কলহার মুখোপাধ্যায়, বিধাননগর: মেডিক্যাল ওয়েস্ট বা চিকিৎসা বর্জ্যের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া প্রবল। ইনজেকশনের সিরিঞ্জ বা বাতিল ওষুধ অথবা ব্যবহৃত ডায়াপারের জীবাণু থেকে ছড়াতে পারে মারাত্মক অসুখ। কিংবা ব্যবহার করার পর ফেলে দেওয়া স্যানিটারি ন্যাপকিন থেকেও রোগ ছড়িয়ে পড়তে পারে।
নাগরিক স্বাস্থ্যের কথা মাথায় রেখে এবার চিকিৎসা বর্জ্য পৃথকীকরণ করার পরিকল্পনা নিয়েছে বিধাননগর। পুরনিগমের পক্ষ থেকে এই ধরনের বর্জ্যের জন্য আলাদা প্যাকেট দেওয়ার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। প্রথমে বিনামূল্যে তারপর তিনটাকার বিনিময়ে এটি কিনতে পারবেন পুরনাগরিকরা। সপ্তাহের দু’দিন এই মেডিক্যাল ওয়েস্ট পুরকর্মীরা বাড়ি বাড়ি থেকে সংগ্রহ করবেন।
প্রসঙ্গত ২০১৬ সালের কেন্দ্রীয় বর্জ্য ব্যবস্থাপনা আইন অনুযায়ী সমস্ত গেরস্থালির বর্জ্যকে বাড়িতেই আলাদা করতে হবে। সেই মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে রাজ্যের বিভিন্ন পুরসভা ও পুরনিগমগুলি। এই উদ্দেশে বাড়ি বাড়ি পচনশীল ও অপচনশীল ও চিকিৎসা বর্জ্য (হ্যাজাডার্স ওয়েস্ট) আলাদা করে পুরকর্মচারীদের দেওয়ার জন্য নিয়ম লাগু করেছে পুরনিগম। প্রাথমিকভাবে দুটি ভিন্ন রঙের বালতি এবং ডায়াপার বা সিরিঞ্জের জন্য কাগজের প্যাকেট দেবে পুরনিগম। প্রতিটি বর্জ্য আলাদা করে সেই প্যাকেটে পুরে ফেলতে হবে নাগরিকদের।
সম্প্রতি সিকে সিএল ব্লকে ‘আপনার ওয়ার্ডে আপনার মেয়র’ অনুষ্ঠানে বিধাননগর পুরনিমগের যুগ্ম কমিশনার সুরজিৎ বসু জানিয়েছিলেন বর্জ্য পৃথকীকরণের এই নীতি গ্রহণ করা হয়েছে। পৃথকীকরণের জন্য নাগরিকদের কাছে আবেদন করা হয়েছে। প্রত্যেক নাগরিককে বিষয়টি মেনে চলতে আবেদন করা হয়েছে। বিষয়টির সঙ্গে যেহেতু নাগরিকদের স্বাস্থ্যের সরাসরি সংযোগ রয়েছে, সেহেতু মানুষকেই সচেষ্ট হয়ে তা পালন করার ক্ষেত্রে উদ্যোগী হতে হবে।
বিধাননগরের মেয়র পারিষদ (জঞ্জাল) দেবাশিস জানা বলেছেন, “এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা ইতিমধ্যেই হয়ে গিয়েছে। খুব শীঘ্রই বাড়ি বাড়ি প্যাকেট বিলির কাজ শুরু হয়ে যাবে।” পুরনিগম সূত্রে খবর, এর আগে বাসিন্দাদের কাছে চিকিৎসা বর্জ্য আলাদা করার আবেদন করা হয়েছিল। বলা হয়েছিল আলাদা প্যাকেটে পুরে এই বর্জ্য রেখে দিতে। যা পুরকর্মীরা সংগ্রহ করে নেবেন। তবে সে বিষয়ে সচেতনতার অভাবে পুর নাগরিকরা তা করেননি। ফলে দীর্ঘদিন ধরে এই বর্জ্যের ক্ষতিকারক প্রভাব ছড়িয়েছে বিধাননগরের বিস্তৃত অঞ্চল জুড়ে। তাতে রাশ টানতে এবার বাড়ি বাড়ি আলাদা প্যাকেট পৌঁছে দেওয়ারই ব্যবস্থা করেছে পুরনিগম।
আরও একটি বিষয় রয়েছে এর মধ্যে। সল্টলেক জুড়ে এখন বৃদ্ধ ও বৃদ্ধাদের সংখ্যা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে বাড়ছে ডায়াপার ব্যবহার। তা এতদিন মিশে থাকত অন্যান্য জঞ্জালের সঙ্গে। এবার থেকে অন্য চিকিৎসা বর্জ্যের সঙ্গে তা আলাদাভাবে জঞ্জালের সঙ্গে জমা হবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.