধিক অভিযোগ উঠছিল। এরকম কয়েকটি ঘটনায় অস্বস্তিতে পড়ে স্বাস্থ্য দপ্তর ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এরপরই অবশ্য হাসপাতাল সুপার ডা. ইন্দ্রনীল বিশ্বাস কড়া পদক্ষেপ নেন। হাসপাতালে সমস্ত পরিষেবা যাতে ঠিক থাকে সেদিকে উদ্যোগী হন তিনি। হাসপাতালের পরিষেবা নিয়ে ওঠা একাধিক অভিযোগেরই জবাব যেন এই একসঙ্গে করোনা আক্রান্ত ৬০ জনকে সুস্থ করে ঘরে ফেরানোর সাফল্য।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.