Advertisement
Advertisement

গ্রামবাসীদের নিয়ে ভাঙড় অবরোধ মুক্ত করল তৃণমূল

অবরোধ-ব্যারিকেড তুলে নিলেন ভাঙড়ের বিক্ষোভকারীরা৷

Bhangar limps back to normalcy after TMC’s intervention
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:January 21, 2017 4:14 pm
  • Updated:January 21, 2017 4:14 pm  

কৃষ্ণকুমার দাস: মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শান্তি বজায় রাখার ডাকে সাড়া দিয়ে তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে রেখে শনিবার সকালে চারটি গ্রামের অবরোধ-ব্যারিকেড তুলে নিলেন ভাঙড়ের বিক্ষোভকারীরা৷ অবরোধ উঠে যাওয়ায় এদিন পুরোপুরি স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ফিরে এল শ্যামনগর, ঢিপঢিপে, জয়নগর ও পদ্মপুকুর গ্রামে৷ একইসঙ্গে তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে খামারাইট, মাছিভাঙা এবং নতুনহাট গ্রামের আন্দোলনকারী নেতারাও  আলোচনায় বসলেন৷ অবরোধ-ব্যারিকেড তুলে নেওয়া নেতারা প্রকাশ্যে স্বীকার করেছেন, ‘‘বহিরাগত মাওবাদী এবং মৌলবাদীদের জন্যই ভাঙড়ের শান্ত জীবনযাত্রায় অশান্তির ঝড় উঠেছিল৷ নকশালদের প্ররোচনায় পা দেওয়ায় অকালে দু’জন নিরীহ যুবকের প্রাণ গিয়েছে৷ উন্নয়নের জন্য মুখ্যমন্ত্রীই আমাদের একমাত্র ভরসা৷” গ্রামবাসীদের নিয়ে অবরোধ তোলার পাশাপাশি এদিন নিহত মফিজুল খানের পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন তৃণমূল নেতারা৷ মাছিভাঙা ও খামারাইট গ্রামের বিক্ষোভকারী নেতারা দুপুরে বৈঠকে বসেছেন, বিকেলে তৃণমূল ভবনে শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে দেখা করতে পারেন বলে খবর৷

ভাঙড় নিয়ে রাজ্য সরকার যে পুলিশের ভূমিকায় খুশি নয় তার ইঙ্গিত মিলেছে এদিন কাশীপুর থানার ওসি বদল হওয়ায়৷ থানার বর্তমান ওসি সুভাষ ঘোষকে ছুটিতে পাঠিয়ে নতুন দায়িত্বে আনা হয়েছে বিশ্বজিৎ ঘোষকে৷ রায়দিঘি থানায় দায়িত্বে ছিলেন বিশ্বজিৎবাবু৷

Advertisement

মাওবাদীদের ‘খপ্পর’ থেকে ভাঙড়কে স্বাভাবিক জীবন ছন্দে ফেরাতে গত চারদিন ধরেই সক্রিয় ছিল তৃণমূল শীর্ষনেতৃত্ব৷ যেহেতু পাওয়ার গ্রিড আন্দোলনের বিতর্ক আরাবুল এবং রেজ্জাকের নাম জড়িয়েছিল তাই এই দু’জনকে কার্যত পিছনের সারিতে রেখে শান্তি-প্রক্রিয়া শুরু করে তৃণমূল৷ দলের তরফে সাংসদ মুকুল রায় একাধিকবার ভাঙড়ে গিয়ে কথা বলেন নান্নু-ওহিদুল-কাইজার ও রহিমদের সঙ্গে৷ কারণ যে পোলেরহাট-২ এলাকার পাওয়ার গ্রিড নিয়ে এত বিতর্ক সেখানকার পঞ্চায়েতের প্রধান হল আরাবুলের ছেলে হাকিবুল৷ বিক্ষোভকারীদের মূল টার্গেট ছিল হাকিবুল এবং স্থানীয় পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি আরাবুল৷ তাই সুকৌশলে বাপ-ছেলেকে বাদ দিয়েই দলের এই চারজনকেই মাঠে নামিয়ে দিয়েছিল তৃণমূল৷ শীর্ষ নেতৃত্বের নির্দেশ পেয়েই প্রথমে টেলিফোনে এবং পরে সোর্স মারফত দফায় দফায় বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেন কাইজার-নান্নুরা৷ বৃহস্পতিবার রাতে নতুনহাটে বৈঠকে বসে কেলো, মোস্তো ও মাসুদ মাস্টাররা৷ উল্লেখ্য, এই কেলো এবং মোস্তোকে সিআইডি তুলে নিয়ে যাওয়ার পরেই মঙ্গলবার অগ্নিগর্ভ হয়েছিল ভাঙড়৷ কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর উপর প্রথম থেকেই আস্থা রাখা ভাঙড়ের বাসিন্দাদের চাপে পড়ে মাওবাদীদের গ্রামছাড়া করার সঙ্গে শান্তি ফেরানোর সিান্ত নিতে বাধ্য হয়েছে মোস্তোরা৷

এদিন সকালে নিহত মফিজুলের বাড়িতে গিয়ে সন্তানহারা বাবা সুকুর আলি ও মা রবিজান বিবির সঙ্গে দেখা করেন জেলা পরিষদ সদস্য ও ভাঙড়-এক ব্লকের তৃণমূল সভাপতি কাইজার আহমেদ৷ কথা বলেন এলাকায় গত কয়েকদিন ধরে যারা বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন তাঁদের সঙ্গে৷ মফিজুলের মা রবিজান বিবি এদিন তাঁর ছেলের মৃত্যু নিয়ে সিপিএম যে রাজনীতি শুরু করেছে তারও তীব্র সমালোচনা করেন৷ মৃতের বাড়ি থেকে বেরিয়ে এরপর একে একে শ্যামনগর, ঢিপঢিপে ও পদ্মপুকুর গ্রামে গিয়ে কথা বলেন কাইজার৷ শান্তি ফেরানোর এই প্রক্রিয়া প্রতি মুহূর্তেই দলের শীর্ষনেতাদের জানিয়ে রাখছিলেন তৃণমূল নেতারা৷ এরপর গ্রামবাসীদের সঙ্গে নিয়েই অবরোধ তুলে দেন তৃণমূল নেতারা৷ বিষয়টি নিয়ে সংবাদমাধ্যমকে পুরোপুরি এড়িয়ে গিয়েছেন কাইজার-নান্নুরা৷ দুপুরে পোলেরহাটে দলীয় অফিসে তৃণমূল টিমের সঙ্গে বৈঠকে বসেন খামারাইটের শফিকুল ইসলাম, মাছিভাঙার মজনু মোল্লা, আববাস মোল্লা, নতুনহাটের মোস্তো মোল্লার মতো বিক্ষোভকারীদের নেতা৷ আলোচনায় সবাই আরাবুলের বিরু‌দ্ধে ক্ষোভে ফেটে পড়েন৷ একইসঙ্গে গত তিন দিন ধরে কোনও পুলিশি অভিযান না হওয়ার জন্য রাজ্য সরকারের প্রতি ধনব্যাদ এবং কৃতজ্ঞতা জানান বিক্ষোভকারীরা৷

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement