কলকাতা প্রেস ক্লাবে জড়ো হন একঝাঁক বুদ্ধিজীবী। নিজস্ব চিত্র।
অভিরূপ দাস: বাংলায় নাকি সরস্বতী পুজো হয় না! সংবাদপত্রে বিজেপির প্ররোচনামূলক বিজ্ঞাপন নিয়ে ক্ষুব্ধ বুদ্ধিজীবীরা। তাঁদের দাবি, এইসব প্রচার করে নির্বাচনের মধ্যে বাংলায় সাম্প্রদায়িক অশান্তি পাকাতে চাইছে পদ্ম নেতারা। শনিবার কলকাতা প্রেস ক্লাবে জড়ো হয়ে এমনটাই জানালেন একঝাঁক বুদ্ধিজীবী।
অশান্তির শুরু এক বিজ্ঞাপন নিয়ে। যেখানে লেখা, “বাংলায় সনাতন ধর্মের সম্মানহানি হয়েছে।” নিচে পিঁপড়ের মতো অক্ষরে লেখা ভারতীয় জনতা পার্টি। শনিবার একাধিক সংবাদপত্রে প্রকাশিত এই বিজ্ঞাপন নিয়ে ক্ষুব্ধ ‘দেশ বাঁচাও গণমঞ্চ।’ শনিবার তাঁরা চিঠি দিয়েছেন দিল্লির জাতীয় নির্বাচন কমিশন এবং পশ্চিমবঙ্গের চিফ ইলেকশন কমিশনারকে।
বিজ্ঞাপনের একের পর এক দাবি নিয়ে এদিন প্রতিবাদ জানান, ‘দেশ বাঁচাও গণমঞ্চে’র সদস্য সাসংদ দোলা সেন, প্রাক্তন মন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসু, রাজ্যের শিশু অধিকার সুরক্ষা কমিশনের চেয়ারপার্সন সুদেষ্ণা রায়,অর্থনীতিবিদ দীপঙ্কর দে, রন্তিদেব সেনগুপ্ত, কবি প্রসূন ভৌমিক, জাতীয় বাংলা সম্মেলনের সভাপতি সিদ্ধব্রত দাস। পূর্ণেন্দু বসুর কথায়, “বিজ্ঞাপনে বিজেপি লিখেছে স্বামী বিবেকানন্দের বাংলায় সনাতন ধর্মের সম্মানহানি হয়েছে। ওরা জানে না আমরা বাঙালিরা যেভাবে ধর্মাচরণ করি স্বামী বিবেকানন্দ সে ধর্মাচরণের কথাই বলে গিয়েছে।” পূর্ণেন্দুবাবুর কথায়, “স্বামী বিবেকানন্দ নিজে বলে গিয়েছেন, যদি কখনও একটি সর্বজনীন ধর্মের উদ্ভব হয়। তবে তা কখনও কোনও দেশে বা কালে সীমাবদ্ধ হইবে না। পরন্তু সকল ধর্মের সমষ্টি স্বরূপ হইবে।”
বুদ্ধিজীবীরা বলেছেন, যে বিজ্ঞাপন প্রকাশিত হয়েছে তা দেশের সংবিধান এবং আইনের পরিপন্থী। এইরকম বিজ্ঞাপন দেশের সম্প্রীতি এবং ঐক্য নষ্ট করছে। রন্তিদেব সেনগুপ্তর কথায়, “প্রথম এবং দ্বিতীয় দফার ভোটের পর এখন বাংলায় এসে বিজেপির নেতারা সাম্প্রদায়িক উসকানি দিয়ে চলেছেন। সেখানে উন্নয়নের কোনও কথা নেই।” চিঠিতে দেশ বাঁচাও গণমঞ্চের কর্মীরা নির্বাচন কমিশনকে জানিয়েছেন, “ইন্ডিয়ান পেনাল কোড সেকশন 153A(1)(a) বলা হয়েছে যদি কোনও ব্যক্তি লিখিতভাবে অথবা মুখে ধর্মে-ধর্মে অশান্তি পাকানোর চেষ্টা করেন সে বা তাদের তিনবছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হবে।” সুদেষ্ণা রায়ের প্রশ্ন, এক্ষেত্রে এই বিজ্ঞাপন যাঁরা দিয়েছেন তাদের কারাদণ্ড হবে না কেন? প্রশ্ন তুলেছেন, নির্বাচনের সময় বিজ্ঞাপন দিতে হলে নির্বাচন কমিশনের অনুমতি লাগে। দোলা সেনের প্রশ্ন, “সেই অনুমতি কি কেউ নিয়েছিলেন? না নিয়ে থাকলে তার শাস্তি হবে। আর যদি নির্বাচন কমিশন এই ধরণের বিজ্ঞাপনের অনুমতি দেন সেক্ষেত্রে তারাও অশান্তি ছড়ানোর জন্য দায়ী থাকবেন।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.