ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: বিরল দৃশ্য! রাজপথে ই-স্কুটারে চালকের আসনে স্বয়ং রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী! অবিশ্বাস্য মনে হলেও বৃহস্পতিবার সূর্য পশ্চিমপানে ঢলে যাওয়ার আগে এমনই বিরল ছবি তৈরি করে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় (Mamata Banerjee)। এদিন নবান্নে যাওয়ার পথে তিনি ছিলেন সওয়ারি আর বিকেলে সেখান থেকে বাড়ি ফেরার পথে তিনি নিজেই সারথী। পরনে সাদা শাড়ি, মাথায় নীল হেলমেট পরে ইলেকট্রিক স্কুটারে নিজেই চড়ে বসলেন মুখ্যমন্ত্রী। সকালে তাঁকে স্কুটারে চড়িয়ে নিয়ে নবান্নে গিয়েছিলেন পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। ফেরার পথে তিনি চললেন পাশে পাশে। প্রায় মিনিট ২০ এভাবেই কলকাতার রাজপথে গড়াল মুখ্যমন্ত্রীর স্কুটারের চাকা। থমকে গেল চারপাশ। সকলের দৃষ্টি তখন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর দিকেই।
জ্বালানি জ্বালায় বিপাকে পড়া জনতার পাশে দাঁড়িয়ে প্রতিবাদের সুর আরও চড়াতে রাতারাতিই মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছিলেন যে বৃহস্পতিবার গাড়িতে নয়, তিনি যাবেন ই-স্কুটারে চড়ে। সেইমতো এদিন বেলা ১১টা নাগাদ হাজরা মোড় থেকে ইলেকট্রিক স্কুটারে চড়ে মমতা পৌঁছন নবান্নে। চালকের আসনে ছিলেন ফিরহাদ হাকিম। আর মুখ্যমন্ত্রীর হাতে ছিল প্রতিবাদী সব পোস্টার। এই দৃশ্যেই যথেষ্ট চমকে গিয়েছিলেন পথচারীরা। বিকেলে অবশ্য আরও একপ্রস্ত চমক বাকি ছিল তাঁদের জন্য। দিনশেষে নবান্ন থেকে বেরিয়ে তিনি নিজেই চড়ে বসলেন ইলেকট্রিক স্কুটারে। তাঁকে স্কুটার চালাতে সাহায্য করেন নিরাপত্তারক্ষীরা। পাশে ছিলেন পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম।
নবান্ন থেকে দ্বিতীয় হুগলি সেতুর টোল ট্যাক্স পেরিয়ে বেশ খানিকটা রাস্তা ওভাবেই মমতার স্কুটারের চাকা গড়ায়। এরপর মাঝপথে ফের চালকের আসনে বসেন ফিরহাদ হাকিম। কিছুটা রাস্তা এগিয়ে দেন। এসএসকেএমের সামনে থেকে তারপর আবার হাজরা পর্যন্ত স্কুটার চালান মুখ্যমন্ত্রী। শহরবাসী মুগ্ধ হয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে এই ভূমিকায় দেখলেন। কিন্তু সমালোচনাও কম হল না। বিজেপি সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়র প্রতিক্রিয়া, পরিবেশ রক্ষায় ই-গাড়ি চালানোয় উৎসাহ দিতে কেন্দ্রের যে উদ্যোগ, মুখ্যমন্ত্রী তারই প্রচার করে দিলেন। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর মতে, ভোটের আগে রাজনৈতিক রঙ্গমঞ্চে অনেক নাটক হবে। এটাও তার মধ্যে একটা।
সন্ধে প্রায় ৬ নাগাদ কালীঘাটের বাড়িতে পৌঁছেও প্রতিবাদের স্বর এতটুকুও কমাননি মুখ্যমন্ত্রী। সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বললেন, ”জ্বালানির দাম এতটা বাড়িয়ে দিয়েছে, লোকজন কীভাবে যাতায়াত করবে? এই দাম অবিলম্বে কমাতে হবে। যে দাম ৮০০ টাকায় চড়িয়েছে, তা ৪০০এ নামাতে হবে। নাহলে আমরা বৃহত্তর আন্দোলনে যাব। মানুষ একবার আন্দোলন শুরু করলে, তখন সিবিআই দেখিয়েও লাভ নেই।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.