ফাইল ছবি
সন্দীপ চক্রবর্তী ও শুভঙ্কর বসু: পুরভোটের দামামা বেজেই গেল। রাজ্যের ৯৩টি পুরসভায় সংরক্ষণের তালিকা প্রকাশ করল রাজ্য নির্বাচন কমিশন। সেই তালিকা নিয়ে উদ্বেগ নিয়ে অপেক্ষা করেছেন বিভিন্ন দলের কাউন্সিলর, স্থানীয় নেতারা। শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদই প্রকাশ হয়ে যায় কোন ওয়ার্ডে সংরক্ষণ থাকবে। মূল আগ্রহ অবশ্যই কলকাতা পুরসভা ঘিরে। ‘সংবাদ প্রতিদিন’-এ আগেই এই তালিকার ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছিল। সেই ধারাতেই অর্থাৎ ১, ৩, ৬ ফর্মুলাতে সংরক্ষণের তালিকা বেরিয়েছে।
এপ্রিলের মাঝামাঝিতে ভোট হবে ধরে নিয়েই এগোচ্ছে সব দল। বিজেপি যেমন বিধানসভা ভোটের আগে ‘সেমিফাইনাল’ পুরভোটে দাগ রাখতে চাইছে, তেমনই তৃণমূল ক্ষমতা বজায় রেখে ফাইনালের জন্য নিজেদেরকে এগিয়ে রাখতে চাইছে। বিজেপি কলকাতা পুরসভায় কাকে মুখ করে ভোটে লড়বে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। গত লোকসভার নিরিখে ৫০টি-র মতো ওয়ার্ডে তৃণমূল কাউন্সিলরদের হারিয়ে দিয়েছে বিজেপি। তবে কলকাতার ১৪৪টি ওয়ার্ডে ক্ষমতা দখলে ৭৩টি আসনে জয় দরকার। সব্যসাচী দত্তকে দক্ষিণ কলকাতার সাংগঠনিক ভার দেওয়া হয়েছে। বিজেপি ক্ষমতা দখলে ব্লু প্রিন্ট তৈরি করেছে। তবে তৃণমূল আগেভাগেই নেমে পড়েছে। মেয়র ফিরহাদ হাকিম, সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রশান্ত কিশোররা কাউন্সিলরদের বৈঠকে জনসংযোগের বার্তা দিয়েছেন। মেয়র নিজেও বলেছেন, “আরও নিবিড় জনসংযোগই লক্ষ্য। মানুষের পাশে, মানুষের কাছে থাকাই লক্ষ্য।”
কলকাতা পুরসভায় ১৪৪টি ওয়ার্ডের মধ্যে আটটি ওয়ার্ড তফসিলি জাতি ও তফসিলি জাতি মহিলা সংরক্ষণের আওতায় পড়েছে। ৩৩, ৭৮, ১২৭ নম্বর তফসিলি মহিলা। এছাড়া ৪৫টি ওয়ার্ড সাধারণ মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত। সংরক্ষণের কোপে পড়েছেন চার বর্তমান মেয়র পারিষদ। ট্যাংরা এলাকার ৫৮ নম্বর ওয়ার্ড এবার তফসিলি জাতির জন্য সংরক্ষিত হওয়ায় সেখান থেকে দাঁড়াতে পারবেন না বস্তি বিভাগের মেয়র পারিষদ স্বপন সমাদ্দার। আগে তিনি ৩০ নম্বর ওয়ার্ড থেকে জিতেছিলেন। সেই ওয়ার্ডও এবারও মহিলা সংরক্ষিত।
৯০ নম্বর ওয়ার্ড থেকে প্রার্থী হতে পারবেন না বৈশ্বানর চট্টোপাধ্যায়। তেমনভাবেই বর্তমান ওয়ার্ড ৯৩ ও ৯৬ থেকে দাঁড়াতে পারবেন না যথাক্রমে দীর্ঘদিনের আরও দুই কাউন্সিলর রাস্তা বিভাগের মেয়র পারিষদের দায়িত্বে থাকা রতন দে ও জঞ্জাল বিভাগের দেবব্রত মজুমদার। ১০৭ নম্বর ওয়ার্ডের সুশান্তকুমার ঘোষের আসনও এবার সংরক্ষিত। নিজের ওয়ার্ড হারানোর কোপে পড়তে হচ্ছে ১৪৩ নম্বর ওয়ার্ডের ইন্দ্রজিৎ ভট্টাচার্যকেও। তবে চার মেয়র পারিষদই জানিয়েছেন, দল এবং নেত্রী যা নির্দেশ দেবেন, সেই মতোই চলবেন তাঁরা। তাঁদের বক্তব্য, “সবসময় দলের পাশে ও দলের নির্দেশ মেনে চলেছি।” তবে সূত্রে খবর, ওইসব ওয়ার্ডে তাঁদের অনুগামীদেরই প্রার্থী করা হতে পারে। সেক্ষেত্রে ওয়ার্ডে জেতানোর বড় দায়িত্ব থাকবে তাঁদের উপরই।
নির্বাচন কমিশনের তালিকায় উল্লেখ রয়েছে যে, ৩৩, ৭৮, ১২৭ নম্বর ওয়ার্ড তফসিলি মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত। তফসিলি জাতির ক্ষেত্রে সংরক্ষণ থাকবে ৫৮, ১০৭, ১১০, ১৪১ ও ১৪২ নম্বর ওয়ার্ডে। এছাড়া সাধারণ মহিলাদের জন্য সংরক্ষণের আওতায় রয়েছে ৩, ৬, ৯, ১২, ১৫, ১৮, ২১, ২৪, ২৭, ৩০, ৩৪, ৩৭, ৪০, ৪৩, ৪৬, ৪৯, ৫২, ৫৫, ৫৯, ৬২, ৬৫, ৬৮, ৭১, ৭৪, ৭৭, ৮১, ৮৪, ৮৭, ৯০, ৯৩, ৯৬, ৯৯, ১০২, ১০৫, ১০৯, ১১৩, ১১৬, ১১৯, ১২২, ১২৫, ১২৯, ১৩২, ১৩৫, ১৩৮ ও ১৪৩ নম্বর ওয়ার্ড।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.