সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ‘‘আমাকে তাড়িয়ে দেখাতে পারলে বুঝব দম আছে।’’ ঠিক এই ভঙ্গিতে দলেরই শীর্ষ নেতৃত্বের দিকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিলেন বিধাননগরের মেয়র সব্যসাচী দত্ত৷ লোকসভা নির্বাচনের আগে থেকে তাঁকে ঘিরে যে বিতর্কের পারদ চড়ছে, সোমবার তাতে আরও ঘি ঢাললেন রাজারহাট-নিউটাউনের বিধায়ক৷ আবারও প্রকাশ্যেই দলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিলেন৷ যদিও বিষয়টি নিয়ে সব্যসাচীর সঙ্গে সরাসরি সংঘাতে যেতে নারাজ তৃণমূল৷ এবিষয়ে খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, ‘‘না, না। যে আছে দলে তাঁকে তাড়াতে যাব কেন?’’
[ আরও পড়ুন: এনআরএস কাণ্ডের প্রতিবাদ, রাজ্যজুড়ে কর্মবিরতিতে শামিল জুনিয়র ডাক্তাররা]
জানা গিয়েছে, লোকসভা নির্বাচনের পর সোমবার ছিল বিধাননগর পুরনিগমের প্রথম বোর্ড মিটিং ছিল সোমবার। অনেকগুলো উন্নয়নমূলক প্রকল্প নিয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের পরিকল্পনা ছিল। সূত্রের খবর, মিটিংয়ে বিধাননগরের মেয়র ও চার মেয়র পরিষদ-সহ ২৫ জন কাউন্সিলর গরহাজির ছিলেন। তিন মেয়র পারিষদ-সহ হাতে গোনা ১৬ জন কাউন্সিলরকে নিয়ে নমো নমো করে বৈঠক শেষ করেন বিধাননগরের চেয়ারপার্সন কৃষ্ণা চক্রবর্তী। বিধাননগর পুরনিগমে চূড়ান্ত অচলাবস্থা চলছে, নাগরিক পরিষেবা ব্যাহত হচ্ছে বলে দীর্ঘদিন ধরেই অভিযোগ উঠছিল। এদিনের পরিস্থিতি পুরনিগমের বাস্তব চিত্রটাকে সামনে নিয়ে এল। যদিও মেয়র সব্যসাচী দত্ত জানান, শারীরিক অসুস্থতার কারণে বোর্ড মিটিংয়ে হাজির থাকতে পারেননি। চেয়ারপার্সন জানান, মোট ১৬ জন কাউন্সিলর হাজির ছিলেন। অনেকেই ব্যক্তিগত কারণে আসতে পারবেন না জানিয়ে ফোন করেছিলেন। ভোটের জন্য পুরনিগমের অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ স্থগিত ছিল। সে সব নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তবে একযোগে এতজন কাউন্সিলরের অনুপস্থিতি স্বাভাবিকভাবেই বিতর্কের কেন্দ্রে চলে এসেছে। পুরনিগমের রাজনীতি ঘিরে নয়া কোনও সমীকরণ তৈরি হতে চলেছে কি না, তা নিয়ে শোরগোল শুরু হয়েছে৷ যদিও চেয়ারপার্সনের দাবি, পুরনিগম নিয়ে চিন্তার কিছু নেই। এ যেমন ছিল তেমনই থাকবে।
[ আরও পড়ুন: সময়ের আগেই জমা পড়তে পারে পে কমিশনের রিপোর্ট! চেয়ারম্যানকে তলব মুখ্যমন্ত্রীর ]
অন্যদিকে নাম না করে বিধাননগরের মেয়রকে আক্রমণ করেন তাঁর ডেপুটি তাপস চট্টোপাধ্যায়৷ তিনি বলেন, ‘‘ওঁর (মেয়র সব্যসাচী দত্ত) সঙ্গে কাজ করা যায় না। ভোটের পর লাগাতার উনি দলের বিরুদ্ধে এমনকী নেত্রীর বিরুদ্ধেও বিষোদগার করছেন। ভোটে কোনও কাজ করেননি। আর পুরনিগমের উন্নয়নমূলক কাজ আটকে রেখে দিয়েছেন। গোপালপুর এলাকায় কোনও কাজই করতে দিচ্ছেন না। এই কারণে আজ বৈঠকে না আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমার মতো হয়তো অনেকে একই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এবং বৈঠকে যাননি।’’ প্রসঙ্গত, কয়েকমাস আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে বিধাননগর পুরনিগমের সঙ্গে বৈঠকে বসেন রাজ্যের পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। সেখানে পুরনিগমের কাজ নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে মেয়রকে সতর্ক করেছিলেন তিনি। সেই বৈঠকে ডেপুটি মেয়র ও কয়েকজন পারিষদ সদস্যকে সরাসরি তাঁর সঙ্গে কথা বলে কাজ শুরুর নির্দেশ দেন তিনি। তারপর আসে লুচি-আলুরদম পর্ব। মেয়র সব্যসাচী দত্তর বাড়িতে বিজেপি নেতা মুকুল রায় আসার পর পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে। ক্রমশ আরও সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগতে শুরু করেছে বিধাননগর পুরনিগমের অন্দরমহল। জরুরি নাগরিক পরিষেবার কাজ অত্যন্ত ঢিমে গতিতে চলায় নাগরিক অসন্তোষ বৃদ্ধি পাচ্ছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.