রাহুল রায়: এসএসসিতে সুপার নিউমেরারি পোস্ট বা অতিরিক্ত শূন্যপদ তৈরি করে নিয়োগের জন্য, স্কুল সার্ভিস কমিশনের (SSC) আনা আবেদনের মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় (Justice Abhijit Ganguly)। শুধু তাই নয়, বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার মধ্যে জবাবদিহির জন্য রাজ্যের শিক্ষা সচিব মণীষ জৈনকে তলব করেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। কিন্তু শিক্ষাসচিবের হাজিরার সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ডিভিশন বেঞ্চে গেল রাজ্য। বুধবার রাতেই ডিভিশন বেঞ্চে আবেদন করা হয় রাজ্যের তরফে।
বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় রাজ্যের শিক্ষাসচিবকে কলকাতা হাইকোর্টে হাজিরার নির্দেশ দিয়েছিলেন। অতিরিক্ত শূন্যপদে ‘বেনামি’ আবেদনের কৈফিয়ত তলব করেন তিনি। এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে বুধবার রাতেই হাই কোর্টের (Calcutta High Court) দ্বারস্থ হয় রাজ্য। সকাল সাড়ে দশটার আগেই ডিভিশন বেঞ্চ বসিয়ে আবেদনের বিষয়টি খতিয়ে দেখার আরজি জানিয়েছে রাজ্য। প্রধান বিচারপতির সচিবালয় মারফত ই-মেইল করে আবেদন করেছে রাজ্য সরকার। অর্থাৎ মণীশ জৈনের (Manish Jain) হাজিরা এড়াতে মরিয়া রাজ্যের শিক্ষা দপ্তর।
উল্লেখ্য, বুধবার সুপার নিউমেরারি পোস্ট বা অতিরিক্ত শূন্যপদ মামলায় পর্ষদকে কার্যত তুলোধোনা করেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি নির্দেশ দেন, বৃহস্পতিবারই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে তদন্ত শুরু করতে হবে। ওই ‘সুপার নিউমেরারি’ পোস্ট কার মস্তিষ্কপ্রসূত সিবিআইকে তা খুঁজে বের করতে হবে। পাশাপাশি, কে বা কারা এই ‘বেনামি’ আবেদন করল তাও খুঁজে বের করে সিবিআইকে (CBI) এক সপ্তাহের মধ্যে রিপোর্ট পেশ করতে হবে। আদালতের পর্যবেক্ষণ, “এগুলি ‘বেনামি’ আবেদন। এই সুপার নিউমেরারি পোস্ট করার কোনও আইন নেই। এটা একটা সংগঠিত অপরাধ। যোগ্য প্রার্থীরা রাস্তায় ঘুরছে আর অযোগ্যরা নিয়োগ পাচ্ছে!”
গত মে মাসে স্কুল সার্ভিস কমিশনের চতুর্থ ও তৃতীয় শ্রেণীর কর্মী নিয়োগ এবং নবম-দশম ও একাদশ-দ্বাদশে সুপার নিউমেরারি পোস্ট বা অতিরিক্ত শূন্যপদ তৈরি করে ৮ হাজারের বেশি পদে নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি জারি করে স্কুল সার্ভিস কমিশন। পরবর্তীতে আদালতের অনুমতি নিতে আবেদনও জানায় এসএসসি। সম্প্রতি সুপার নিউমেরারি পোস্ট তৈরির সেই আবেদন প্রত্যাহার করতে চান এসএসসির আইনজীবী সূতনু পাত্র। আদালতের নির্দেশে সমস্ত নথি নিয়ে হাজির হন এসএসসির চেয়ারম্যান ও সচিব। শূন্যপদে অযোগ্য প্রার্থীদের পুনরায় নিয়োগের আবেদন করার জন্য আইনজীবীদের উদ্দেশ্যে কমিশনের কোনও নির্দেশিকা ছিল কিনা, এসএসসির কর্তাদের উদ্দেশ্যে জানতে চায় আদালত। তবে কমিশনের চেয়ারম্যান জানান, “প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত কমিশনের। তবে নির্দেশ কার বা কে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা তাঁর জানা নেই। তারপরই বিচারপতির প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় এসএসসিকে। এর আগে আদালতে কমিশনের বক্তব্য ছিল, বঞ্চিতদের সুযোগ দেওয়ার পাশাপাশি, অবৈধ চাকরি পাওয়াদের পুনর্বহালের জন্য এই অতিরিক্ত শূন্যপদ করা হয়েছে।” কমিশনের দাবি, “অনেকেই তিন চার বছর ধরে চাকরি করছেন, তাঁদের পরিবার রয়েছে, তাদের কথা ভেবেই আদালতের রায় পুনর্বিবেচনার আর্জি জানানো হয়েছে।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.