ধ্রুবোজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: বিধাননগরের মেয়র পদ থেকে আজ’ই কি পদত্যাগ করছেন সব্যসাচী দত্ত? তৃণমূল সূত্রের খবর, তৃণমূলের তরফে এমনই বার্তা দেওয়া হয়েছে রাজারহাট-নিউটাউনের বিধায়ককে৷ তাঁকে ফোন করে পদত্যাগ করতে বলেছেন পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম৷ হুঁশিয়ারির সুরে জানিয়েছেন, শীঘ্রই পদত্যাগ না করলে, অনাস্থা এনে মেয়র পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হবে সব্যসাচী দত্তকে৷
[ আরও পড়ুন: ‘রাম নাম’-এর সঙ্গে এবার বাংলা বিজয়ে ‘মা দুর্গা’কেও হাতিয়ার করছে বিজেপি]
এর আগে একাধিকবার সব্যসাচীর পাশে দাঁড়ানো ফিরহাদকে সোমবার একটু বেসুর লেগেছে৷ বিধাননগরের মেয়রকে কড়া আক্রমণ শানান তিনি৷ জানান, ‘‘সব্যসাচী মীরজাফরের মতো কাজ করছে৷ আমি শৃঙ্খলারক্ষা কমিটিকে ওর বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তি নিতে বলব৷’’ জানালেন, বারবার দলকে অস্বস্তিতে ফেলে অন্যায় করেছেন সব্যসাচী দত্ত৷ যদি তিনি দল ছাড়তে চান, তবে যেন ছেড়ে দেন৷ যদিও ফোনের বিষয়টি উড়িয়ে দিয়েছেন সব্যসাচী দত্ত৷ জানিয়েছেন, লিখিত আকারে বা ফোনে তাঁকে পদত্যাগের কথা বলেননি সংশ্লীষ্ট দপ্তরের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম৷ পাশাপাশি, রাজনৈতিক পরামর্শদাতা প্রশান্ত কিশোর নিয়েও এদিন দলের অস্বস্তি বাড়িয়েছেন বিধাননগরের মেয়র৷ তিনি বলেন, ‘‘মুকুল রায়ের থেকে আমি পরামর্শ নিয়েছি তাই আমি বেইমান৷ কিন্তু দল টাকার বিনিময়ে প্রশান্ত কিশোরের থেকে রাজনৈতিক পরামর্শ নিচ্ছে, তার মানে দলের টাকা রয়েছে৷ এবং সেই টাকা পাবলিকের টাকা৷’’
[ আরও পড়ুন: পাত্রীর ১০ কোটি টাকা থাকলে তবেই বিয়ে, আজব বিজ্ঞাপন স্কুল শিক্ষকের ]
প্রসঙ্গত, দলবিরোধী কাজের অভিযোগে সব্যসাচীর বিরুদ্ধে রবিবারই তৃণমূল ভবনে জরুরি বৈঠক ডাকেন রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম৷ বিধাননগরের মেয়র বাদে যে বৈঠকে ডাক পান পুরনিগমের সমস্ত কাউন্সিলররা৷ সব্যসাচীর দায়িত্ব কমানোর পাশাপাশি, ওইদিনও বৈঠকে শেষে তাঁর উদ্দেশে কড়া হুঁশিয়ারি দেন ফিরহাদ৷ দলে থাকতে গেলে নিয়ম-নীতি মেনে কাজ করতেই হবে, সব্যসাচীর উদ্দেশে এমনই বার্তা দেন পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী৷ এমনকী, সব্যসাচীকে বিধাননগরের মেয়র পদে রাখলেও, তাঁর সমস্ত দায়িত্ব পালনের ভার দেওয়া হয় ডেপুটি মেয়র তাপস চট্টোপাধ্যায়কে৷ এক কথায়, রবিবার সব্যসাচীর ডানা ছেঁটে, তাঁকে কার্যত ঠুঁটো জগন্নাথে পরিণত করে শাসকদলের শীর্ষ নেতৃত্ব৷
[ আরও পড়ুন: কাটমানি তিরে বিদ্ধ তৃণমূল কাউন্সিলর জীবন সাহা, বেলেঘাটা জুড়ে পোস্টার ]
তবে এরপরেও পরিস্থিতির কোনও পরিবর্তন হয় না৷ রবিবার রাতেই সব্যসাচীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন মুকুল রায়৷ শাসকদলের বৈঠক শেষের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই সল্টলেকের বিএফ ব্লকের সুইমিং পুল অ্যাসোসিয়েশনে সাক্ষাৎ করেন তাঁরা৷ দু’জনের মধ্যে কথাবার্তা হয়৷ বৈঠক শেষে মুকুল রায় জানান, “দাদা হিসেবে পরামর্শ দিতে এসেছি। বিজেপি নেতা হিসেবে আসিনি।” সব্যসাচী বলেন, ‘‘ক্লাবে অতিথি হিসেবে এসেছেন মুকুল রায়। যে কেউ আসতে পারেন। আমাকে জিজ্ঞেস করলেন কী হয়েছে? উনি পরামর্শ দিলেন। তবে আপনারা বলছেন অপমান, দলের তরফে আমার কাছে বার্তা আসেনি। যতক্ষণ মেয়র আছি কাজ করব মানুষের জন্য৷’’
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.