নব্যেন্দু হাজরা: কেন্দ্রের চাপানো শর্তে নয়। রাজ্যে আবাস যোজনার বাড়ি বিলি করার ক্ষেত্রে মানবিক অভিমুখ নেবে সরকার। মঙ্গলবার নবান্নে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে মন্ত্রীদের এই নির্দেশই দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
শস্য বিমা এবং আবাস যোজনার অর্থবিলির শর্ত কী হবে, এই নিয়ে আলোচনার জন্য মঙ্গলবার নবান্নে রাজ্যের পঞ্চায়েতমন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার এবং কৃষিমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়কে নিয়ে উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে বসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই বৈঠকেই মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, “কেন্দ্রের শর্ত অনুযায়ী নয়, আবাসের বাড়ি দেওয়ার ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের অভিমুখ হবে মানবিক। বাংলা আবাস প্রকল্পের জন্য কেন্দ্রীয় শর্ত লাগু করা হবে না।”
আবাস যোজনা নিয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে রাজ্যের বিবাদ দীর্ঘদিনের। প্রকল্পে বাস্তবায়নে অনিয়মের অভিযোগ তুলে কেন্দ্র আবাস যোজনার জন্য রাজ্যের বরাদ্দ বন্ধ করে দিয়েছে। লক্ষ লক্ষ মানুষের প্রাপ্য টাকা আটকে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। শাসকদলের তরফে এ নিয়ে বারবার দিল্লিতে দরবার করা হলেও কাজের কাজ হয়নি। আবাসের টাকা মেলেনি। শেষমেশ রাজ্য সরকারের তরফেই আবাসের টাকা দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়েছে। এসবের মধ্যে মঙ্গলবারই বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী দাবি করেছেন, “আবাস যোজনার তালিকা ভুলে ভরা। ১৭টা টিম পাঠিয়েছিল ভারত সরকার। তাতে দেখা গিয়েছে, অযোগ্যরা আবাসের টাকা পেয়েছে, যোগ্যরা পায়নি।” তৃণমূল অবশ্য সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। দলের প্রাক্তন সাংসদ কুণাল ঘোষের বক্তব্য, “দু-একটি বিভ্রান্তি থাকলে কেটে যাবে। কিন্তু বিরোধী দলের লোকেরা এই প্রকল্প যাতে বন্ধ রাখা যায়, তাই অপপ্রচার চলছে। কেন্দ্র টাকা দেবে বলেছিল দেয়নি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দিচ্ছেন তাতে বাধা দেওয়া হচ্ছে।” এরই মধ্যে মুখ্যমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত, কেন্দ্রের শর্তে নয়, মানবিক দৃষ্টিভঙ্গিতে আবাসের বাড়ি দেওয়া হবে।
শুধু আবাস নয়, শস্যবিমার ক্ষেত্রেও সেই ‘মানবিক’ দৃষ্টিভঙ্গির কথাই মাথায় রাখা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, কোনও শর্ত নয়। যাদের ক্ষতি হয়েছে তাদের সকলকেই দেওয়া হবে ক্ষতিপূরণ। নবান্ন সূত্রের খবর, ঘুর্ণিঝড় ‘ডানা’র জেরে বাংলার কৃষকরা কী পরিমাণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, সেটা খতিয়ে দেখতে দিওয়ালি মিটলে রাজ্যের দুই মন্ত্রী জেলায় জেলায় যাবেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.