সুব্রত বিশ্বাস: সারারাত ধরে মুরগি গলাধঃকরণ করে রীতিমতো হৃষ্টপুষ্ট। ভরপেটে শিকারের খাঁচার কাছে দিব্যি টেনে ঘুম। মাংসের দোকান খুলতেই থ’ দোকানি। মুরগির খাঁচায় পেল্লায় চন্দ্রবোড়া! মুরগি খেয়ে এতটাই ফুলে গিয়েছে সে যে নড়তেই পারছে না। সোমবার এই খবর চাউর হতেই বেলুড় চাঁদমারি বাজারে জড়ো হয়ে যান মানুষজন। তবে সাপটিকে খাঁচা থেকে বের করার মতো স্পর্ধা কেউ দেখাতে পারেন না। কারণ, সাপটি চন্দ্রবোড়া। বিষধর। এক কামড়েই ভবলীলা সাঙ্গ। পরে বনদপ্তরের কর্মীরা এসে সাপটিক ধরে নিয়ে যায়। সাপটি পাঁচ ফুটেরও বেশি লম্বা ও পরিণত বয়সের বলে অনুমান বনকর্মীদের।
বিষধর চন্দ্রবোড়া ধরা পড়ার পর এলাকার মানুষজন রীতিমতো ক্ষোভ উগরে দেন। তাঁদের অভিযোগ, বেলুড়ের বিস্তীর্ণ এলাকা পরিত্যক্ত কারখানা, ভাগাড় ও অপরিষ্কার জলাশয়গুলি জঙ্গলে পরিণত হওয়ায় সাপের উপদ্রব বেড়েছে। চন্দ্রবোড়ার মতো বিষধর সাপ দেখা যায় যত্রতত্র। এই সাপ ডিম না পেড়ে সরাসরি বাচ্চা দেয়। বছরের সব সময় প্রজনন করে থাকে এই সাপ। একেকবার ত্রিশ-চল্লিশটি করে বাচ্চা দেওয়ায় এদের বংশধর বেড়েই চলেছে। পাশাপাশি গোখরো, কেউটের মতো সাপও রয়েছে। বেলুড় নিস্কো কোম্পানি, ন্যাসক্রু, ভাগাড় থেকে রাজাবাবুর ঝিল, চাঁদমারি মাঠ, সেনাবাহিনীর এমইএস আবাসন, ইএসআই হাসপাতালের পরিত্যক্ত এলাকায় জঙ্গলের পরিমাণ এতটাই বেড়েছে যে বিষধর সাপ থেকে মশার উপদ্রব সেখানে অসহনীয়।
চাঁদমারি অঞ্চলে এক সময়ে রাজাবাবুর পুকুর থাকলেও এখন তা জঙ্গলে ঢেকে গিয়েছে। সেখান থেকেই সাপটি মুরগির দোকানে ঢোকে বলে এলাকাবাসী জানান। তীব্র বিষধর কালাচও এই এলাকায় প্রায়ই দেখা যায়। সর্প বিশারদদের মতে, পরিত্যক্ত জঙ্গল এলাকাতেই বিষধর সাপ দেখা যায়। খাবারের সন্ধানে এলাকায় চলে আসে এরা। তবে জঙ্গল পরিষ্কার করা থেকে এলাকা পরিচ্ছন্ন রাখতে নিয়মিত ব্লিচিং পাউডার ছড়ানো, রাসায়নিক সামগ্রী ছড়ানোর দরকার। এলাকাবাসীর কথায়, যা কখনও হয় না।
স্থানীয় বাসিন্দা তথা তৃণমূল যুব কংগ্রেসের ডোমজুড় বিধানসভার সম্পাদক জয় শীল বলেন, পরিচ্ছন্নতার জন্য যে প্রস্তুতি দরকার তার উদ্যোগের অভাব থাকায় বিধায়ক তথা মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে জানানো হয়েছে। রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, পুজোর ছুটি শেষ হলেই ব্লক আধিকারিকদের নির্দেশ পাঠানো হবে এই বিষয়গুলি খতিয়ে দেখে প্রতিরোধ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.