সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিদ্যুৎ প্রকল্পকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি তৈরি হল দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়ে। চলল গুলি-বোমা। গুলিবিদ্ধ হল এক আন্দোলনকারী গ্রামবাসী। তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই মৃত্যু হয় আলম মোল্লা নামে ওই যুবকের। ডিরোজিও কলেজের ছাত্র ছিল ওই মৃত গ্রামবাসী। গ্রামবাসীদের অভিযোগের তির পুলিশের দিকে। একইসঙ্গে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে অকুস্থলে যান স্থানীয় বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী আবদুর রেজ্জাক মোল্লা। কিন্তু ক্ষিপ্ত গ্রামবাসীরা তাঁকে এদিন গ্রামে ঢুকতে দেখেননি বলে জানা গিয়েছে। বাধ্য হয়ে তিনি স্থানীয় তৃণমূল কংগ্রেস কার্যালয়ে চলে যান। এদিন সকাল থেকেই পুলিশের সঙ্গে দফায় দফায় আন্দোলনকারীদের খণ্ডযুদ্ধ বাঁধে। গ্রামবাসীদের মারে গুরুতর জখম হন পুলিশকর্মীরা। এক পুলিশকর্মীকে মেরে নাক-মুখ ফাটিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। জানা গিয়েছে, পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। ফেলে দেওয়া হয় পুকুরের জলে। দিনভর সেখানে দু-পক্ষের সংঘর্ষ চলে। পুলিশ আলোচনা চাইলেও নিজের দাবিতে অনড় গ্রামবাসীরা। এলাকায় পুলিশকে ঢুকতেই দিচ্ছে না বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসীরা। উন্মত্ত জনতা এদিন হাড়োয়া রোড অবরোধ করে বলে জানি গিয়েছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রকল্পের কাজ বন্ধ থাকলেও রাতভর গ্রামে অভিযান চালিয়েছে পুলিশ। গতকাল রাতে দুই আন্দোলনকারী নেতাকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে। কেন তাঁদের গ্রেপ্তার করা হল, কাজ বন্ধের পরও কেন তাদের উর্বর জমি ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে না, এই প্রশ্নেই প্রতিবাদে সামিল হয় জনতা। আজ সকাল থেকেই বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ দেখাতে থাকেন স্থানীয়রা। রাস্তা অবরোধ করা হয়। বিক্ষোভ ঠেকাতে গেলে পুলিশকে লক্ষ্য করে পাল্টা ইট ছোড়া হয় বলেও অভিযোগ ওঠে। মাছিডাঙা, খামারআইট-সহ তিনটি গ্রামে পরিস্থিতি ক্রমশ অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠলে কাঁদানে গ্যাস ছুড়তে হয় পুলিশকে। আন্দোলনকারীদের উপর পুলিশ লাঠিচার্জ করে বলে অভিযোগ।
ভাঙড় কাণ্ডে ইতিমধ্যেই প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন বিদ্যুৎমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। তাঁর বক্তব্য, কাজ বন্ধ রাখার পরও কেন বিক্ষোভ চলছে তা স্পষ্ট নয়। স্রেফ বিক্ষোভের জন্যই এই প্রতিবাদ না তা মানুষের দাবিতে তা নিয়েও সংশয় প্রকাশ করেছেন তিনি। তাঁর দাবি, এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে দল মত নির্বিশেষে সকলেই পরিষেবা পাবেন। পরিষেবা নিয়ে তাই এই ধরনের আন্দোলন অমূলক বলেই মনে করছেন মন্ত্রী। সত্যিই মানুষের কোনও সমস্যা থাকলে তা তিনি এক ঘণ্টায় মিটিয়ে দিতে পারেন বলেও জানিয়েছেন। তাঁর দাবি, কোনও বিজ্ঞানসম্মত কারণ থাকলে মানুষ এসে বলুন। কিন্তু কাজ বন্ধের দাবি মেনে নেওয়ার পরও আন্দোলন বিক্ষোভ চলার অভিপ্রায় সম্পর্কে তিনি সন্দিহান। সমস্ত আন্দোলনকারীদের আলোচনায় অংশ নিতেও আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.